প্রত্যাখ্যাত অভিবাসীদের তৃতীয় দেশের ‘রিটার্ন হাব’-এ পাঠাতে চায় যুক্তরাজ্য

অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে নতুন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে তৃতীয় দেশে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য 'রিটার্ন হাব' স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। যেসব আশ্রয়প্রার্থী যুক্তরাজ্যে থাকার সব আইনি সুযোগ হারিয়েছেন, তাদের এসব কেন্দ্রে পাঠিয়ে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
বৃহস্পতিবার আলবেনিয়া সফরকালে এক বক্তব্যে স্টারমার জানান, তিনি কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তিনি কোন কোন দেশের সঙ্গে এই আলোচনা চলছে, তা স্পষ্ট করেননি।
এই উদ্যোগ অনেকটা আগের কনজারভেটিভ সরকারের রুয়ান্ডা পরিকল্পনার মতো, যেখানে প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠানো হতো। তবে ক্ষমতায় এসে সেই পরিকল্পনাকে 'গিমিক' ( বলে বাতিল করেছিলেন স্টারমার নিজেই।
আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানায় আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এদি রামার সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে স্টারমার বলেন, নতুন উদ্যোগটি অভিবাসন সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান নয়। তিনি বলেন, 'এটা কোনো ম্যাজিক নয়। তবে এটা অন্য পদক্ষেপগুলোর সঙ্গে মিলে মানব পাচারকারীদের রুখতে সাহায্য করবে।'
আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী রামা স্পষ্ট করে বলেন, তার দেশের সঙ্গে ইতালির করা একই ধরনের একটি চুক্তি 'একবারের জন্য' এবং এটি এখনো কার্যকারিতা যাচাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, আলবেনিয়ায় পরিচালিত ইতালীয় ক্যাম্পে প্রতি বছর সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার আশ্রয়প্রার্থী রাখা যাবে। তবে এটি আদালতে আটকে আছে।
যুক্তরাজ্যে ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার মানুষ ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে প্রবেশ করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ সংখ্যা এ বছর রেকর্ড ছুঁতে পারে।
স্টারমার দাবি করেন, তার লেবার সরকার ক্ষমতায় এসে অভিবাসন নিয়ে এক 'গোছানো বিশৃঙ্খলা' পেয়েছে, যা রেখে গেছে আগের কনজারভেটিভ সরকার। তিনি বলেন, তারা আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়ায় চরম ব্যর্থ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর একজন মুখপাত্র জানান, রিটার্ন হাবগুলো তাদের জন্য যারা যুক্তরাজ্যে থাকার সব আইনি সুযোগ শেষ করে ফেলেছে, কিন্তু বিভিন্নভাবে — যেমন নথিপত্র হারিয়ে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে বা অন্য উপায়ে — নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছে।
এই ঘোষণা স্টারমারের কঠোর নতুন অভিবাসন নীতিগুলোর সর্বশেষ সংযোজন। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাসের যোগ্যতা অর্জনের জন্য নির্ধারিত সময় দ্বিগুণ করার প্রস্তাব, যা ডানপন্থী ন্যাজেল ফারাজের রিফর্ম ইউকে পার্টির জনপ্রিয়তা মোকাবেলার কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।