জাতীয় কবির সমাধি প্রাঙ্গণে সমাহিত হলেন শরিফ ওসমান হাদি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই সমাহিত করা হয়েছে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ৩টা ২০ মিনিটের দিকে তাকে সেখানে শায়িত করা হয়।
দাফন সম্পন্ন করার সময় সমাধি প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ এবং প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ।
এছাড়াও দাফন অনুষ্ঠানে অংশ নেন ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস এস এম ফরহাদ, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং সারজিস আলম।
শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজা ও দাফন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এর আগে, দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লাখো মানুষের উপস্থিতিতে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে হাদির মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষের ঢল নামে। জানাজায়, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা অংশগ্রহণ করেন। নামাজে ইমামতি করেন হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।
দাফন কার্যক্রম শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান বলেন, 'শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। দেশের জন্য তার ত্যাগ আল্লাহ তা'আলা কবুল করুক। তার পরিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারিত পরিবারের অংশ।'
তিনি আরও বলেন, 'চূড়ান্তভাবে সম্মান জানাতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়েছে। আমরা মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার সন্তানকে বুকে নিয়েছে। মা তার ছেলেকে বা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে গ্রহণ করেছে।'
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হাদির মরদেহ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় পৌঁছায়। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে তার মরদেহ রাখা হয়। সেখান থেকে আজ সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দীর মর্গে নেওয়া হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনা হয়।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর বক্স কালভার্ট এলাকায় রিকশায় করে যাওয়ার সময় ওসমান হাদির ওপর আক্রমণ হয়। মোটরসাইকেলে করে এসে দুজন তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
এরপর তাকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা শেষে ওই রাতেই এভারকেয়ার হাসপাতালে আনা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরিফ হাদি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
