হল সংসদের সাথে আলোচনা ছাড়াই হলের নাম পরিবর্তনের কর্মসূচি দেওয়ার অভিযোগ ডাকসুর বিরুদ্ধে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করার বিষয়ে হল সংসদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই কর্মসূচি ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-এর বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডাকসুর সমালোচনা করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হল সংসদটির ভিপি-জিএসসহ একাধিক নির্বাচিত প্রতিনিধি।
হল সংসদের প্রতিনিধিদের ভাষ্য, তারা হলের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত। তবে সুনির্দিষ্টভাবে 'ফেলানী হল' নাম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে হল সংসদের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা না করেই ডাকসু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এর আগে হলের নাম পরিবর্তন করে 'ফেলানী হল' করার দাবিতে রোববার দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দেয় ডাকসু।
ডাকসু যে দুটি হলের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে, তা হলো- শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে 'শহীদ ওসমান হাদী হল' এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে 'ফেলানী হল' করা। একইসাথে জুলাই গণহত্যার সমর্থন দিয়েছেন—এমন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সহসভাপতি (ভিপি) তাসনিম আখতার আলিফ নাবিলা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'হল সংসদের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখেছি, কোনো কিছু আয়োজন করতে গেলে হলের নামের কারণে আমাদের ফান্ডিং আনতে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়। এমনকি হলের প্রভোস্টও নামের কারণে বিভিন্ন কাজে সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার কথা জানিয়েছেন।'
নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে নাবিলা বলেন, 'আমাদের পরিকল্পনা ছিল, হলের সার্বিক কাজ গুছিয়ে ৬ মাস পর নাম পরিবর্তনের বিষয়টা নিয়ে কাজ করব। তবে হাদি ভাইয়ের মৃত্যুর পর গতকাল হলের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিত্তিক গ্রুপে (আনঅফিসিয়াল) নাম পরিবর্তনের প্রসঙ্গ নতুন করে আলোচনায় আসে।'
তিনি জানান, মেয়েদের হল হিসেবে নারী সত্তার শক্তিশালী জাগরণকে প্রতিফলিত করে—এমন একাধিক নাম নিয়ে আলোচনা হয়। সেই প্রেক্ষিতে হল সংসদের উদ্যোগে গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত অনলাইন গ্রুপে ভোট হয়। ওই পোলিংয়ে হলের শিক্ষার্থীরা সর্বাধিক ভোট দেয় 'ক্যাপ্টেন সীতারা বেগম (বীর প্রতীক)' নামের পক্ষে এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পড়ে 'ফেলানী'র পক্ষে।
শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ভিপি দাবি করেন, তাকে বা তার হল সংসদের সাথে কোনো ধরণের যৌক্তিক আলোচনা না করেই ডাকসু থেকে হলের নাম পরিবর্তনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমাদের সাথে কিছুক্ষণ আগে হল সংসদের ভিপি-জিএসের সাথে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। দ্বিমতের কিছু নেই। দুইটা আলাদা পোলে দুইটা মতামত [সীতারা বেগম ও ফেলানী] এসেছে। আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের একপক্ষের মতামতটা আসার কারণে বিষয়টা ঘটেছে। এখানে নাম পরিবর্তনটাই মুখ্য বিষয়, হলের কোন নাম হবে তা শিক্ষার্থীদের মতের মাধ্যমেই ঠিক হবে।'
