ডাকসু নির্বাচনে 'স্ট্রাইকিং ফোর্স' হিসেবে মোতায়েন থাকবে সেনাবাহিনী, থাকবে ৭ পয়েন্টে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচনের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত পয়েন্টে 'স্ট্রাইকিং ফোর্স' হিসেবে সেনাবাহিনী উপস্থিত থাকবে। এছাড়া, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভোট গ্রহণের দিন ৮টি ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ উপলক্ষে ডাকসু ও হল পর্যায়ের সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থীদের সঙ্গে চীফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চীফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী (সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট), অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম (উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ), অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা (স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট), অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম (ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগ), অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ), অধ্যাপক ড. তারিক মনজুর (বাংলা বিভাগ), সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর (শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট) এবং হলের রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, ভোটের সাত দিন আগে থেকে হলে কোন বহিরাগত থাকতে পারবে না। এছাড়াও ভোটের দিন বৈধ ভোটার ছাড়া ক্যাম্পাসে কেউ থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, 'এ নিয়ে ডিএমপি কমিশনারসহ উচ্চতর নিরাপত্তা বৈঠক হয়েছে। ডিএমপি আমাদের অধীনে কাজ করার কথা জানিয়েছে।'
এছাড়া, বহিরাগতদের প্রবেশ রোধে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেট্রো স্টেশন বন্ধ থাকবে বলেও জানান তিনি।
জসিম উদ্দিন জানান, যেই কেন্দ্রের ফলাফল, সেই কেন্দ্রেই ঘোষণা করা হবে। ফলে অফিশিয়ালি ঘোষণার আগে শিক্ষার্থীরা সব কেন্দ্রের ভোট যোগ করে একটি আনঅফিশিয়াল তথ্য পেয়ে যাবেন।
এসময় প্রার্থীদের একটি অংশ ডাকসু চলাকালীন পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানান। তবে রিটার্নিং কর্মকতা ড. কাজী মারুফুল ইসলাম এটি নাকচ করে দেন।
তিনি বলেন, 'পরীক্ষা পিছিয়ে কোনো ডাকসু হবে না।'
এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের শহিদদের অবমাননা করে কোনো প্রচারণা চালাতে পারবেন না প্রার্থীরা বলেও জানান তিনি।
তিন স্তরের নিরাপত্তার প্রথম স্তরে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্য ও প্রক্টরিয়াল টিম। দ্বিতীয় স্তরে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকবে। তৃতীয় স্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশমুখে সেনাবাহিনী 'স্ট্রাইকিং ফোর্স' হিসেবে অবস্থান করবে।
প্রয়োজন অনুযায়ী সেনাবাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে এবং ভোট শেষে ফলাফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র সেনা সদস্যরা কর্ডন করে রাখবেন। ভোট গণনার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারও প্রবেশের সুযোগ থাকবে না।
উল্লেখ্য, প্রায় ছয় বছর পর অবশেষে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী, সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৮ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অন্য পদে মোট ৪৬২ জন প্রার্থীকে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। ডাকসুতে ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ ২৮টি পদ রয়েছে।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় মোট ৩৯,৭৭৫ জন নিবন্ধিত ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ২০,৮৭৩ জন ছাত্র এবং ১৮,৯০২ জন ছাত্রী এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার যোগ্য।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।