পরিবেশবান্ধব না হলে জাহাজভাঙা ব্যবসা ছাড়তে হবে: নৌ উপদেষ্টা

নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশের জাহাজ ভাঙা শিল্পকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই শিল্পকে অবশ্যই হংকং কনভেনশন মেনে চলতে হবে এবং পুরোপুরি গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তরিত হতে হবে, অন্যথায় তাদের ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।
আজ (২৬ জুলাই) সকালে সীতাকুণ্ডের কবির শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, 'হংকং কনভেনশন অনুযায়ী ২৬ জুনের মধ্যে সব জাহাজভাঙা কারখানাগুলোকে গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ১৪টি গ্রিন ইয়ার্ড সনদ পেয়েছে। আগামী নভেম্বরে আইএমও'র সভায় আমরা ছয় মাস সময় চাওয়ার পরিকল্পনা করছি, তবে তারপরও যারা মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের বন্ধ করে দিতে হবে।'
বিশ্বে শিপ রিসাইক্লিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে হলেও পরিবেশবান্ধব গ্রিন ইয়ার্ড গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, 'এখানে বিশ্বমানের একটি শিল্প গড়ে তোলার অপার সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু পূর্ববর্তী সরকারগুলো বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। যার ফলে এই খাত পিছিয়ে পড়েছে।'
সীতাকুণ্ড এলাকায় শতাধিক শিপ রিসাইক্লিং কারখানা গড়ে ওঠায় সেখানে ভয়াবহ জট তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, 'সীতাকুণ্ডের মতো ছোট একটি জায়গায় ১১৩টি জাহাজভাঙা কারখানা হলে তা বিপদের। এসব জাহাজভাঙা কারখানা কোনো জায়গায় স্থানান্তর করা যায় কি না, দেখতে হবে। ছোট ও মাঝারি সাইজের জাহাজ এসব কারখানায় আনা গেলেও বড় জাহাজ এখানে আনা যাবে না।'
শিল্পটির উন্নয়নে অর্থায়নের পথ খোঁজা হচ্ছে জানিয়ে সাখাওয়াত বলেন, 'এই খাতে টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য।'
তিনি বলেন, 'নৌপরিবহন, জাহাজ নির্মাণ ও রিসাইক্লিং—এই তিনটি খাত বন্দর উন্নয়নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এসব খাতকে শক্তিশালী করলে আমাদের বন্দরও সমৃদ্ধ হবে।'
পরিদর্শনের সময় কবির শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটির সিইও মেহেরুল করিম ও কাবির গ্রুপের ডিএমডি মোহাম্মদ করিম উপদেষ্টাকে খাতটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
এসময় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর কাওসার রশীদ, সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক এবং বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) ভারপ্রাপ্ত সচিব নাজমুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।