আগামী বাজেটে বেসরকারিখাতকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হবে: অর্থ উপদেষ্টা

নতুন বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভয় কাজ করছে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগামী বাজেটে বেসরকারিখাতকে বিনিয়োগে উৎসাহী করা হবে। কারণ, প্রাইভেট সেক্টর ভালো করলে সরকারের রাজস্ব আহরণও বাড়বে।
আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সচিবালয়ে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ''অনেক ব্যবসায়ী মনে করছেন, এখন বিনিয়োগ করলে পরবর্তীতে তাদের সমস্যা হতে পারে। আমি তাদের বলছি, আপনারা তো আর সালমান এফ রহমান হতে পারবেন না। তারপরও তাদের মধ্যে সংশয় আছে।''
এসময় অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক, ইআরএফ প্রেসিডেন্ট দৌলত আকতার মালা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখা এবং বেসরকারিখাতকে বিনিয়োগে উৎসাহীত করাই হবে প্রধান লক্ষ্য। ব্যবসাবান্ধব কর ব্যবস্থা করা হবে।
''বাজেটে বিরাট বিরাট আশ্বাস দেব না। কোন মনুমেন্টাল প্রকল্প নেওয়া হবে না। বাজেট বক্তব্য হবে নির্যাস, কোন অবতারণা ও বন্দনা থাকবে না। ৫০-৬০ পৃষ্টার বক্তব্য থাকবে।''
এক বছরে যা করতে পারব, তার উল্লেখ থাকবে। ফুটপ্রিন্ট হিসেবে আরও কিছু বিষয় উল্লেখ করবো, যা পরবর্তী সরকারের মেয়াদে হবে। নতুন সরকার যদি সেগুলো না করে, তাহলে জনগণই তখন তার প্রতিবাদ করবে— যোগ করেন উপদেষ্টা।
আগামী বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কর যৌক্তিকীকরণ করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, "কোন কোন ক্ষেত্রে ফেজ আউট করব। রাজস্ব ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশন করব। তবে অগ্রিম আয়কর হিসেবে পরিশোধ করা— অতিরিক্ত কর কতোটা ফেরত দিতে পারব, তা এখনও নিশ্চিত নই।"
নতুন অর্থবছর নতুন নতুন হাসপাতাল করার বদলে বিভিন্ন হাসপাতাল সম্প্রসারণের উদ্যোগ থাকবে বলে জানান উপদেষ্টা। অপরাধ সংক্রান্ত ঘটনা চিহ্নিত করতে একটি ফরেনসিক হাসপাতাল স্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী অর্থবছর মেগা প্রজেক্ট বা মনুমেন্টাল প্রজেক্ট নেওয়া হবে না। স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এমন বাস্তবভিত্তিক প্রকল্প নেওয়া হবে। প্রকল্পগুলোতে সর্বোচ্চ বরাদ্দের পরিমাণ হবে ৫০০-৬০০ কোটি টাকা।
অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, আগামী অর্থবছর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আইসিটিখাতে বরাদ্দ বাড়ানো হবে। কিন্তু শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ ব্যয় করার মতো সক্ষমতা নেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর। তারা যাতে বরাদ্দের অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় করতে পারে, সেজন্য অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, কর রেশনালাইজ করার ক্ষেত্রে এনবিআরের সদিচ্ছা আছে। আমরা কর ব্যবস্থা ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব করবো এবং কিছু ক্ষেত্রে কর কমানো হবে।
ওয়েলথ ট্যাক্স আরোপ করার ক্ষেত্রে ভ্যালুয়েশন একটি সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে অধিক সম্পদের উপর সারচার্জ আরোপ করা আছে। ভবিষ্যতে এটি বাদ দিয়ে ওয়েলথ ট্যাক্স চালু করা যেতে পারে।