পদচ্যুত কুয়েট উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন

ছাত্র আন্দোলনের মুখে অপসারিত খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের আলমের মেয়াদকালে হওয়া দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
সোমবার (১৪ জুলাই) ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. মহিবুল আহসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এতে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাইফুদ্দিন রহমানকে আহ্বায়ক, সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলামকে সদস্য ও প্রশাসন বিভাগের উপ সচিব নূরনাহার বেগম শিউলীকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
তাদেরকে আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, তদন্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তারা প্রয়োজনে কুয়েটরে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে এবং সংশ্লিষ্টকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২৪ সালের দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর কুয়েটের অষ্টম উপাচার্য হিসেবে গত ৫ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ। তবে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের থেকে কুয়েট ভিসি মুহাম্মদ মাছুদ ও প্রো ভিসি শেখ শরীফুল আলম অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ তার মেয়াদকালে অসংখ্য দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দায়িত্ব পাওয়ার পরে তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে। শুরু হয় নিয়োগের ভাগাভাগি। তিনি মেয়াদকালে ৫৪ জনকে অস্থায়ী নিয়োগ ও ৪ জনকে মাস্টাররোল থেকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
তবে ২০১৮ সালে সরকারি দপ্তরে অস্থায়ী ও মাস্টাররোল কর্মচারীদের নিয়োগ না দেওয়ার নির্দেশনা থাকায় গত ১৭ মার্চ ইউজিসি একটি চিঠি দিয়ে জানায়, এই অস্থায়ী নিয়োগের বেতন দেওয়ার জন্য কুয়েটের চাহিদা মোতাবেক ৫২ লক্ষ টাকা দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে ইউজিসি বেতন আটকে দিলেও, কুয়েটের বিভিন্ন প্রজেক্ট থেকে বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে তাদের বেতন চলমান রাখা হয়েছিল। এর বাইরেও শিক্ষক সমিতির নেতাদের সাথে নিয়ে তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির সাথে সংঘর্ষ ঘটে শিক্ষার্থীদের। এতে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের মূখে ভিসি মুহাম্মদ মাছুদ ও প্রো ভিসি শেখ শরীফুল আলম অপসারণ করা হয়।