রাজশাহীতে নলকূপের ৫০ ফুট গভীর গর্তে আটকে আছে ২ বছরের শিশু; উদ্ধার অভিযান চলছে
রাজশাহীর তানোরে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে গভীর নলকূপের প্রায় ৫০ ফুট গভীর গর্তে আটকে আছে দুই বছরের শিশু সাজিদ। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে উদ্ধারচেষ্টা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট, মেডিকেল টিম ও স্থানীয় প্রশাসন।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর একটার দিকে উপজেলার পাঁচন্দর কোয়েলহাট পূর্ব পাড়া গ্রামের ফসলের ফাঁকা মাঠের গর্তে পড়ে যায় শিশুটি। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাযক্রম শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, গর্তের মুখ মাত্র ৮ ইঞ্চি চওড়া এবং গভীরতা ৪০ থেকে ৫০ ফুট। এজন্য এস্কেভেটর দিয়ে ওই গর্তের পাশে খনন করা হচ্ছে। কমপক্ষে ৩০ ফুট গভীর গর্ত খনন করতে হবে। পাশাপাশি ওই গর্তে পাইপ দিয়ে শিশুটিকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, গর্তের ৩৫ ফুট গভীর পর্যন্ত ক্যামেরা নামিয়েও দেখা মেলেনি শিশুটির। উদ্ধারে পরিত্যক্ত নলকূপের পাশে এস্কেভেটর দিয়ে খনন করা হচ্ছে। সবরকম টিম তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে।
জানা যায়, দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের বিলের ধার দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন শিশুটির মা। এ সময় পরিত্যক্ত নলকূপের ওপর খড় থাকায় দেখতে না পাওয়ায় এতে পড়ে যায় দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদ।
মায়ের কোলে ছিল এক বছরে শিশু সাদমান, আর মায়ের পেছনে পেছনে হেঁটে আসছিল দুই বছরে শিশু সাজিদ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানায়, পাঁচন্দর ইউনিয়নের কেয়েলহাট গ্রামের পূর্বপাড়া মাঠে বছর খানেক আগে জমিতে পানি দেওয়ার উদ্দেশ্যে পুকুর পাড়ে একটি গভীর নলকূপ খোঁড়া হয়। তাতে পানি না পেলে জমির মালিক পরিত্যক্ত রেখে পাইপ বের করে নিয়ে মাটি চাপা দেয় গর্তটি।
নভেম্বরে বৃষ্টিতে মাটি গলে গেলে ওই মুখ আবারও উন্মুক্ত হয়। বুধবার দুপুরে এর পাশ দিয়ে শিশু ও তার মা হেঁটে যাওয়ার সময় অসাবধানতায় শিশুটি গর্তের ভেতর পড়ে যায়। এসময় মায়ের আহাজারিতে স্থানীয়রা উদ্ধারের চেষ্টার ছুটে আসে।
ফায়ার সার্ভিসের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর তিনটি ইউনিট নলকূপের পাশে খনন শুরু করে।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম জানান, প্রায় ৩৫ ফুট পর্যন্ত ক্যামেরা নামিয়েও শিশুটিকে দেখা সম্ভব হয়নি। তবে তার সুস্থতায় নলকূপে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, দেওয়া হচ্ছে অক্সিজেন।
তিনি আরও জানান, শিশুটিকে উদ্ধারে পাশে খনন করা হচ্ছে বিকল্প পথ। রাত ৯টা পর্যন্ত খোঁড়া হয়েছ ২৫ ফুট পর্যন্ত।
তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাঈমা খান জানান, এ ঘটনায় সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। পাশাপাশি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
