বিশ্বের প্রথম পেনি ব্ল্যাক স্ট্যাম্পঅলা চিঠি নিলামে, দাম ২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার!

পেনি ব্ল্যাক স্ট্যাম্পঅলা বিশ্বের প্রথম চিঠি নিলামে তোলা হচ্ছে। এই চিঠিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, "মানুষের যোগাযোগের জন্য সবচেয়ে বড় অগ্রদূতের একটি" হিসেবে। সামনের মাসে নিউ ইয়র্কের সোথবিতে নিলামের জন্য তোলা হবে এবং ধারণা করা হচ্ছে এর দাম উঠতে পারে ১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে শুরু করে ২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সোথবি জানিয়েছে, এটি নিলামে প্রত্যাশিত দামে বিক্রি হলে ডাক ইতিহাসের সর্বাধিক মূল্যে বিক্রি হওয়া চিঠি হয়ে উঠবে।
চিঠিটি ১৮৪০ সালের ২ মে ইংল্যান্ডের উত্তরের শহর বেডলিংটনের 'ভিক্টোরিয়ান আয়রন ওয়ার্কসের' ৩৫ বছর বয়সী ম্যানেজার উইলিয়াম ব্লেনকিনশপ জুনিয়রের কাছে পাঠানো হয়। সোথবি জানায়, চিঠিটির প্রেরকের নাম না জানা গেলেও এটি লন্ডনের ৩০০ মাইল দক্ষিণ থেকে 'পেনি ব্ল্যাক' স্ট্যাম্প যুক্ত করে পাঠানো হয়েছিলো।
চিঠিটি পাওয়ার পর ব্লেনকিনশপ জুনিয়র খামটি উলটো করে সেটিকে "মুলরেডি" (ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিনিধিত্বকারী চিত্র দিয়ে অলংকৃত মোড়ক) হিসেবে রূপান্তরিত করে। সেটিকে তিনি টাকা পাঠানোর জন্য সেই সময়ে পরিচিত হয়ে উঠা 'প্রিপেইড পেমেন্ট' এর মতই আলাদা এক পদ্ধতি হিসেবে আবার ব্যবহার করেছিলেন।
দ্বিতীয় খামটির প্রাপক ছিলেন ব্লেনকিনশপ নামের একজন ব্যক্তি যিনি সম্ভবত উইলিয়াম ব্লেনকিনশপ জুনিয়রের বাবা। তিনি কার্লাইলের ডাল্টন থেকে ৭৫ মাইল দূরে থাকতেন। কিন্তু দুটো চিঠির বিষয়বস্তু পরবর্তীতে হারিয়ে যায়।
সোথবির 'বুকস এন্ড ম্যানুস্ক্রিপ্ট' এর গ্লোবাল হেড রিচার্ড অস্টিন বলেন, "১৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে থাকা পেনি ব্ল্যাক স্ট্যাম্প দিয়ে সিলমোহর করা অলংকৃত মুলরেডি খামটি সকল স্তরের লোকেদের মধ্যে মতবিনিময়, চিন্তা বিনিময়, খবর ভাগ করে নেওয়া এবং নিজেদের মত প্রকাশ করার পদ্ধতিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "এআই যুগের সূচনায় এই অসাধারণ চিঠিটি আমাদের সম্পর্ক স্থাপনের সহজাত মানবিক আকাঙ্ক্ষার কথা বলে। পাশাপাশি যেই উপায়ে এই আকাঙ্ক্ষা বিগত দুই শতাব্দীতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে সেটির কথাও বলে।"
খামের উভয় পাশে এখনও স্ট্যাম্প দেওয়া তারিখগুলি দেখা যায় যার থেকে জানা যায় চিঠিগুলো কবে পাঠানো হয়েছিলো। প্রথমটা পাঠানো হয়েছিলো ১৮৪০ সালের ২ মে এবং দ্বিতীয়বার পাঠানো হয়েছিলো ১৮৪০ সালের ৪ মে যা পেনি ব্ল্যাকের আনুষ্ঠানিক যাত্রার দুই দিন আগের সময়।
শিক্ষক এবং সমাজ সংস্কারক স্যার রোল্যান্ড হিল বিশ্বের প্রথম আঠালো স্ট্যাম্প পেনি ব্ল্যাকের ধারণা দিয়েছিলেন সেই সময়ের জটিল, ব্যয়বহুল এবং অপ্রত্যাশিত ডাক খরচ যেগুলো প্রাপককে দিতে হতো সেগুলো কমানোর জন্য
ব্ল্যাক পেনি ব্যবহারকারী এবং ডাক পরিষেবার জন্য এটি অসাধারণ ভাবনা ছিল কারণ প্রাপক অর্থ প্রদান না করলে পণ্য আটকে যেতো এবং প্রেরক সেটির খরচ পুনরুদ্ধার করতে পারতোনা।
যদিও স্ট্যাম্পটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে বিশ্বব্যাপী গৃহীত হয়েছিল, জনসাধারণ উপহাস করার পরে মুলরেডি খামের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।