যুদ্ধ অবসানে ইউক্রেনকে অস্থায়ী প্রশাসনের অধীনে রাখার প্রস্তাব পুতিনের

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনকে একটি অস্থায়ী প্রশাসনের অধীনে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে নতুন নির্বাচন এবং গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির স্বাক্ষরের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাধান করা যেতে পারে। রুশ সংবাদ সংস্থাগুলো শুক্রবার (২৮ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে।
উত্তর মুরমানস্কে তার সফরের সময় পুতিন এই মন্তব্য করেন। ইতোমধ্যে মস্কো ও কিয়েভের সাথে আলাদা আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পুতিন বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সত্যিই শান্তি চান।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে বা আহত হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, শহর ধ্বংস হয়েছে, এবং মস্কো ও পশ্চিমের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সংঘাত শুরু হয়েছে।
পুতিনের অস্থায়ী প্রশাসন প্রস্তাবটি তার দীর্ঘদিনের অভিযোগের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ বৈধ আলোচনার জন্য উপযুক্ত নয়, কারণ প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ২০২৪ সালের মে মাসে তার ম্যান্ডেট শেষ হওয়ার পরও ক্ষমতায় রয়েছেন।
তিনি বলেছেন, 'প্রকৃতপক্ষে, ইউক্রেনে একটি সাময়িক প্রশাসন জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় দেশ এবং আমাদের অংশীদারদের তত্ত্বাবধানে চালু করা যেতে পারে। এটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজন এবং জনগণের আস্থা অর্জন করা একটি সক্ষম সরকারকে ক্ষমতায় আনবে। তারপর তাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে।'
পুতিন আরও বলেন, ট্রাম্পের রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা নতুন প্রেসিডেন্টের শান্তি চাওয়ার ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে, যা তার পূর্বসূরি জো বাইডেন চাননি। উল্টো যোগাযোগ এড়িয়ে গেছেন।
হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন মুখপাত্র বলেন, ইউক্রেনের শাসন ব্যবস্থা তার সংবিধান এবং জনগণের মাধ্যমে নির্ধারিত। তবে, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইউরোপীয় নেতারা তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) প্যারিসে একটি বৈঠক শেষে তারা কিয়েভের সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ফ্রান্স এবং ব্রিটেন একটি বিদেশি 'নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বাহিনী' তৈরি করার চেষ্টা করেছে, যদি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হয়। তবে, মস্কো বিদেশি সেনাদের উপস্থিতি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার বৈধতা নিয়ে কোনো প্রশ্নের প্রতি অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের আইন অনুযায়ী সামরিক আইন জারি থাকা অবস্থায় নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এবং যুদ্ধে থাকা অবস্থায় ভোটগ্রহণ অসম্ভব। তিনি সম্প্রতি পুতিনের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করে বলেছেন, তিনি সংঘাত অব্যাহত রাখতে চান।
চলমান আলোচনায় যুক্ত থাকা তিনজন ব্যক্তির দেওয়া তথ্য এবং বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দেওয়া খসড়া প্রস্তাবের সারাংশ অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের সঙ্গে একটি নতুন খনিজ চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে।
ট্রাম্প বলেছেন, একটি খনিজ চুক্তি শান্তি চুক্তি সুরক্ষিত করতে সহায়ক হবে, কারণ এটি যুক্তরাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে আর্থিক সহায়তা দিতে সাহায্য করবে।