ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে পিছু হটল কাস্টম কর্তৃপক্ষ, বেনাপোল-পেট্রাপোলে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বেনাপোল কাস্টম কর্তৃপক্ষ। আজ থেকে স্বাভাবিক হয়েছে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাঁচামাল ছাড়া সব ধরনের পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে। আর কাঁচামালবাহী ট্রাক সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রবেশ করবে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) সকালে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনারের সঙ্গে সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন শিমুল বলেন, 'কাস্টমস কমিশনারের সঙ্গে মতবিনিময় সভার পরই এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।'
এর আগে, কাগজপত্রবিহীন ও চোরাই পণ্য অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোনো পূর্ব ঘোষণা বা প্রস্তুতি ছাড়াই গত বৃহস্পতিবার থেকে সন্ধ্যা ৬টার পর সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তাদের এমন সিদ্ধান্তে দুই দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দরে অচলাবস্থা দেখা দেয়। সীমান্তজুড়ে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি গড়ে ওঠে, বিপাকে পড়েন ব্যবসায়ী, আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা।
বন্দর সূত্র জানায়, বাংলাদেশের বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে প্রতিদিন দেড় হাজারেরও বেশি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে ছিল। এসব ট্রাকে ফল, সবজি, মাছ, কসমেটিকস, রাসায়নিক কাঁচামালসহ দ্রুত পচনশীল পণ্য ছিল, যেগুলোর অনেক কিছুই নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে। আগে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করলেও ওই সিদ্ধান্তের পর তা কমে ১৮০-২০০টিতে নেমে আসে।
কাস্টমসের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় ব্যবসায়ীরা। যশোর চেম্বার অব কমার্স এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স উভয় প্রতিষ্ঠানই বিবৃতি দিয়ে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। তারা বলেন, কাস্টমসের এমন সিদ্ধান্ত ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং এর প্রভাব দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও পড়বে।
যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, 'বেনাপোল বন্দর দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর। এখান দিয়ে ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে থাকেন। আগে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ ট্রাক প্রবেশ করলেও কাস্টমসের ভুল সিদ্ধান্তে তা কমে ১৮০-২০০টিতে নেমে আসে। ভবিষ্যতে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।'
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, 'কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা শেষে বিষয়টি সমাধান হওয়ায় আমরাও খুশি। আমরা বন্দর পরিচালনা করি, তবে কাস্টমসের অনুমোদন ছাড়া কোনো পণ্য ক্লিয়ার করা সম্ভব নয়। ব্যবসায়ী ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।'
