পুলিশের দিকে অস্ত্র তাক করলে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানোর নির্দেশ সিএমপি কমিশনারের

কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে অস্ত্র তাক করলে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। তিনি এই পদক্ষেপকে আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে সিএমপি ওয়্যারলেস বার্তার মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছে, মোবাইল ও পেট্রোল ইউনিট থেকে শুরু করে ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চের (ডিবি) সব টিমকে আগ্নেয়াস্ত্র ও লাইভ গুলি সঙ্গে রাখতে হবে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে অনুমোদিত নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কোনো মোবাইল, পেট্রোল, ডিবি বা চেকপয়েন্ট টিমকে অস্ত্র ছাড়া মোতায়েন করা যাবে না।
কয়েকজন সিএমপি কর্মকর্তা কমিশনারের এই নির্দেশনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কমিশনার হাসিব আজিজ বলেছেন, 'রাবার বুলেট দিয়ে হবে না।' তিনি সোমবার রাতে ঈশান মিস্ত্রি হাট এলাকায় এক অভিযানের সময় বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ রানা ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, 'যদি কেউ অস্ত্র বের করে, সেটা হোক গান বা ধারালো ছুরি, তাকে গুলি করা হবে। এটি নিশ্চিত। দণ্ডবিধির ধারা ৯৬ থেকে ১০৬ অনুযায়ী আত্মরক্ষার অধিকার অনুযায়ী হামলা শুরু হওয়ার আগেই প্রয়োজনে মাথা, বুকে বা পিঠে গুলি করা যায়। সরকারের দেওয়া গোলা-বারুদ সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার করতে হবে।'
তিনি আরও নির্দেশ দিয়েছেন, কোনো পুলিশ পেট্রোল আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে কোনো দ্বিধা দেখাবে না।
তিনি আরও বলেন, 'আমার এসআই যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন, তাতে কারও অন্তত একটি বডি না রেখে ফিরে আসার আশা করা উচিত নয়।'
এসআই রানা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তার সঙ্গে থাকা দুই কনস্টেবল শটগান সঙ্গে থাকলেও ব্যবহার করেননি। এটি প্রমাণ করে, পূর্বের হত্যার ঘটনার পর আইনি যাচাই-বাছাইয়ের কারণে গুলি চালাতে অফিসারদের মধ্যে ব্যাপক অনীহা দেখা যাচ্ছে।
কমিশনার হাসিব আজিজ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, '৫ আগস্টের পর পুলিশি অভিযানে অনেক পরিবর্তন এসেছে। মানবাধিকার সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে কিছু অফিসার ভাবতে শুরু করেছিলেন, তারা হামলার মুখে পরলেও অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে না।'
সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'আমার অফিসারের অঙ্গহানিও করতে পারত তারা। আল্লাহ তাঁকে বাঁচালেন। আমি মনে করিয়ে দিয়েছি, বিদ্যমান আইন আত্মরক্ষার অধিকার দেয়। আমার বাহিনী নিজেদের ও সরকারি সম্পদ রক্ষার জন্য ধারা ৯৬ থেকে ১০৬ অনুযায়ী যা প্রয়োজন করবে, তাই করবে। কেউ বসে থেকে হামলার শিকার হবে না।'