আবারও পুরান ঢাকায় বাসার সিঁড়ি থেকে শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
পুরান ঢাকায় বাসার সিঁড়িতে আবারও এক শিক্ষার্থীর মরদেহ পাওয়া গেছে। বংশাল আগামাসি লেন এলাকার একটি বাড়ির সিঁড়ি থেকে গলায় জিআই তার প্যাঁচানো অবস্থায় সজিব (১৯) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. দুলাল হক জানান, 'বিকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। চারতলার সিঁড়িতে গলায় জিআই তার পেঁচানো অবস্থায় মরদেহটি উপুড় হয়ে পড়ে ছিল। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করা হলেও পরে মোবাইলের সূত্রে পরিচয় শনাক্ত হয়।'
এসআই দুলাল আরও জানান, ওই ভবনের চারতলায় শুধু একটি পরিবার থাকত। পুরো ভবনটি গোডাউন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ঘটনাস্থলের ফ্ল্যাটটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল।
তিনি বলেন, 'প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষার্থীকে গলায় জিআই তার পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।'
ঢামেক হাসপাতালে নিহতের চাচাতো ভাই মো. ইসলাম জানান, সজিবদের বাসা বংশালের আগামাসি লেনেই। সে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তবে অকৃতকার্য হয়। কিছুদিন আগে তাবলীগের সঙ্গে দোহারে গিয়েছিল। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাসায় ফিরে আসে।
তিনি আরও বলেন, শনিবার বিকাল ৩টার দিকে একটি ফোন পেয়ে সজিব বাসা থেকে বের হয়। বিকালেই জানতে পারি, একটি বাসার সিঁড়িতে তার মরদেহ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, যে বাসায় সজিবের লাশ পাওয়া গেছে, সেখানে চারতলায় তার প্রেমিকার পরিবার থাকত। ঘটনার পর থেকে তাদের কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না। সজিবের সঙ্গে মেয়েটির ছয় বছর ধরে সম্পর্ক ছিল। মাঝেমধ্যে মনোমালিন্য হলেও সম্প্রতি সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়। তবে মেয়েটির মামারা এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি।
সজিবের পরিবারের অভিযোগ, ওই মেয়ের দুই মামা—ইকবাল ও কামাল—পরিকল্পিতভাবে সজিবকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বংশাল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সোহেল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমাদের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই দুলাল হোসেন ঘটনাস্থলে যান। পরে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এসে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। এরপর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা বা অন্য কোনো ঘটনা, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ অক্টোবরও পুরান ঢাকার একটি বাসার সিঁড়ি থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে একই এলাকায় দুই তরুণের এভাবে মৃত্যু পুরান ঢাকায় উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
