বৈষম্যের অভিযোগে ভোলায় এনসিপির ইফতার মাহফিলে হট্টগোল

বৈষম্যের অভিযোগে ভোলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে হট্টগোল করেছেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহতরা।
শনিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় ভোলা জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শহীদ ও আহতদের সম্মান জানাতে এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণে ইফতার মহফিলের আয়োজন করে এনসিপি। তবে অনুষ্ঠানে আহতদের জন্য পর্যাপ্ত আসনের ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে আয়োজকদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে স্থানীয় এক এনসিপি প্রতিনিধি এক আহতের সঙ্গে অসদাচরণ করলে বিক্ষুব্ধরা তাকে ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে ওই প্রতিনিধি পালিয়ে যান। এ সময় বিক্ষোভকারীদেরকে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে শোনা যায়।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার আহত মো. শাহাবুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, "দুই দিন আগে আমাকেও দাওয়াত দেওয়া হয়। কিন্তু আজ এখানে আসলে, আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার প্রমাণপত্র দেখালেও কেউ শোনেনি।"
আহত মো. মাসুম বলেন, "আহতদের সম্মানে ইফতার আয়োজনের কথা বলা হলেও এখানে এসে আমরা অপমানের শিকার হয়েছি। বসার ব্যবস্থাও ছিল না। এনসিপি আমাদের দল, তবুও আমরা বারবার উপেক্ষিত হচ্ছি।"
লালমোহনের আহত মো. স্বপন বলেন, "গত ১৮ জুলাই মোহাম্মদপুরে ছররা গুলিতে আমার চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। আন্দোলনে আমরা সবাই ছিলাম, কেউ একা ছিল না। অথচ আজ এখানে এনে আমাদের অপমান করা হলো। আমরা শুধু ন্যায্য সম্মান চাই।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ বলেন, "আন্দোলনের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও আহতদের খবর কেউ নেয়নি। কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে দাওয়াত দিয়ে আজ আমাদের মাঠে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বসার ব্যবস্থাও ছিল না। এটা কীভাবে হয়? আমি জবাব চাই—আহতদের অবমূল্যায়ন করে কারা জুলাই আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব করছে?"
এ বিষয়ে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, "শহীদ ও আহতদের মাঝে ক্ষোভ থাকতে পারে। আমাদের তালিকা অনুযায়ী আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং ঈদ সামগ্রী বিতরণের প্রস্তুতিও ছিল। তবে সামগ্রিক যে পরিস্থিতি তাদের ক্ষুব্ধ করেছে, তা বোঝার জন্য সময় প্রয়োজন। আমি মনে করি, এ অবস্থার উত্তরণে কাউন্সেলিং দরকার। অভ্যুত্থানের পর পুরো জাতি এক ধরনের ট্রমার মধ্যে আছে, এটাও সত্য।"