তারেক রহমান দেশে ফিরে নেতৃত্ব দেবেন, সেই দিন আর দূরে নয়: ডা. জাহিদ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরে সরাসরি দলের নেতৃত্ব দেবেন—সেই দিন আর বেশি দূরে নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (৬ মে) রাজধানীর গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. জাহিদ বলেন, 'ডা. জোবাইদা রহমান ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন। ব্যারিস্টার জাইমা রহমান যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। ইনশাল্লাহ, সেই দিন আর দূরে নয়, যেদিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই দেশে এসে নেতৃত্ব দেবেন।'
তিনি আরও বলেন, 'তারেক রহমান যে নেতৃত্ব বিদেশে বসে দিচ্ছেন, তা শুধু বিএনপির জন্য নয়, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য। তিনি শিগগিরই নিজে দেশে এসে নেতৃত্ব দেবেন।'
জোবাইদা রহমানের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. জাহিদ বলেন, 'তিনি অবশেষে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরেছেন। এতদিন তাকে দেশে আসতে দেওয়া হয়নি। তিনি কতদিন থাকবেন, তা সময়ই বলে দেবে।'
'তিনি কয়েক দিনের মধ্যে আবার লন্ডনে চলে যেতে পারেন। তবে খুব শিগগিরই স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে আসবেন তারেক রহমানের সঙ্গে। তখনই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের শেষ পর্যায়ের নেতৃত্ব দেবেন তারা,' বলেন তিনি।
ডা. জাহিদ জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সুস্থভাবে দেশে ফিরতে পেরে দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়াকে ১৭ ঘণ্টার দীর্ঘ ভ্রমণ করতে হয়েছে। তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা ক্লান্ত, তবে মানসিকভাবে ভালো আছেন। এখনও তিনি আগের মতো দেশের মানুষের পাশে থাকতে চান।'
'চার মাস আগে তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন। এই সময়ে বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং দেশের সাধারণ মানুষ নানা ভূমিকায় ছিলেন। এজন্য তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন,' বলেন তিনি।
বিএনপির পক্ষ থেকে কাতারের আমির ও কাতার সরকারকে বিশেষ রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করায় কৃতজ্ঞতা জানান ডা. জাহিদ।
তিনি বলেন, 'পুরোপুরি রাজকীয় চিকিৎসা সুবিধা-সংবলিত ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে।'
আজ সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার দুই পুত্রবধূ—তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমানকে নিয়ে দেশে ফিরেছেন।
খালেদা জিয়া সামনের সিটে এবং তার দুই পুত্রবধূ পেছনের সিটে বসা একটি গাড়ি সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে বিমানবন্দর ছেড়ে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানে তার বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছায়। এ সময় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল।
তার আগমনে উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মী ও স্বজনদের উল্লাসের মধ্যেই খালেদা জিয়া বাসায় প্রবেশ করেন।
পূর্বের বিভিন্ন জনসম্মুখে খালেদাকে প্রায়ই হুইলচেয়ারে দেখা গেলেও, আজ গাড়ি থেকে বাসায় সহযোগীদের সহায়তায় হেঁটে প্রবেশ করেন তিনি।
খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই লিভার সিরোসিস, বাত, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যা এবং কোভিড-পরবর্তী জটিলতায় ভুগছেন।
চিকিৎসার জন্য তিনি গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমির দেওয়া একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে যান।
সেখানে পৌঁছে তিনি ১৭ দিন লন্ডনের একটি বেসরকারি হাসপাতাল দ্য লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের অধীনে চিকিৎসা নেন।
এরপর ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
তারেক রহমান, ডা. জুবাইদা রহমান এবং তাদের মেয়ে জাইমা রহমান ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে বসবাস করছেন। জুবাইদার এটি ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন।