কার্গো ভিলেজের আগুনে ৪৪২ ধরনের ওষুধের কাঁচামাল পুড়ে ক্ষতি ১৬৫ কোটি টাকা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে ৪৫টি ওষুধ কোম্পানির ৪৪২ ধরনের ওষুধের কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে ভ্যাট, ট্যাক্স ও অন্যান্য শুল্ক বাদে মোট ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ১৬৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের (বিএপিআই) তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের। ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের মধ্যে রয়েছে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও খুচরা যন্ত্রাংশ, যা উৎপাদন কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিএপিআই-এর তালিকা অনুযায়ী, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ক্ষতির পরিমাণ সর্বাধিক, প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (১৫.৪৮ কোটি), স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি (১২.৫৯ কোটি), রেনাটা পিএলসি (১২.৬৫ কোটি) এবং এসিএমই ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড (১২ কোটি টাকা)।
বিএপিআই-এর কোষাধ্যক্ষ ও হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সিইও মুহাম্মদ হালিমুজ্জামান বলেন, 'এয়ারপোর্টে কার্গোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা উদ্বেগজনক হলেও আপাতত আমাদের উৎপাদন ও প্রস্তুত কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে না। তবে দ্বিতীয় ধাপে কাঁচামাল আনতে জটিলতা দেখা দিলে তা উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'ওষুধের কাঁচামাল অত্যন্ত সংবেদনশীল উপাদান। সামান্য আর্দ্রতা বা অতিরিক্ত গরমে এগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি, বিমানবন্দরে কাঁচামাল পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হোক। এতে একদিকে ক্ষতির ঝুঁকি কমবে, অন্যদিকে উৎপাদনও নির্বিঘ্ন থাকবে।'
এছাড়া জিস্কা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (৮ কোটি), বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (৭ কোটি), অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড (৭ কোটি) এবং ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস (৪ কোটি টাকা) ক্ষতির কথা জানিয়েছে।
তালিকায় আরও রয়েছে ডেল্টা ফার্মা, অ্যারিস্টোফার্মা, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস, বিকন ফার্মা, নোভাটেক ফার্মা, নুভিস্টা ফার্মা ও এস্কায়েফ ফার্মাসিউটিক্যালস; যাদের ক্ষতির পরিমাণ কয়েক লাখ থেকে কয়েক কোটি টাকার মধ্যে।
উল্লেখ্য, ১৮ অক্টোবর (শনিবার) দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ (আমদানি কমপ্লেক্স) ও এর আশপাশে ভয়াবহ আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ঐদিন রাত পৌনে নয়টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় বলে জানানো হয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে।
