গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা মামলায় ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষে ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) মো. রবিউল হাসান এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তবে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সময় খোয়া যাওয়া সাংবাদিক তুহিনের দুটি মোবাইল ফোন এখনো উদ্ধার করতে পারেনি।
উপ-কমিশনার রবিউল হাসান বলেন, ঘটনা তদন্তের পর ৮ আসামির বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক তুহিনের ব্যবহৃত মোবাইল দুটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার বাসিন্দা কেটু মিজান ওরফে কোপা মিজান (৩৪), তার স্ত্রী পারুল আক্তার ওরফে গোলাপি (২৮), খুলনার সোনাডাঙ্গা উপজেলার আল-আমীন (২১), কুমিল্লার হোমনা উপজেলার শাহজালাল (৩২), পাবনার চাটমোহর উপজেলার ফয়সাল হাসান (২৩), শেরপুরের নকলা থানার চিতলিয়া গ্রামের সুমন ওরফে সাব্বির (২৬), রফিকুল ইসলাম আরমান ও শামীম হোসেন। এদের মধ্যে মিজান এ মামলার প্রধান আসামি।
পুলিশ জানায়, গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তার মসজিদ মার্কেট এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার তুহিনকে। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। এ ঘটনায় তুহিনের ভাই সেলিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ, তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্ত শেষে মূল অভিযুক্ত কেটু মিজান ও তার স্ত্রী গোলাপীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
উপ-পুলিশ কমিশনার ঘটনার প্রসঙ্গে জানান, পরিকল্পিতভাবে 'হানি ট্র্যাপ' ব্যবহার করে বাদশা মিয়া নামে এক যুবককে টার্গেট করেন আসামি গোলাপী। একপর্যায়ে বাদশা মিয়ার সঙ্গে গোলাপীর বাকবিতণ্ডা হলে গোলাপীর সহযোগীরা চাপাতি, দা ও সুইচ গিয়ার চাকু নিয়ে শাপলা ম্যানশনের সামনে বাদশা মিয়াকে কোপাতে থাকেন। এ সময় গোলাপী চিৎকার করে বলেন, 'তুহিন সাংবাদিক ভিডিও করছে।' সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসীরা বাদশা মিয়াকে ফেলে রেখে তুহিনকে ধাওয়া করে। প্রথমে মিজান দা দিয়ে আঘাত করে, পরে স্বাধীন, সুমন, আরমান, আলামিন ও ফয়সাল এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। একপর্যায়ে তুহিনের মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় মিজান। গোলাপী তখন আবার চিৎকার করে বলে পুলিশ আসছে, এরপর সবাই পালিয়ে যায়।
এদিকে, ব্রিফিং শেষে সাংবাদিক তুহিনের স্ত্রী ফরিদা আক্তার বলেন, চার্জশিট দাখিলে আমরা স্বস্তি পেয়েছি। এ সময় তিনি আসামিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।