সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করতে না পারলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে: আলী রীয়াজ
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির সুপারিশ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ হিসেবে কার্যকর থাকবে। সনদ বাস্তবায়নে সংসদকে দুটি উপায় সুপারিশ করেছে জাতীয় ঐক্যমত কমিশন। ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে অথবা বিল আকারে গণভোট হলে সেটি ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার পরিষদ বাস্তবায়ন করতে না পারলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাশ হয়ে যাবে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। আজ জুলাই সনদের বাস্তবায়নের উপায়-সংক্রান্ত সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তান্তর করে কমিশন।
আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধানসংশ্লিষ্ট ৪৮টি বিষয়ে আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের পথনির্দেশ করার জন্য কমিশন সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছে। এজন্য সরকারের কাছে দুটো বিকল্প হাতে আছে।
তিনি বলেন, 'আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি, যেন অবিলম্বে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করে। সেই আদেশের আলোকে গণভোট আয়োজন করে।'
টিবিএস-এর পাঠকদের জন্য জুলাই সনদের খসড়া কপি এই লিংকে সংযুক্ত করা হলো
গণভোটের প্রশ্নের বিষয়ে তিনি বলেন, জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত ৪৮টি অনুচ্ছেদে সংশোধনীর বিষয়ে জনগণের সম্মতি আছে কি না তা নিয়ে গণভোট হবে।
আলী রীয়াজ আরও বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদ 'সংবিধান সংস্কার পরিষদ' ও জাতীয় সংসদ হিসেবে কার্যকর থাকবে। সংবিধান সংস্কার পরিষদের মেয়াদ হবে ২৭০ দিন। সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার, সংযোজন-বিয়োজন শেষে সেটি পাশ করতে হবে। এরপর উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
উচ্চকক্ষ গঠন পদ্ধতির বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের সংখ্যানুপাতিক ভোটে উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেই মোতাবেক জনগণের সমর্থন পাওয়া গেলে নির্বাচনের ৪৫ দিনের মধ্যে উচ্চকক্ষ গঠন বাস্তবায়ন করতে হবে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, 'আমাদের দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাব হচ্ছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা হবে, সেই আলোকে গণভোট হবে। তবে ওই আদেশে ৪৮টি সংবিধানসংশ্লিষ্ট বিষয় একসাথে বিল আকারে গণভোটে উত্থাপিত হবে। '
তিনি আরও বলেন, 'যদি বিল আকারে গণভোট পাশ হয় তাহলে সংবিধান সংস্কার পরিষদ এই বিলটি ২৭০ দিনের মধ্যে দায়িত্ব সম্পাদন করতে না পারে তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানসংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদগুলো সংবিধানে প্রতিস্থাপিত হবে।'
আলী রীয়াজ বলেন, 'আমরা আশা করি আগামী সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যেই তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে, স্বংক্রিয়ভাবে সেটিকে পাশ করতে হবে না। '
তিনি আরও বলেন, 'সংসদ সদস্যরা সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে আলাদা দুটি শপথ গ্রহণ করবেন এবং স্পিকার সভাপতিত্ব করবেন।'
