চট্টগ্রামের হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের প্রায় ৮০ শতাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত
চট্টগ্রামের প্রধান সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি শিশুদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। আবহাওয়ার আকস্মিক পরিবর্তন ও শীতল মৌসুমের প্রভাবে শিশু ওয়ার্ডগুলোতে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে শিশু বিভাগের শয্যার সংখ্যা ১০০, কিন্তু বর্তমানে প্রতি দিন প্রায় ২০০ শিশু ভর্তি থাকছেন। এর মধ্যে ৭০–৮০ শতাংশ শিশু নিউমোনিয়ার রোগী।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ৪০০ শয্যার বিপরীতে বর্তমানে ৩৫০ শিশু ভর্তি, যাদের প্রায় ৮০ শতাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজেও ১২০ শয্যার স্থানে ১২৯ শিশু ভর্তি, অধিকাংশই শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় ভুগছে।
এর মধ্যে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি তিন থেকে ৯ মাস বয়সী শিশুদের।
চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, শ্বাসকষ্ট বা সর্দি-কাশি দেখা দিলে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শিশুদের নিয়মিত মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং সর্দি-কাশি হলে শিশুর নাক পরিষ্কার রাখতে হবে যেন সহজে শ্বাস নিতে পারে।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. বিজয় তালুকদার বলেন, 'হাসপাতালের প্রায় সব শয্যা নিউমোনিয়ার রোগী দিয়ে ভর্তি। প্রতিদিন বহির্বিভাগে দুই শতাধিক শিশু চিকিৎসা নিতে আসে, যারা একই রোগে ভুগছে।'
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুসলিম উদ্দিন সবুজ জানান, 'সম্প্রতি হঠাৎ ঠান্ডা ও আর্দ্রতার কারণে সংক্রমণ দ্রুত বেড়েছে। শিশুদের শ্বাসকষ্ট ও বুক ওঠানামার সমস্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।'
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রায় ১৮–২৪ শতাংশ নিউমোনিয়ার কারণে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুর পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা, হাত ধোয়ার অভ্যাস এবং প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
