জিসিসির নাগরিক সেবা বাড়াতে সকলের সহযোগিতা চাই: প্রশাসক

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, 'আমি যত দিন দায়িত্বে থাকছি, তত দিন দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করতে চাই। নাগরিকদের ভালো ও উন্নত সেবা দিতে চাই। করপোরেশনকে নাগরিক বান্ধব প্রতিস্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য সকলের সহযোগিতা চাই।'
তিনি আরও বলেন, '৫ আগস্টের পর আমরা একটি বিশেষ পরিস্থিতিরি মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নেই। আমরা সরকারি চাকরি করি, পদাধিকার বলে আমি এখন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পালন করছি। আমি খোলামেলাভাবে নাগরিক সমস্যা জানতে চাই। যাতে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করতে পারি, নাগরিকদের সেবা বাড়াতে পারি। ইঁদুর-বিড়াল খেলতে চাই না।'
তিনি সোমবার (১৭ মার্চ) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গীর অঞ্চল-১ এর মিলনায়তনে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
জিসিসির প্রশাসক বলেন, 'দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখলাম, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ঠিকাদাররা কাজ ছেড়ে চলে গেছে। আমি তাদের ডেকে এনে সভা করেছি। তাদের বলেছি, আপনারা কাজ করেন, আমি টাকার ব্যবস্থা করব। তখন তারা কাজ শুরু করেন। ফলে এখন উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। ১০০ বিঘা জমির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই জমিতে ময়লা ফেলার জন্য ডাস্টবিন করা হবে।'
মশার ওষুধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, বিনোদন পার্ক, খেলার মাঠ নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পরিকল্পনার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ৮০ কোটি টাকার ছোট ছোট রাস্তা নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'মানুষ যত বেশি তথ্য জানবে, তত বেশি উপকার হবে। তিনি অবাধ তথ্য প্রদানে নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে উল্লেখ করে বলেন, প্রতিটি প্রকল্পে সাইনবোর্ড থাকবে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ। এতে জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।'
শরফ উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, 'গাজীপুর দেশের একটি বৃহৎ সিটি করপোরেশন। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে একজন পূর্ণকালীন প্রশাসক দরকার। জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়ে আসার পূর্ব পর্যন্ত পূর্ণকালীন প্রশাসক বিশেষ প্রয়োজন। এ নগরীতে পরিবেশ-জনস্বাস্থ্য রক্ষা, জলাবদ্ধতা নিরসন, মশকনিধন, ফুটপাত ও সিটি করপোরেশনের দখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তি উদ্ধারের বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করা হবে।'
জিসিসির প্রশাসক বলেন, 'জয়দেবপুর রেলক্রসিং এলাকায় একটি ফ্লাইওভার দ্রুত নির্মাণে জাইকা কাজ করছে। এলাকার জনগণের সঙ্গে সমন্বয় করে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। জিসিসির উন্নয়ন কার্যক্রমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। স্থানীয় জনসাধারণ এবং সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে উন্নয়ন কার্যক্রমের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
তিনি বলেন, 'সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে টঙ্গীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ ও একটি খেলার মাঠ তৈরি করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই এগুলো উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।'
শরফ উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, 'নগরীতে অটোরিকশা চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের পাশে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে নগরবাসীর ন্যায্য নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে জিসিসি।'
মতবিনিময় সভায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. আশরাফ হোসেনসহ গাজীপুরে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।