‘রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভে’ জুতা নিক্ষেপ করলেই উপহার, বুদ্ধিজীবী দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যতিক্রমী কর্মসূচি
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভে' জুতা নিক্ষেপ করে একাত্তরের ঘাতক ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করেছেন শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা। ব্যতিক্রমী এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহ দিতে জুতা নিক্ষেপ করলেই দেওয়া হয়েছে বিশেষ উপহার।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা ১২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া ভবনের সামনে অবস্থিত ঘৃণাস্তম্ভে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘৃণাস্তম্ভের পেছনের দেয়ালে ১৯৭১ সালের ঘাতকদের ছবি সাঁটানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, চৌধুরী মঈনুদ্দীন, অপারেশন সার্চলাইটের অন্যতম পরিকল্পনাকারী খাদিম হোসেন রাজা এবং পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে গোলাম আজমের বৈঠকের ছবি।
উপস্থিত জনতা ও শিক্ষার্থীরা ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপ করে তাদের ক্ষোভ ঝাড়েন। পাশাপাশি 'নিঃশব্দ ঘৃণা' নামের একটি গণস্বাক্ষর বোর্ডে মন্তব্য লিখে রাজাকারদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেন অনেকে।
কর্মসূচির আয়োজক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী বলেন, '১৯৭১ সালে যারা এ দেশের সূর্যসন্তান বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতেই এই আয়োজন। পাকিস্তানি বাহিনীর সেই বর্বরতা ও কালো ইতিহাস যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভুলে না যায়, সেই লক্ষ্যেই আমাদের এই কর্মসূচি।'
এর আগে ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপ 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ'-এ এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে লেখা হয় আলবদর, আলশামস, রাজাকার ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসরদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রদর্শন ও জুতা নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত 'ঘৃণা স্তম্ভ'। সেখানে জুতা নিক্ষেপ করলেই বিশেষ 'গিফট হ্যাম্পার' দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, যা কর্মসূচিস্থলে বাস্তবায়ন করতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে ছাত্র ইউনিয়নের কলাভবন শাখার তৎকালীন সভাপতি সাদিকুর রহমান ও উর্দু বিভাগের ছাত্র আবু তৈয়ব হাবিলদার স্তম্ভটি নির্মাণ করেছিলেন। পরদিন ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের কয়েকজন সেক্টর কমান্ডার এটি উদ্বোধন করেন। ২০০৮ সালে স্তম্ভটি ভেঙে ফেলা হলে পরে তা পুনর্নির্মাণ করা হয়।
