মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছে: মির্জা ফখরুল

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে বিএনপি বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (১৪ জুলাই) সাড়ে ১১টায় রাজধানীর গুলশানস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, দেশের সুষ্ঠু ধারা রাজনীতি প্রতিষ্ঠার গণ-আকাঙ্খার বিপরীতে পরিকল্পিত অপপ্রচার, অশ্লীল স্লোগানের মাধ্যমে আবারও পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ৯ জুলাইয়ের ঘটনা ১১জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়।
তিনি বলেন, আগে থেকে তৈরি করে রাখা ফটোর্কাড পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট কিছু সোশ্যাল মিডিয়ার আইডি ও পেজ থেকে ছাড়ানো হয়। অনলাইনে ভুয়া তথ্য প্রচারে ক্যাম্পেন শুরু হওয়ার আগেই অপপ্রচার সামগ্রী তৈরি করে রাখা হয়েছিল।
ঘটনা বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, 'একটি বিবেকবান রাজনৈতিক দল হিসেবে মিটফোর্ড এলাকায় সংঘটিত জনাব লালচাঁদ সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা বা উপস্থিতির প্রমাণ না থাকা স্বত্বেও ঘটনার সাথে জড়িত বলে যাদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলার আলোকে আজীবন বহিষ্কারের মতো সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে মামলার এজহারের অসংগতি প্রসঙ্গে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। তাদের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে তাদের উল্লিখিত তিনজন অপরাধীদের নামের স্থলে এমন তিনজনের নাম সংযুক্ত করা হয় যাদের বিরুদ্ধে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। দুঃখজনক হলেও সত্যি, নৃশংসতার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার দূরে থাক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এখনও তাদের নাম-পরিচয় পর্যন্ত উদঘাটনে সক্ষম হয়নি।'
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার হচ্ছে কিনা এবং এর মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'প্রকাশ্য দিবালোকে অসংখ্য মানুষের সামনে, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নিকটবর্তী অবস্থান থাকা সত্ত্বেও এই রূপ ঘটনার কোনো প্রতিরোধ না হওয়ায় পুরো ঘটনাটি সম্পর্কে জনমনে প্রশ্ন উঠছে। জনসম্মুখে এই রূপ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ ছাড়া বিনা বাঁধায় ভিডিও ধারণ যুক্তিসঙ্গতভাবেই অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়।'
তিনি হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত কার্যকর করার বিষয়ে দলীয় অবস্থান সুদৃঢ় এবং অপরিবর্তিত বলে জানান। তিনি আরও জানান, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি 'তদন্ত ও তথ্যানুসন্ধানী কমিটি' গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন প্রমুখ।