জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীনবরণে র্যাগিংয়ের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা নবীনবরণে সিনিয়রদের র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ক্লাসরুমে অনুষ্ঠিত নবীনবরণে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৫৩তম ব্যাচের প্রায় ১৮-২০ জন সিনিয়র এবং ৫২তম ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী এই ঘটনায় যুক্ত ছিলেন। তারা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের টানা আড়াই ঘণ্টা ক্লাসরুমে আটকে রেখে অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে মানসিক চাপ সৃষ্টি করেন। এসময় দুইজন নারী শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং ছেলেরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
ভুক্তভোগী এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, 'শিক্ষকদের বক্তব্য শেষ হলে ৪-৫ জন সিনিয়র আমাদের ডেকে ব্রেকের পর দেড়টায় ডিপার্টমেন্টে থাকতে বলেন। এসময় আমাদের ব্যাচের সবাইকে, অর্থাৎ ৬৮ জনকে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর দেড়টার দিকে ১৫-২০ জন সিনিয়র রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দেন। সবাই উপস্থিত না থাকায় তারা আমাদের শ্রেণি প্রতিনিধিকে ধমক দেন।'
তিনি বলেন, 'একপর্যায়ে তারা আমাদের গালিগালাজ শুরু করেন। আমাদের ছেলে বন্ধুদের দাঁড় করিয়ে 'নেশাখোর' বলে গালি দেন। চুল কাটার ধরন নিয়েও তিরস্কার করেন। পুরো সময়জুড়ে তারা আমাদের সঙ্গে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে থাকেন। একপর্যায়ে একজন শিক্ষক কক্ষে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'তিনি আমাদের জিজ্ঞেস করেন, আমাদের সঙ্গে কিছু ঘটেছে কি না। তখন আমাদের একজন বান্ধবী কান্নায় ভেঙে পড়েন।'
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী বলেন, 'কক্ষে শিক্ষক প্রবেশ করলে তারা বের হয়ে যান, কিন্তু শিক্ষক চলে যাওয়ার পর পুনরায় ভয় দেখানো শুরু হয়। আমাদের হুমকি দেওয়া হয় যেন এই ঘটনা কারো সঙ্গে শেয়ার না করি।'
এ বিষয়ে ৫৩তম ব্যাচের শ্রেণি প্রতিনিধি তানভীর হোসেন বলেন, 'এরকম কিছুই ঘটেনি। সবকিছু সমাধান হয়েছে। এটাকে বাড়ানোর কিছু নেই, কমানোরও কিছু নেই।'
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সজীব বালা বলেন, 'আমরা এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি, তবে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। আমরা এটি সমাধানের চেষ্টা করছি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
