ডাকসু নেতার ধাওয়া: দৌড়ে পালালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আ ক ম জামাল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়েরের ধাওয়ায় সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও আওয়ামীপন্থী নীল দলের শিক্ষক আ ক ম জামাল। এ সময় তার সঙ্গে একই বিভাগের আরেক অধ্যাপক জিনাত হুদাও ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে ঘটা এই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ক্যাম্পাসে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সিঁড়িতে অধ্যাপক আ ক ম জামালকে পুলিশে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আটকে রাখার চেষ্টা করছেন ডাকসু নেতা এ বি জুবায়ের। এ সময় শিক্ষক জামাল দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জুবায়ের তার হুডি ধরে টান দেন এবং হুডিটি খুলে যায়। এরপর ওই শিক্ষক দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। জুবায়ের গাড়ির দরজা ধরে আটকানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন এবং অধ্যাপক জামাল গাড়িযোগে দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
ঘটনার বিষয়ে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'উনারা একটা গোপন মিটিংয়ে বসেছিলেন। খবর পেয়ে আমরা তাদের ধরে পুলিশে দেওয়ার চেষ্টা করি। প্রক্টর স্যারকে কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনসহ প্রশাসনকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।'
ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জুবায়ের লিখেন, 'স্বঘোষিত রাজাকারের বাচ্চাগুলোরে ধইরা ধইরা ব্রাশফায়ার দিতে হবে বলা আওয়ামী লীগের কুলাঙ্গার শিক্ষক আ ক ম জামাল ও জিনাত হুদাসহ ৫ জন ফ্যাসিস্টের দোসর শিক্ষক আজ ক্যাম্পাসে গোপন মিটিংয়ে যুক্ত হয়েছিল। খবর পেয়ে আমরা তাদের পাকড়াও করি, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তারা পালিয়ে যায়।'
অন্যদিকে গোপন মিটিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যাপক জিনাত হুদা। তিনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপ্রেক্ষিতে একটা স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য আমরা উপাচার্য স্যারের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। স্যার ব্যস্ত থাকায় আমরা টিচার্স লাউঞ্জে চা খেতে যাই। সেখান থেকে বের হওয়ার সময় তারা আমাদের ওপর আক্রমণ করে।'
এ বিষয়ে অধ্যাপক আ ক ম জামালের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
উল্লেখ্য, গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের 'জামায়াত-শিবির' আখ্যা দেওয়া এবং মামলার হুমকিধমকি দেওয়ার অভিযোগে আ ক ম জামাল ও জিনাত হুদাকে ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বয়কট করেছিলেন নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
