সাভারে কারখানা বন্ধের ঘোষণায় সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর ঋষিপাড়া এলাকায় বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় 'নো ওয়ার্ক, নো পে' নীতির আওতায় একটি তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলে, শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকাল ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে হেমায়েতপুর-সিংগাইর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জিন্স ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের শ্রমিকরা। প্রায় ২ ঘণ্টা পর, সকাল সাড়ে ৯টায় সেনাবাহিনীর অনুরোধে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে সড়কের পাশে অবস্থান নেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান করছেন।
শ্রমিকরা জানান, মালিকপক্ষ ঈদের জন্য ৮ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে, এর মধ্যে সরকারি ছুটি ছাড়া বাকি দিনগুলো অর্জিত এবং জেনারেল ডিউটির মাধ্যমে সমন্বয় করার কথা। এরমধ্যে মালিকপক্ষ অতিরিক্ত একদিন ছুটি দিয়েছে।
কিন্তু শ্রমিকদের দাবি, ৮ দিনের পরিবর্তে ১০ দিনের ছুটি এবং মার্চ মাসের ২০ দিনের বেতন ও ওভারটাইম পরিশোধ করা হোক।
শ্রমিকদের অভিযোগ, গতকাল কর্মবিরতির সময় মালিকপক্ষ কিছু বহিরাগতকে কারখানায় ঢোকালে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরপর হট্টগোলের মধ্যে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক সুইং অপারেটর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড'কে বলেন, "ঝামেলা শুরু হয়েছে গতকাল, যখন মালিকপক্ষ ৫-৬ জন বহিরাগতকে কারখানায় ঢোকায়। এরপর একজন কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়, তিনি এখন হাসপাতালে আছেন। আজ সকালে কারখানায় এসে দেখি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, এবং শুনেছি কিছু শ্রমিককে পুলিশ আটক করেছে।"
যদিও পুলিশ বলছে মামলা ও শ্রমিক গ্রেপ্তার সংক্রান্ত শ্রমিকদের দবিটি সঠিক নয়।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিয়া বলেন, "শ্রমিকরা কিছু দাবি নিয়ে সড়ক অবরোধ করেছিল, তবে পরে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। কারখানায় ভাঙচুর বা সহিংসতা ঘটেনি এবং কোনো শ্রমিক গ্রেপ্তার হয়নি। কয়েকজন শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাদের প্রকৃত দাবি কী এবং পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা হচ্ছে কিনা, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে।"
এ বিষয়ে কারখানার ব্যবস্থাপক (এইচআর) স্বপনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে কারখানার বন্ধের নোটিশে বলা হয়েছে, 'ফ্যাক্টরিতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিকের দাঙ্গা, হাঙ্গামা, ভাঙচুর, সহিংসতা ও মারামারি সৃষ্টি করার কারণে কোম্পানির সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে ২৫ মার্চ, ২০২৫ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলো।'
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, 'পরবর্তীতে পরিবেশ অনুকূল হলে, কারখানা খোলার তারিখ নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।'