'উনো কার্ড, আইনি নোটিশ, ডলারের নোট': ভিন্নধর্মী প্রচারণায় জমে উঠেছে ডাকসু ভোটের লড়াই

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ডাকসু নির্বাচন। সে উপলক্ষে ক্যাম্পাসে এখন উৎসবের আমেজ, প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণাও তুঙ্গে। কিন্তু এবার যেন সবকিছু একটু ভিন্ন, গৎবাঁধা লিফলেট আর পোস্টার নয়, বরং ভিন্ন কৌশলে প্রার্থীরা পৌঁছে যাচ্ছেন ভোটারের কাছে।
নির্বাচনকে ঘিরে এই কয়েকদিন ধরে জলঘোলাও কম হয়নি। একবার স্থগিত, তারপর এক ঘণ্টার মধ্যেই সেই স্থগিতাদেশও স্থগিত—ডাকসু যেন নাটকীয়তার কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে ডাকসু নির্বাচন ঘিরে যতই অনিশ্চয়তা থাকুক না কেন, ক্যাম্পাসে একটি দৃশ্য যেন অনিবার্য। সকাল থেকে সন্ধ্যা, লাইব্রেরি থেকে খেলার মাঠ—সর্বত্রই হাসিমুখে লিফলেট হাতে কোনো না কোনো পরিচিত বা অপরিচিত মুখের দেখা মিলবেই। হাতে লিফলেট গুঁজে দিয়েই তারা নিজের পরিচয় ও ব্যালট নাম্বার জানিয়ে চাইবেন ভোট।
কিন্তু হঠাৎই যদি দেখেন, চিরচেনা কাগজের লিফলেটের বদলে আপনার হাতে এসে পড়লো ঝলমলে, রঙিন একটি 'উনো' কার্ড?
আর এমনই এক অভিনব কৌশল দিয়ে নিজের হল এবং ক্যাম্পাসের নানা প্রাঙ্গণে আলোচনায় এসেছেন লাগিয়ে দিয়েছেন কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী নুসরাত জাহান সাউদা। তার ব্যালট নম্বর ৫৯—হ্যাঁ, এই 'ঊনষাট' আর বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় 'উনো' কার্ডের উচ্চারণ অনেকটা কাছাকাছি। ব্যস, এই বুদ্ধিদীপ্ত সুযোগটিকেই কাজে লাগিয়েছেন সাউদা। প্রায় চার হাজার উনো কার্ড ছাপিয়ে ফেলেছেন চারটি ভিন্ন রঙে, আর সেই কার্ড দিয়েই চলছে তার জমজমাট প্রচারণা। কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে, সাউদার এই 'উনো কার্ড' এখন সবার আলোচনার বিষয়।

উনো কার্ড হাতে পেয়ে নাহয় ভালোই লাগবে, কিন্তু ভাবুন তো, ক্লাসের ব্যস্ততা সেরে বাড়ি ফিরছেন ক্লান্ত শরীরে, আর ঠিক তখনই হঠাৎ একজন এসে আপনার হাতে ধরিয়ে দিল এক আইনি নোটিশ! চমকে উঠবেন তো বটেই, হয়তো খানিকটা ঘাবড়েও যাবেন।
তবে এমনই এক অভিনব চমক দেখিয়েছেন মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ মেহেদী হাসান মুন্না—যিনি প্রচারণার সময় নিজের পরিচয় দিচ্ছেন 'মানবাধিকার মুন্না' নামেই। মুখে হাসি ঝুলিয়ে তিনি বলেন, 'আমি চাই মানুষ আমার ইশতেহার জানুক। কিন্তু সত্যি বলতে, আজকাল কে আর অত মন দিয়ে ইশতেহার পড়ে? তাই ভাবলাম, পদটির সঙ্গেই যায় এমন কিছু দেওয়া যাক, যা অন্তত তাদের ইশতেহার পড়তে কৌতূহলী করে তুলবে।' আর সে ভাবনা থেকেই জন্ম এই 'আইনি নোটিশের' ধারণার।

কিন্তু মুন্না শুধু এতেই থেমে থাকেননি। নারী ভোটারদের মন জয় করার জন্য তিনি নিয়ে এসেছেন প্রজাপতি আকৃতির কার্ডও। তার নিজস্ব ব্যাখ্যায়, এই প্রজাপতি নারী মুক্তির প্রতীক। এক কথায়, তার প্রতিটি প্রচারণায় রয়েছে এক ভিন্ন চিন্তাভাবনার ছাপ।

তবে এবারের নির্বাচন মৌসুমে একটি বিষয় সম্ভবত সবার নজর কেড়েছে সবচেয়ে বেশি। তা হলো—টাকা বা ডলারের আদলে তৈরি নানা ধরনের লিফলেট। দেখলে মনে হবে যেন আস্ত একখানা নোটের ফটোকপি, কিন্তু খুঁটিয়ে দেখলেই মিলবে আসল চমক!
যেখানে দেশের মুদ্রাগুলোতে তার মূল্য লেখা থাকে, প্রার্থীরা সেখানে কৌশলে ছাপিয়ে দিয়েছেন নিজেদের ব্যালট নম্বর। 'চাহিবামাত্র ইহার বাহককে...টাকা দিতে বাধ্য থাকিবেন' এর জায়গায় লেখা হয়েছে 'চাহিবামাত্র ইহার প্রার্থীকে...ব্যালটে ভোট দিয়ে বাধিত করবেন'! এমনকি যেখানে থাকার কথা গভর্নরের গম্ভীর প্রতিকৃতি, সেখানে সগর্বে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীর হাস্যোজ্জ্বল মুখ। এই ধরনের প্রচারপত্র কেবল চোখে পড়ছে না, রীতিমতো কৌতূহলও জাগিয়ে তুলছে সবার মনে।
এই মজার ব্যাপারটাকে দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল মুকিত পারভেজ, সাফায়াত খলিল নাকিবসহ আরও বহু প্রার্থী।

তবে, একথা মানতেই হবে যে, কাগজের যত বুদ্ধিদীপ্ত সৃষ্টিই হোক না কেন, সেগুলোর আয়ু খুব একটা দীর্ঘ হয় না। মুহূর্তের মুগ্ধতার পর সেগুলো অচিরেই ঠাঁই পায় যত্রতত্র। কিন্তু তাতে কি নির্বাচনী প্রচারণার এই আইডিয়া-যুদ্ধ থেমে থাকছে? মোটেই না! বরং প্রার্থীরা আরও নতুন নতুন পথ খুঁজছেন। তাদের উপকরণগুলো যেন কেবল আকর্ষণীয়ই না হয়, একই সঙ্গে স্মরণীয় ও কার্যকর হয়—এই ভাবনা থেকেই অনেকে এখন ঝুঁকছেন বুকমার্কের আদলে লিফলেটের দিকে!

এই বুকমার্কগুলো কিন্তু কেবলই কাগজের টুকরা নয়, প্রতিটিই নিজস্ব পরিচয়ে বলছে ভিন্ন গল্প। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান যেমন দেখিয়েছেন তার শিল্পিত রুচির পরিচয়। এক সেট বুকমার্ক তিনি সাজিয়েছেন বিখ্যাত স্টুডিও জিবলি আর ভ্যান গগের কালজয়ী চিত্রকর্ম 'দ্য স্ট্যারি নাইট' থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে।
অন্য আরেকটি সেটে তিনি দারুণভাবে তুলে ধরেছেন চিরচেনা 'অপরাজেয় বাংলা' এবং মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'মেঘনাদবধ কাব্য'-এর সেই সচিত্র ঐতিহ্যকে। দুটি বুকমার্কেই বড় হরফে জ্বলজ্বল করছে জুলাই অভ্যুত্থানে চানখারপুলে দাঁড়িয়ে তার বলা বহুল আলোচিত বাক্যটি—'প্লিজ, দয়া করে কেউ কাউকে ছেড়ে যাবেন না'।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবিল আহমেদ হেঁটেছেন একেবারেই ভিন্ন পথে। তিনি তার বুকমার্কে যেন যত্নে বুনে দিয়েছেন ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণার নস্টালজিক গল্প। তার ডিজাইনে ফুটে উঠেছে সবার প্রিয় মুখ আর পরিচিত সব আড্ডাস্থল: টিএসসির প্রিয় চা বিক্রেতা স্বপন মামা, সাকিবের চায়ের দোকান, আর টিএসসির আশেপাশে সবার চোখের মণি ক্যাম্পাসের সেই 'অভ্র' কুকুর।
তবে প্রচারণার কৌশলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়ে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ শামসুদ্দোজা নবাব। প্রথম দিকে তিনি বাজিমাত করেছিলেন 'স্পাইডার-ম্যান: ইনটু দ্য স্পাইডার-ভার্স' চলচ্চিত্র থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি একটি ভিডিও দিয়ে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্রুত আলোড়ন তুলেছিল। আর এখন তিনি মাতিয়ে রেখেছেন জনপ্রিয় টিভি সিরিজ 'ব্রেকিং ব্যাড'-এর আদলে তৈরি লিফলেট দিয়ে; পপ কালচারের এমন এক অভিনব মোচড় তার প্রচারণাকে অন্যদের চেয়ে শতগুণে আলাদা করে তুলেছে।

নির্বাচনে প্রার্থীরা তাদের পদের সাথে সামঞ্জস্য রেখেও প্রচারণা চালাচ্ছেন। যেমন ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী জাহীন ফেরদৌস জামির প্রচারপত্রগুলো হাতে নিলেই মনে হবে, এ যেন এক টুকরো ক্রিকেট ব্যাট! আবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদপ্রার্থী শাকিব খান তার প্রচারপত্রগুলোকে গড়ে তুলেছেন ওয়াই-ফাই প্রতীকের আদলে!
তবে, সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদের লড়াই। এখানে প্রার্থীরা যেন একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। মোহাম্মদ আসিফ জারদারি তার কার্ডগুলোকে রূপ দিয়েছেন আস্ত বাসের আদলে! দেখলে মনে হয়, যেন ছোট একটি বাস এসে হাজির। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী রাফিজ খান, যিনি ক্যাম্পাসে 'রাফিজ পরিবহন' নামেই পরিচিত, তিনিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী লাল বাসের আদলে কার্ড বানিয়ে তিনি সবার নজর কেড়েছেন।
এদিকে, কিছুদিন আগেই ছিল 'চিঠি দিবস'। আর এই দিনটি যেন প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণার এক নতুন দুয়ার খুলে দিল। বেশ কয়েকজন প্রার্থী এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত ছোঁয়ায় তৈরি করলেন প্রচারের নতুন গল্প। কেউ হাতে কলমে লিখে, কেউ বা প্রিন্ট করে ব্যক্তিগত চিঠি বিতরণ করলেন শিক্ষার্থীদের মাঝে।

তবে, সৃজনশীলতার এই প্রতিযোগিতায় সবাই যে গা ভাসিয়েছেন, এমনটাও কিন্তু নয়। প্রচারণার বেলায় কেউ কেউ ভরসা রেখেছেন পুরোনো প্রথাতেই।
যেমন, কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী মাইশা মালিহা। তিনি বেছে নিয়েছেন একদম চিরাচরিত প্রচারপত্রের নকশা। হাসিমুখে তিনি বোঝালেন, 'আমি চেয়েছিলাম আমার প্রচারপত্রগুলো যেন জাতীয় নির্বাচনের বা অন্য যেকোনো ভোটের মতোই হয়। তা না হলে তো মনেই হয় না যে এটা একটা সত্যিকারের নির্বাচন! এই যে সব দারুণ দারুণ সৃজনশীল ভাবনা দেখছি, সেগুলোকে আমি সত্যিই সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে চেয়েছি, বহু বছর ধরে চলে আসা প্রথা মেনেই প্রচারপত্র ছাপাতে।'

তবে এই নির্বাচনের আমেজ কেবল প্রার্থী আর ভোটারদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই; ক্যাম্পাসের আশপাশের ছাপাখানাগুলোতেও লেগেছে উৎসবের ছোঁয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিক পাশেই অবস্থিত গাউসুল আজম মার্কেটে এখন যেন দিনরাত এক করে চলছে কর্মযজ্ঞ। সারি সারি প্রিন্টিং মেশিনগুলো অবিরাম চলছে, একটার পর একটা পোস্টার, লিফলেট আর হরেক রকম নির্বাচনী কার্ড তৈরি করে যাচ্ছে। এই নির্বাচনী ব্যস্ততা যেন শুধু রাজনীতির মাঠে নয়, ছড়িয়ে পড়েছে অর্থনীতির ছোট ছোট চাকাগুলোতেও, যা এই সময়টাকে করে তুলেছে আরও প্রাণবন্ত।
ঝর্ণা এন্টারপ্রাইজের মালিক রঞ্জিত সরকার তো বলেই ফেললেন, এবারের মৌসুমটা তার জীবনের সবচেয়ে ব্যস্ততম! হাসিমুখে তিনি জানালেন, এবারের নির্বাচনে প্রার্থীরা যে সব অদ্ভুত আর অভিনব প্রচারপত্র তৈরি করছেন, তার অর্ডার না পেলেও সাধারণ লিফলেটের চাহিদাও এতটুকু কমেনি। 'কোনো প্রার্থীই হাজারটার নিচে পোস্টার ছাপাচ্ছেন না,' বলেন তিনি।

কাছেই আরাফাত প্রেসে বসে আছেন মমিনুল। তার দোকানে এখন বুকমার্কের স্তূপ, তার পাশেই থরে থরে সাজানো রয়েছে টাকা আর ডলারের নোটের আদলে তৈরি সেই 'কারেন্সি-স্টাইলের' লিফলেটগুলো। ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের সময়ও তিনি এই ব্যবসার সঙ্গেই জড়িত ছিলেন। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি তার কাছে একদমই আলাদা মনে হচ্ছে।
মমিনুল ব্যাখ্যা করলেন, 'চারিদিকে একটা সত্যিকারের উৎসবের আমেজ। গতবার নির্বাচনটা ছিল একেবারেই একতরফা – অন্য কোনো দল পোস্টার বানানোর সাহসও দেখায়নি। আমার মনে আছে, বিরোধী দলের দু-একজন শিক্ষার্থী কেমন যেন ভয়ে ভয়ে এসে ফিসফিস করে শুধু দুটো প্যাড চেয়েছিল। আর এবার? সবাই খোলামেলাভাবে অংশ নিচ্ছে। তারা তাদের নিজস্ব নকশা, নিজস্ব ধারণা নিয়ে আসছে। ভোটাররা খুশি, প্রার্থীরা খুশি, আর আমরা ছাপাখানার লোকেরাও খুশি।'

আর সেই যে ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে তুমুল আলোচিত উনো কার্ডগুলো? সেগুলো তৈরি হয়েছে আরাফাত প্রেসের ঠিক পাশেই মানিকগঞ্জ প্রিন্টিং থেকে। মালিক মোহাম্মদ ইউসুফ মোল্লাহর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন তিনি নতুন অর্ডার নেওয়ার ব্যস্ততায় মগ্ন, এক হাতে ক্লায়েন্ট সামলাচ্ছেন তো অন্য হাতে মেশিনের চাকা ঘুরছে।
ইউসুফ মোল্লাহ অকপটে স্বীকার করলেন, উনো কার্ডগুলো যে ক্যাম্পাসে এত জনপ্রিয় হবে, তা তিনি নিজেও ভাবতে পারেননি। তার মুখে গর্ব আর বিস্ময়ের এক অদ্ভুত মিশেল দেখা গেল। 'উনো ছাড়া বাকি সবই তো সাধারণ লিফলেট। তবে এরপর যদি কেউ আবার এমন কিছু বানাতে চায়… আমার কাছেই আসতে বলবেন!'
ঐতিহ্যবাহী অফলাইন প্রচারণার পাশাপাশি ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা এবার অনলাইন জগতেও নিজেদের জানান দিচ্ছেন দারুণভাবে। ফেসবুকে তাদের অভিনব পোস্টার, মিম আর ভিডিওগুলো ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে পুরোদমে।
যেমন, কেন্দ্রীয় সদস্য পদপ্রার্থী অর্ক বড়ুয়া। তার প্রচারণামূলক ভিডিওগুলো এরই মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে, যেখানে তিনি সৃজনশীল উপায়ে নিজের বার্তা তুলে ধরছেন। একইভাবে, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদপ্রার্থী ফারিয়া মতিন ইলা বিভিন্নধর্মী গান গেয়ে ভিডিওর মাধ্যমে নিজের প্রচারণা চালিয়েছেন। আরেক প্রার্থী মাহবুব খালাসি 'বহু স্বরের প্রতিধ্বনি' ব্যানারে গান ও কবিতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন, যদিও পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সমাবেশগুলো নিয়ে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে।
অনলাইনে ভোটারদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে 'মিম'ও প্রার্থীদের জন্য এক জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তবে সব ডিজিটাল কৌশলের মধ্যে ব্যক্তিগত ইশতেহার তুলে ধরা 'ফটো কার্ড'গুলোই সবচেয়ে বেশি দেখা ও শেয়ার করা হয়েছে।
হাজার হাজার শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানোর জন্য সময়টা খুবই কম, তাই প্রার্থীরা এখন সবরকম চেষ্টা করছেন – সেকেলে চিরাচরিত পদ্ধতি থেকে শুরু করে চোখ ধাঁধানো অভিনব কৌশল পর্যন্ত।
প্রার্থীরা হাতে হাতে প্রচারপত্র, পোস্টার বা লিফলেট বিতরণ করতে পারলেও, ক্যাম্পাসে কোথাও কিছু টাঙানো বা সাঁটানো যাবে না। ফলে, লিফলেট বিতরণই প্রচারণার প্রধান এবং সবচেয়ে দৃশ্যমান মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা এটিকে সৃজনশীলতার জন্য এক চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ উভয়ই করে তুলেছে।
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই প্রচারণা চলবে।