সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবিতে সহিংসতা, ভারতের নাগপুরে কারফিউ

সরিয়ে ফেলতে হবে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি, ভারতের মহারাষ্ট্রে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর এমন দাবিকে ঘিরে হিংসার আগুন জ্বলেছে ভারতের নাগপুর শহরে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায়- পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জারি করা হয়েছে কারফিউ। খবর বিবিসির
আওরঙ্গজেবের আমলেই ভারতীয় উপমহাদেশে মোগল সম্রাজ্যের সর্বাধিক বিস্তার ঘটে। তাঁর সমাধি মহারাষ্ট্রের সম্ভাজিনগর জেলার খুলদাবাদে অবস্থিত। এই জেলার আগের নাম ছিল আওরঙ্গাবাদ। বর্তমান নাম ছত্রপতি শিবাজির জ্যেষ্ঠ পুত্র সম্ভাজির নামে, সম্ভাজিনগর। জেলার খুলদাবাদ থেকে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা সমাধি্টি সরানোর দাবি অনেক দিন ধরেই জানিয়ে আসছে।
এই দাবিতে বেশ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রতিনিধিরা গত সোমবার নাগপুর শহরের মহল অঞ্চলে জমায়েত করে। আওরঙ্গজেবের একটি ছবি এবং সবুজ কাপড়ে ঢাকা এক প্রতীকী কবরে আগুনও লাগানো হয় ওই কর্মসূচিতে।
ওই অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে। বিভিন্ন এলাকায় যানবাহন ও দোকানে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ নানাভাবে পুলিশও আক্রান্ত হয়। অন্তত ২৫ জন পুলিশ কর্মী এই অরাজকতায় আহত হন বলে জানা গেছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা করে ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।
পুলিশ বলছে, বর্তমানে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে। তিনি নাগরিকদের 'গুজবে' বিশ্বাস না করার এবং আইন নিজের হাতে না নেওয়ার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "নাগপুর শান্তিপ্রিয় শহর এবং একে অপরের সুখ-দুঃখে অংশগ্রহণ করে। এমন পরিস্থিতিতে, কোনও 'গুজবে' বিশ্বাস করবেন না এবং প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন।"
নাগপুরের পুলিশ কমিশনার রবীন্দ্র কুমার সিঙ্গাল ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারার অধীনে একটি নোটিশ জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, কোতোয়ালি, গণেশপেঠ, তহসিল, লাকাদগঞ্জ, পাচপাওলি, শান্তিনগর, সক্করদারা, নন্দনবন, ইমামওয়াদা, যশোধরানগর এবং কপিলনগর থানা এলাকায় কারফিউ জারি থাকবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব এলাকায় এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।