ইশরাককে মেয়র নিয়োগে এখনো আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পায়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত এখনও পায়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। মতামত কখন জানানো হবে, সেটিও স্পষ্ট করে বলতে পারছে না আইন মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আপিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯–এর ধারা ৬ অনুযায়ী পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণে কোনো আইনি জটিলতা আছে কি না, তা চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মাহবুবা আইরিনের সই করা 'মতামত প্রদান সংক্রান্ত' শিরোনামের চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে ইসিকে বিবাদী করে মামলা হলেও তাতে কমিশন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। মামলায় একতরফা রায় হয়েছে। আবার মামলার আরজি সংশোধনীর বিষয়ে হাইকোর্টের রায় আমলে না নিয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে রায় হয়। এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন হয়েছে। অথচ বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরাজিত মেয়রপ্রার্থীর একই ধরনের আবেদন নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে খারিজ হয়েছে। আবার সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে প্রার্থীদের মেয়াদকাল–সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে আইনি বাধা রয়েছে কি না, সে বিষয়েও মতামত চেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
আজ বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহেরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি টিবিএসকে বলেন, 'স্থানীয় সরকার বিভাগের চিঠির জবাব এখনো আসেনি।'
এর আগে আইন ও বিচার বিভাগের আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে এ নিয়ে আলাপ হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, 'বিষয়টি অনেক দিক থেকেই জটিল। ইশরাককে এখন মেয়র নিয়োগ করা হলে তার মেয়াদ কতদিন হবে? তার নিয়োগ পাওয়ার সময় আছে কি না এবং নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশের পর আইন মন্ত্রণালয়ের আর মতামত দেওয়ার সুযোগ আছে কি না, সেটিও এখন পর্যালোচনা করতে হচ্ছে।'
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে তৎকালীন আওয়ামী লীগপ্রার্থী ফজলে নূর তাপস ৪ লাখ ২৪ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। বিপরীতে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক পেয়েছিলেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ভোট। ওই নির্বাচনে অনিয়ম কারচুপির অভিযোগও ছিল বিস্তর।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ওই নির্বাচনের ফল বাতিল করে ইশরাককে বিজয়ী ঘোষণা করে রায় দেন। একইসঙ্গে শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র হিসেবে অবৈধ ঘোষণা করে সরকারের গেজেট বাতিল করেন আদালত।