’৭১-এর জন্য ক্ষমা চাওয়া বা দুঃখ প্রকাশের বিষয়টি উত্থাপন করেছি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ১৯৭১ সালের জন্য ক্ষমা চাওয়া, সম্পদের ন্যায্য বণ্টন এবং আটকে পড়া পাকিস্তানি নাগরিকদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উত্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ঐতিহাসিক অমীমাংসিত বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে দুই দেশ একমত হয়েছে।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকের আলোচনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, 'এটা আশা করা ঠিক হবে না যে ৫৪ বছরের সমস্যা একদিনে সমাধান হয়ে যাবে।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা (বৈঠকে) পরস্পরের অবস্থানটা তুলে ধরেছি। আমি আপনাদের এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি, আমরা তিনটি বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছি। দুই পক্ষই বলেছি, এ বিষয়গুলোকে আমাদের সমাধান করতে হবে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যাতে মসৃণভাবে এগোতে পারে, সেজন্য বিষয়গুলোকে পেছনে ফেলতে হবে। দুই পক্ষ একমত হয়েছে যে আমরা এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলব। চেষ্টা করব যে বিষয়গুলোতে যাতে কোনো এক পর্যায়ে কথা বলব আমরা আলাদা করে, যাতে এ বিষয়গুলোকে পেছনে ফেলতে পারি।'
তিন অমীমাংসিত ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান কী—সে প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা চাই, হিসাবপত্র হোক, যেটা টাকা-পয়সার ব্যাপার সমাধান হোক। আমরা চাই, এখানে যে গণহত্যা হয়েছে, সেটার ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করুক, মাফ চাইবে। আমরা চাই, আটকে পড়া মানুষগুলোকে তারা ফেরত নেবে। আমি বাংলাদেশের অবস্থান শক্তভাবে তুলে ধরেছি।'
বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি, চারটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি স্বাক্ষরিত হয়।
স্বাক্ষরিত চুক্তি ও স্মারকের মধ্যে রয়েছে—সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, বাণিজ্যবিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা, রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা (বাসস ও এপিপিসি) এবং দুই দেশের কৌশলগত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইআইএসএস ও আইএসএসআই) মধ্যে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো।