ফ্লপের ভয়ে পারিশ্রমিক ফিরিয়েছিলেন তারকারা, সেই সিনেমাই হয়ে উঠল বলিউডের কাল্ট ক্লাসিক

ভাবুন তো, একটা ছবি তৈরি হচ্ছে ৩০ কোটি টাকা খরচ করে, আর তারকারা পারিশ্রমিকের টাকা ফেরত দিচ্ছেন এই ভয়ে যে ছবিটি ফ্লপ করবে! কিন্তু সেই ছবিই পরে একটা গোটা প্রজন্মের কাছে 'কাল্ট ক্লাসিক'-এর মর্যাদা পেল। অবিশ্বাস্য শোনালেও, এ এমনই এক বাস্তব গল্প। বলছিলাম ২০০৬ সালের আলোড়ন সৃষ্টিকারী ছবি 'রং দে বাসন্তী'র কথা।
বলিউডের ইতিহাসে এই ছবিটির এক বিশেষ স্থান রয়েছে। আমির খান, সোহা আলি খান, কুনাল কাপুর—তারকাদের সমাবেশ ছিল রীতিমতো ঝলমলে। অথচ ছবি মুক্তির আগে নির্মাতাদের মনে ছিল রাজ্যের চিন্তা, সাফল্য নিয়ে ছিলেন ঘোর অনিশ্চয়তায়। সম্প্রতি সোহা আলি খান নিজেই ফাঁস করেছেন সেই চাঞ্চল্যকর তথ্য। তিনি জানান, "যখন আমরা ছবির প্রচারে ব্যস্ত ছিলাম, প্রযোজকরা হঠাৎ ফোন করে জানতে চাইলেন, আমরা পারিশ্রমিকের কিছু অংশ ফেরত দিতে পারব কিনা। তাঁদের মনে হয়েছিল, ছবিটি হয়তো বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়বে।"
সোহা আরও বলেন, "ছবিটি ফ্লপ করার আশঙ্কায় প্রত্যেক অভিনেতা তাঁদের পারিশ্রমিকের কিছু অংশ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কেউ কল্পনাই করতে পারেননি 'রং দে বাসন্তী' এত বড় একটা প্রভাব ফেলবে। ছবিটি নিছকই এক সিনেমা থাকেনি, একসময় তা একটি আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল! সোহা গর্বের সঙ্গে বলেন, "আমার ক্যারিয়ারে এটি ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এই ছবিটি আমার যাত্রার এক উজ্জ্বল মাইলফলক হয়ে থাকবে।"
শুটিংয়ের দিনগুলো কেমন ছিল?
প্রায় এক বছর ধরে চলেছিল এই ছবির মহাযজ্ঞ! পাঞ্জাব, রাজস্থান, দিল্লি আর মুম্বাইয়ের মতো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এর শুটিং হয়েছিল। সোহা স্মৃতিচারণ করে বলেন, "আমরা এত বেশি সময় একসঙ্গে কাটিয়েছিলাম যে মনে হতো এই বন্ধুত্বগুলো যেন চিরকালের জন্য। সিনেমাটোগ্রাফার বিনোদ প্রধান প্রতিটি শটকে নিখুঁতভাবে আলোর সাজে সাজাতেন, কখনও কখনও একটা ফ্রেমের জন্যই আধাবেলা লেগে যেত!" তবে সময়ের নিয়মে জীবন ভিন্ন পথে বাঁক নেয়। ক্যারিয়ার আর ব্যক্তিগত জীবনের ব্যস্ততায় সেই প্রাণের ঘনিষ্ঠতাও ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসে।
সোহা আলি খানের নতুন চমক কী?
২০১৮ সালের ছবি 'সাহেব বিবি অউর গ্যাংস্টার ৩'-এর পর সোহা একটা দীর্ঘ বিরতি নিয়েছিলেন। এরপর অবশেষে তিনি ফিরেছেন 'ছোড়ি ২' নামের এক হরর থ্রিলার নিয়ে, যা এখন অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওতে স্ট্রিমিং হচ্ছে। এই সিক্যুয়েলে সোহা ছাড়াও আছেন নুসরত ভরুচা, গশমীর মহাজানি এবং জিতেন্দ্র কুমার। ছবিটি পরিচালনা করেছেন বিশাল ফুরিয়া। 'ছোড়ি ২'-তে সোহা নিজেকে নতুনভাবে মেলে ধরেছেন, দেখিয়েছেন ভিন্ন ধারার চরিত্রে অভিনয়ের সাবলীল ক্ষমতা। নিঃসন্দেহে এটি তাঁর এক দারুণ প্রত্যাবর্তন!