‘ব্যাচ প্রতিনিধি’ থেকে ভিপি-জিএস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদে যেভাবে শিবিরের উত্থান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের মতো হল সংসদ নির্বাচনেও ছেলেদের ১৩ হলের শীর্ষ তিন পদের অধিকাংশতেই ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করেন।জয়লাভ করা প্রার্থীদের অনেকেই গত বছরের ৫ আগস্টের পর হলগুলোতে 'ব্যাচ প্রতিনিধি' হিসেবে নির্বাচিত হয়ে কাজ করেছেন।
এ প্রতিবেদক ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের ১৩টি হলের মধ্যে ১২টি হলে 'ব্যাচ প্রতিনিধি' বা 'নিরাপত্তা কমিটি' বা হল সংস্কার কমিটি গঠন করার তথ্য পেয়েছে। নামে ভিন্নতা থাকলেও প্রতিটি কমিটির কাজের ক্ষেত্র অনেকটা একই ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের ১২টি হলের প্রতিনিধিদের তালিকা যাচাই করে দেখা গেছে, অন্তত আটটি হলে ব্যাচ প্রতিনিধিদের থেকেই ভিপি কিংবা জিএস নির্বাচিত হয়েছেন।
এদের মধ্যে একটি হলের জিএস বাদে নির্বাচিত বাকি সবাই শিবির সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এছাড়া একটি হলে ভিপি, জিএস ও এজিএস তিনটি পদেই ব্যাচ প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়েছেন, যারা সবাই ছাত্রশিবিরের সমর্থনে হল সংসদে নির্বাচন করেছেন।
কীভাবে নির্বাচন করা হয়েছিল 'ব্যাচ প্রতিনিধি'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের হলগুলোতে বিগত ১৫ বছর ধরে হলের সিট বণ্টন করত তৎকালীন ক্ষমতাসীন সংগঠন [বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ] ছাত্রলীগ। কোন ছাত্র কোন কক্ষে থাকবেন, কে হলে উঠতে পারবে আর কে পারবে না; এসব নিয়ন্ত্রণ করত ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের নির্যাতনের কারণে ভিন্নমত পোষণকারী বা বিরোধী ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কোনো শিক্ষার্থী এসময় হলে থাকতে পারতেন না। অনেক ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের এসব কর্মকাণ্ডের সহায়তাকারীর ভূমিকায় ছিলেন হল প্রশাসন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বিপরীতে অবস্থান নেওয়ায় ৫ আগস্টের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশিরভাগই আত্মগোপনে চলে যান। এসময় বেশিরভাগ হল প্রশাসন কার্যকর ছিল না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য হলগুলোতে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়।
গতবছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ব্যাচ প্রতিনিধি নির্বাচন করার প্রক্রিয়া নিয়ে অন্তটি চারটি হলের 'ব্যাচ প্রতিনিধি' ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি হলের অন্তত ২০জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। প্রতিটা হলে প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রায় একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
তারা জানান, হলের ব্যাচভিত্তিক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে পোলের মাধ্যমে 'ব্যাচ প্রতিনিধি' নির্বাচন করা হয়। সেখানে ওই হলের ব্যাচের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে থাকা শিক্ষার্থীদের ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচভিত্তিক এই ম্যাসেঞ্জার গ্রুপগুলো প্রথম বর্ষে 'গণরুম' থেকেই খোলা হয়। ফলে ৫ আগস্টের পর যারা নতুন করে হল প্রশাসনের মাধ্যমে বৈধভাবে হলে ওঠেন, তারা তখনও গ্রুপগুলোতে যুক্ত হতে পারেনি।
বিভিন্ন হলের প্রতিনিধির তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, কয়েকটি হলে প্রতি ব্যাচ থেকে ৫ জন করে নির্বাচিত করা হয়। আবার কয়েকটি হলে প্রতি ব্যাচ থেকে দুই থেকে তিনজন করেও নির্বাচন করা হয়।
নির্বাচনে কেমন প্রভাব ফেলেছে
হলগুলোর শিক্ষার্থীরা বলছেন, যদিও তারা তখন 'সাধারণ শিক্ষার্থী' পরিচয়ে ব্যাচ প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিন হন ও কাজ করেন, কিন্তু পরবর্তীতে হল সংসদ নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে তাদের নির্বাচনে অংশ নিতে দেখা গেছে।
ব্যাচ প্রতিনিধিদের এসব কমিটি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে আসছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দীর্ঘ ১৫ বছর তারা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনের কারণে হলে থাকতে পারেননি। ৫ আগস্টের পর হলে ওঠেন তারা। অন্যদিকে পরিচয় 'গোপন' করে হলগুলোতে আগে থেকেই থাকতেন ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। 'ব্যাচ প্রতিনিধি' নির্বাচনের মাধ্যমে এভাবে পরোক্ষভাবে হলগুলো নিয়ন্ত্রণে নেয় শিবিরের নেতা-কর্মীরা।
শহীদুল্লাহ্ হলে ভিপি পদে শিবিরের সমর্থনে নির্বাচিত হন তারেকুল ইসলাম তারেক, যিনি হলটিতে প্রতিনিধি হিসেবে ৫ আগস্টের পর কাজ করেন।
তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস)- বলেন, 'যাদের ইতিবাচক মানসিকতা ছিল তারাই এগিয়ে এসেছে। আমাদের হলে কোনো আনুষ্ঠানিক নির্বাচন এরকম না। তখন সিনিয়র ব্যাচ হিসেবে আমরা কয়েকজন ভোকাল ছিলাম, তারাই জুনিয়রদের নিয়ে বসে দায়িত্বটা নিয়েছি।'
এই প্রতিনিধিরা শুধু হলগুলোতেই কাজ করেনি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম এমনকি প্রশাসনের সঙ্গেও তারা সংযুক্ত ছিলেন।
গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর হলগুলোর শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মতবিনিময় করেন। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের প্রভোস্ট টিবিএসকে বলেন, ''ওই সময়ে [অভ্যুত্থানের পর পর] সব হলের প্রভোস্টই ছিল আওয়ামীপন্থী। তারা চাপের মুখে এটা অনুমোদন করেছে। যেহেতু হল সংসদ ছিল না, প্রশাসনও অকার্যকর ছিল, তখন প্রয়োজন ছিল এটার। এটা সত্য— এই প্রতিনিধিরা হল প্রশাসনকে সহায়তা করেছে, অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু এর ফলে হল সংসদ নির্বাচনে 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে' তারতম্য হয়েছে।''
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান দ্য বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, যেভাবেই হোক যে শিক্ষার্থীরা আগে থেকে হলে থাকতে পেরেছে, তারা শিক্ষার্থীদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে। পরবর্তীতে প্রার্থী হয়ে সেই সুসম্পর্ক ভোটে কাজে লাগাতে পেরেছে। আর যারা রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে ৫ আগস্টের আগে হলে থাকতে পারেনি বরং ৫ আগস্টের পর হল প্রশাসনের মাধ্যমে সিট পেয়ে হলে থাকার সুযোগ পেয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে ভোটের সময় কাজে লাগানোর সুযোগটা কম ছিল।
কী কাজ করতেন প্রতিনিধিরা?
হলগুলোর শিক্ষার্থীরা জানান, নির্বাচিত হল প্রতিনিধিরা ক্যান্টিন তদারকি, হলের খাবারের মানোন্নয়নহ হলের যাবতীয় বিষয় কাজ করতেন।
এছাড়া হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হলে হল প্রশাসনের কাছে তা উপস্থাপনের কাজও তারা করতেন। এছাড়া কোনো উন্নয়নমূলক কাজ বা হলে সমস্যা সমাধানে হল প্রশাসনও এই প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতেন।
ফলে হল প্রশাসনে এই প্রতিনিধিদের কাজ করার ফলে হলের অন্য শিক্ষার্থীদের কাজ করার ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে যায়।
সূর্যসেন হলের ভিপি পদে নির্বাচিত হন আজিজুল হক। যিনি ৫ আগস্টের পর হলের ক্যান্টিন তদারকি কমিটিতে ছিলেন।
তিনি টিবিএসকে বলেন, 'খাবারের সমস্যা সমাধান, দোকানগুলোতে মূল্য তালিকা নির্ধারণ করে দেওয়া, কিছু সামাজিক কাজ; যেমন কেউ অসুস্থ হলে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া এগুলা করেছি।'
যদিও ব্যাচ প্রতিনিধি থেকে নির্বাচিত ভিপি-জিএসরা দাবি করেছেন, হল প্রশাসন কার্যকর হওয়ার পর অভ্যুত্থানের দুই মাস পরই কমিটিগুলো অকার্যকর হয়ে গেছে।
তবে বিজয় একাত্তর হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, স্যার এ এফ রহমান হল, মাস্টার দা সূর্যসেন হল, কবি জসীম উদ্দীন হলে অভ্যুত্থানের পাঁচ—ছয় মাস পরেও এর সদস্যদের কাজ করার তথ্য পাওয়া যায়। তখন কমিটি আকারে কাজ না করলেও ব্যাচ প্রতিনিধি পরিচয়ে হল প্রশাসনের সঙ্গে স্বতন্ত্রভাবে বিভিন্ন কাজ করেন তারা।
শেখ মুজিবুর রহমান হলের জিএস আহমেদ আল সাবাহ টিবিএসকে বলেন, 'ব্যাচ প্রতিনিধিরা যেহতু প্রথম থেকেই কাজ করেছে, পরবর্তীতে প্রশাসনের সঙ্গে তাদেরই যোগাযোগ বেড়েছে। তাদেরকেই শিক্ষক বা প্রভোস্টরা চিনেছেন যে সে প্রতিনিধি ছিল। সে কারণে হলের ছাত্ররাও ব্যাচ প্রতিনিধির মাধ্যমেই তাদের দাবি দাওয়া জানাত।'
সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব আবিদুর রহমান মিশু টিবিএসকে বলেন, 'হলের কাজসমূহ ত্বরান্বিত করার নামে রাজনীতি চর্চার সুযোগ পায় হলগুলোর বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের শিক্ষার্থীরা। যদিও তারা বিগত একটি বছর নিজেদের অরাজনৈতিক, সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিল। এমনকি ডাকসু নির্বাচনেও তারা নিজেদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু শিবির কর্তৃক প্রার্থী তালিকা তৈরি করে দেওয়া কাগজের অপর পাতায় হুবহু তাদের নাম দেখতে পাই আমরা।'
ব্যাচ প্রতিনিধি হিসেবে যারা ভিপি-জিএস পদে নির্বাচিত হন
গত বছরের ২৩ অক্টোবর সূর্যসেন হল প্রশাসন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, ২৬ সেপ্টেম্বর (২০২৪) অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক কমিটির সভার সিদ্ধান্তক্রমে হলের কাজসমূহ ত্বরান্বিত ও তদারকির জন্য হাউস টিউটর ও ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে চারটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর মধ্যে সূর্যসেন হলে ভিপি পদে নির্বাচিত আজিজুল হক ও এজিএস পদে নির্বাচিত মো. রিয়াজউদ্দীন সাকিব ক্যান্টিন ও ক্যাফেটেরিয়া তদারকি কমিটির সদস্য, জিএস পদে মোখলেছুর রহমান জাবির হলের দোকানসমূহ তদারকি কমিটির সদস্য ছিলেন। তারা তিনজনই হল সংসদে শিবিরের সমর্থনে নির্বাচিত হন।
মুক্তিযুদ্ধো জিয়াউর রহমান হলে উত্তর ব্লক ও দক্ষিণ ব্লক দুই ব্লকে পৃথকভাবে প্রতি শিক্ষাবর্ষ থেকে একজন করে 'ব্যাচ প্রতিনিধি' নির্বাচন করা হয়। হলটির ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত মো. মহিউদ্দিন ও জিএস পদে শিবির সমর্থনে নির্বাচিত আসিফ ইমাম উত্তর ব্লকের ব্যাচ প্রতিনিধি হিসেবে ৫ আগস্টের পর থেকে কাজ করেন।
কবি জসীম উদ্দীন হলে জিএস পদে শিবিরের সমর্থনে নির্বাচিত মাসুম আবদুল্লাহ হলটিতে গঠিত নিরাপত্তা কমিটিতে কাজ করেন। এছাড়া, এই হলের নিরাপত্তা কমিটির সদস্য মাজহারুল ইসলাম শিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে ডাকসুর ক্যারিয়ার উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে ভিপি পদে রফিকুল ইসলাম (শিবির সমর্থিত) নির্বাচিত হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর হলটিতে হল সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়। রফিক সেই কমিটিতে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। এই কমিটি ৫ আগস্টের পর থেকে হলের ক্যান্টিন তদারকিসহ নানা কাজে যুক্ত থাকেন।
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে 'ব্যাচ প্রতিনিধি'দের তালিকা থেকে দেখা যায়, প্রতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ৫ জন করে মোট ২৪ জনের নাম রয়েছে। এ হলে জিএস পদে জয়ী খালেদ হোসেন ব্যাচ প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
বিজয় একাত্তর হলে এজিএস পদে শিবিরের সমর্থনে নির্বাচিত হয়েছেন ইমরান হোসাইন। তিনি হলের ২০-২১ ব্যাচের প্রতিনিধি ছিল।
শেখ মুজিবুর রহমান হলে শিবির সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে জিএস পদে নির্বাচিত আহমেদ আল সাবাহ হলটির ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ব্যাচ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল ভিপি পদে তারেকুল ইসলাম তারেক ও এজিএস পদে ইব্রাহিম খলিল শিবিরের সমর্থনে নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ভিপি তারেকুল ইসলাম তারেক ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ও এজিএস ইব্রাহিম খলিল ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের প্রতিনিধি হিসেবে হলে অভ্যুত্থানের পর কাজ করেন।
ফজলুল হক মুসলিম হলে শিবিরের সমর্থনে ভিপি পদে নির্বাচিত খন্দকার মো. আবু নাঈম হলটির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রতিনিধি ছিলেন।
ছাত্রশিবির যা বলছে
ডাকসুর এজিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান টিবিএসকে বলেন, 'যদিও ব্যাচ প্রতিনিধি নির্বাচন লেজিটিমেট (বৈধ) প্রক্রিয়া না, তবে তখন হল পরিচালনার স্বার্থে শিক্ষার্থীরা তাদের নির্বাচিত করছে এবং তাদের মতামতের ভিত্তিতেই এটা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'অভ্যুত্থানের সময় যখন হল থেকে ছাত্রলীগ বের করা হয়েছে তখন কারো রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। সেই সময়ে আন্দোলনে যারা মুখ্য ভূমিকা রাখতে পেরেছিল, তারাই পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে উঠতে পেরেছিল।'
তিনি আরও বলেন, 'কে কোন রাজনৈতিক দল করে এটা যেমন অভ্যুত্থানের সময় ছিল না। অভ্যুত্থানের ইমেডিয়েট পর যেহেতু ব্যাচ প্রতিনিধির বিষয়টা, তখনও এটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।
যেহেতু ডাকসুতে সবসময় রাজনৈতিক পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং এক বছর পর যখন ডাকসু নির্বাচন এসেছে তখন রাজনৈতিক পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।'
