নির্বাচনের ফল প্রকাশের ১৫ দিন পর পর্যন্ত নির্বাচন-সংশ্লিষ্টদের বদলি না করার নির্দেশ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত বদলি না করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) জারি করা এক পরিপত্রে মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং অধিদপ্তর, দপ্তর ও সংস্থাগুলোকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করার বিষয়েও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও গণভোট একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। এ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অনুরোধে সরকারের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়ার পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
এর অংশ হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে পালন করে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা ও সহযোগিতা নিশ্চিত করতে অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবিলম্বে নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি একই নির্দেশনা জারি করতে বলা হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনার কাজ অব্যাহত রাখতে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছুটি দেওয়া, অন্যত্র বদলি করা বা নির্বাচনী দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে—এমন কোনো দায়িত্ব প্রদান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত অফিস বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হবে।
এছাড়া সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষককে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগসহ নির্বাচনের বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন ভোটকেন্দ্র হিসেবে এবং আসবাবপত্র নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের প্রয়োজনও হবে।
নির্বাচন কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সব সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতা অপরিহার্য উল্লেখ করে পরিপত্রে বলা হয়েছে, অতীতেও তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছেন।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে 'নির্বাচনী কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১' বলবৎ রয়েছে। আইন অনুযায়ী, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্বে নিয়োজিত হলে তিনি নিয়োগের তারিখ থেকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে কর্মরত বলে গণ্য হবেন।
প্রেষণকালে নির্বাচন কমিশন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণে থেকে তাদের আইনানুগ আদেশ ও নির্দেশ পালন করতে হবে। এ সময় নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্বই প্রাধান্য পাবে।
