অপরিশোধিত আমদানি এলসির বিপরীতে ফোর্সড লোন তৈরি করতে বললেন গভর্নর

পণ্য আমদানির পর গ্রাহক যদি এলসির (লেটার অফ ক্রেডিট) পেমেন্ট না করে, সেসব গ্রাহকদের বিপরীতে বাধ্যতামূলকভাবে ফোর্সড লোন তৈরি করতে দেশের ব্যাংকগুলোকে কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। সভায় রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে গভর্নর বলেন, "কোনো গ্রাহক নির্ধারিত সময়ে আমদানির বিল পরিশোধ না করলে নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের উচিত ফোর্সড লোন তৈরি করা। কিন্তু অনেক ব্যাংক তা করছে না।"
তিনি এ ধরনের অনিয়ম ভবিষ্যতে যেন না ঘটে, সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে কঠোরভাবে সতর্ক করেন।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, "সভায় বলা হয়েছে, অনেক ব্যাংক তাদের 'নেট ওপেন পজিশন' ভালো দেখানোর জন্য বা 'সিঙ্গেল বোরোয়ার এক্সপোজার লিমিট' ঠিক রাখার জন্য গ্রাহকের পেমেন্ট না পেলেও ফোর্সড লোন তৈরি করে না। গভর্নর মহোদয় বিষয়টি কঠোরভাবে করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।"
সভায় অংশ নেওয়া একাধিক ব্যাংকের এমডি জানিয়েছেন, ট্রেজারি বিল কেনায় গ্রাহকদের উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে সরকারের ঋণ নেওয়া কমিয়ে আনতে চান।
গভর্নর আরও নির্দেশনা দেন, যেসব ব্যাংকের বিদেশে এক্সচেঞ্জ হাউজ রয়েছে, তারা যেন মার্কেট রেটের চেয়ে বেশি দামে ফরেন কারেন্সি না কেনে।
পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী বলেন, "গভর্নর মহোদয় ক্যাশলেস সোসাইটি গঠনে গুরুত্ব দিয়েছেন। ব্যাংকগুলোর মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারী বাড়ানো ও ডিজিটাল লেনদেন বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব বলে ওনাকে জানিয়েছি।"
একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, "যেসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে, সেগুলোর দাম ঠিকভাবে নির্ধারিত হচ্ছে কি না, তা নজরে রাখতে বলা হয়েছে। আমদানিকৃত পণ্যের দামের যাচাই সহজ হলেও রপ্তানিপণ্যের ক্ষেত্রে তা তুলনামূলক জটিল। কারণ, অধিকাংশ রপ্তানি চুক্তিনির্ভর হওয়ায় একই পণ্যের দাম ভিন্ন হতে পারে। তবে প্রাইস হিস্ট্রি বিশ্লেষণ করে আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানার চেষ্টা করব।"