খুলনায় বাটা-কেএফসিতে লুটপাট, ভাঙচুর: মামলা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা

ইসরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ থেকে খুলনায় বাটা, কেএফসি ও ডোমিনোজ পিৎজাতে লুটপাট এবং ভাংচুরের ঘটনায় এখনো কোনও মামলা দায়ের হয়নি। যদিও এ ঘটনায় গ্রেফতার ৩১ জনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় এরমধ্যেই আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।
আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'ভাংচুর হওয়া তিনটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজাররা থানায় এসেছিলেন। তবে তারা প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি না পাওয়ায়— কোনও এজাহার দায়ের করেননি। তাই গ্রেফতারদের ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।'
এই প্রসঙ্গে খুলনার শিববাড়ি মোড়ের বাটার শো-রুমের ম্যানেজার এমডি তহিদুল ইসলাম বলেন, 'সন্ধ্যার পরপরই আমাদের সিদ্ধান্ত আসবে। তারপর আমরা মামলার ব্যাপারে জানাতে পারব।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মামলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
একই ভাবে প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন কেএফসির ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সুজন মণ্ডল ও ডোমিনোজ পিৎজার ম্যানেজার ম্যানেজার মো. আলামিনও।

বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানার সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে খুলনার শিববাড়ি মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন শুরু হয়। পরে সেখান থেকে একটি দল নগরীর ময়লাপোতার দিকে রওনা হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তারা কেএফসি ও ডোমিনোজ পিৎজাতে হামলা করেন। প্রায় একই সময়ে শিববাড়ি মোড়ের বাটার শো-রুমেও লুটপাট হয়।
ক্ষতিগ্রস্থ এই প্রতিষ্ঠানগুলি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সাউথ জোনের মধ্যে পড়েছে। সাউথ জোনের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) মো. আবু তারেক বলেন, 'পুলিশ এখানে ব্যর্থ হয়েছে, হামলা ঠেকাতে পারিনি। হামলাকারীরা একপর্যায়ে হঠাৎ করেই হামলা চালিয়েছে। তখন সেখানে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল না যে তাদের বাধা দিয়ে ছত্রভঙ্গ করবে।'
এর আগে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও পাড়া-মহল্লা থেকে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে এসে জমায়েত হয়। এতে হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, গাজায় নিরীহ শিশু, নারী এবং সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংসতা চালানো হচ্ছে। বর্বর এই হামলায় পাখির মতো মরছে মানুষ। কিন্তু জাতিসংঘসহ বিশ্ব মোড়লরা এনিয়ে কোনো প্রতিবাদ করছে না। আমরা এই মানবাধিকার লংঘনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইসরায়েলের বর্বর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে এখনই সময় বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে এক হয়ে ফিলিস্তিন স্বাধীন করার। অন্যথায় ভূলুন্ঠিত হবে বিশ্ব মানবতা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা, 'নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার, ফিলিস্তিনে হামলা কেন, জাতিসংঘ বিচার চাই, ইসরায়েলি পণ্য বয়কট চাই, বয়কট চাই, জেগেছেরে জেগেছে, মুসলিম বিশ্ব জেগেছে, ইজরায়েলের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও' ইত্যাদি স্লোগান দেন।