মাই এইম ইন লাইফ (২০২৫ সংস্করণ)

সূচনা
প্রতিটি মানুষ জীবনে কিছু না কিছু হতে চায়। আগেকার মানুষরা ছোটবেলায় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা পাইলট হতে চাইতো। কেউ কেউ বাবা-মায়ের চাপে পড়ে আমলা কিংবা সেনাবাহিনীর সদস্য হতে চাইতো। এই কিছু একটা হতে চাওয়াটা একটা মানুষকে পড়াশোনা আর পরিশ্রম করতে তাড়িত করে। তাই অন্যান্য জেনারেশনের মতো আমিও কিছু একটা হতে চাই।
আমি কী হতে চাই
আমি বড়োলোক হতে চাই। আগেকার জেনারেশনের মতো আমি কোনো তাল-বাহানায় বিশ্বাসী না। ওরা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় বলে পরীক্ষায় রচনা লিখলেও আসলে ওরাও বড়োলোক হতে চাইতো–কিন্তু একটা ভালোমানুষির ভান ধরতো। আমি এতসব অভিনয় করি না–কারণ আমি কিছু কেয়ার করি না! আমি বড়োলোক হতে চাই–এটাই আসল কথা। কারণ বড়োলোক হলে সন্মান কেনা যায়; সবাই খাতির করে আর আমি যা খুশি করতে পারবো।
আমি কীভাবে জীবনের লক্ষ্য অর্জন করবো: আমি বড়োলোক হতে যা যা করা লাগে (শর্তসাপেক্ষ–নিচের চ্যাপ্টারে ব্যাখ্যা করা আছে) – তাই করবো। যদি প্রয়োজন হয়:
১. এয়ারপোর্টের সুইপার হয়ে সোনা চোরাচালান করবো;
২. বিপ্লবী নীতিবাগীশ রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে চাঁদাবাজি করবো;
৩. ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন কিনে আরও ১০ লক্ষ দিয়ে আরেকজনকে দিয়ে পরীক্ষায় পাশ করে সরকারি চাকরি নেব–তারপর প্রথম ৬ মাসেই ঘুষ খেয়ে সব টাকা উঠাবো;
৪. কাস্টমস এ চাকরি করে ঘুষ খেয়ে ভাসিয়ে দেব| কেউ বাধা দিলে তার ব্যবসা ফাঁসিয়ে দেব।
৫. রাজনৈতিক আশীর্বাদ নিয়ে ব্যাংক দখল করে বিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার সিঙ্গাপুর-দুবাই-লন্ডন-আমেরিকা-কানাডায় পাচার করে দেব;
৬. ব্যবসায়ীদের মিথ্যা হত্যা মামলায় নাম ঢুকিয়ে ব্ল্যাকমেল করে চাঁদা আদায় করবো;
৭. সরকারি এবং অন্যের জমি দখল করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করবো;
৮. ভুয়া প্রতিষ্ঠান বানিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব আর ঘুষ দিয়ে বড় বড় ব্যাংক লোন নিয়ে ফুর্তি করবো–টাকা দেব না;
৯. টেন্ডার জিততে যতরকম চালাকি করা যায় করবো; যথা: কর্তৃপক্ষ সবার সামনে বাক্স থেকে দরপত্র খুলবে। সবার সামনে কীভাবে আমার মামা চিফ ইঞ্জিনিয়ার বুঝবে আমার দরপত্র কোনটা? আমি সারারাত ডিপ ফ্রিজে আমার খামটা রেখে সেটাকে ঠান্ডা করে সকালে সবার সামনে বক্সে খামটা ঢোকাবো। মামা সবার সামনে একগাদা খাম হাতিয়ে ঠান্ডা খামটা পেয়ে যাবে এবং সেটা ওঠাবে। আমি কাজ পেয়ে যাবো। কাজ হবে আসল খরচের ১০গুণ বাজেটে–যাতে আমি দ্রুত বড়োলোক হয়ে যেতে পারি।
১০. আমি চিংড়ি রপ্তানিকারক হলে চিংড়িগুলোতে ইনজেকশন দিয়ে জেল ভরবো–যাতে অল্প চিংড়ির ওজন অনেক বেড়ে যায়। ৫ টন চিংড়িতে ৫ টন জেল। ডাবল লাভ!
এবং এই রূপ যা যা যখন প্রয়োজন–তা করবো!
লক্ষ্য অর্জন করতে আমি কী কী করবো না
আমি সেকেলে মানুষ না। আমি পড়াশোনা, খাটাখাটনিতে বিশ্বাসী না–কারণ আমি সব জানি।
আমি লেখাপড়ায় বিশ্বাসী না। আমি অটোপাস পছন্দ করি। এই এআই-এর যুগে পড়াশোনা করে গাধারা। বিল গেটস ড্রপ আউট ছিল–সে পড়াশোনা শেষ করলে কি মাইক্রোসফট বানাতে পারতো? নিশ্চয় না–সে বড়োজোর শিক্ষক হতো!
আমি পড়তে পছন্দ করি না–কারণ এতে আবার ব্রেন ব্যাথা পায়। সংবাদপত্র তো পড়ি না–তাদের ওয়েবসাইটেও যাই না। এতো কষ্ট করে পড়ার সময় আমার নেই। তবে আমি ফেসবুকে কমেন্ট করতে পছন্দ করি। নিউজ পড়া লাগে না–নিউজ কার্ড দেখেই আমি কমেন্ট করে দিতে পারি! কারণ আমি সব জানি!
আমি খাটতে পছন্দ করি না! খাটতে কে পছন্দ করে–আমাকে দেখিয়ে দেন; তাকে আমি উন্মাদ আশ্রমে পাঠিয়ে দেব! বুদ্ধিমান লোক খাটে না–খাটায়! আমি অন্যদের খাটিয়ে ফল খেতে পছন্দ করি!
আমি কোনো 'আত্ম উন্নয়ন' সংক্রান্ত লেকচার শুনতে আগ্রহী না! আমি ইতোমধ্যেই অনেক উন্নত এবং আপনাদের চেয়ে বেটার! বয়স কম বলে অবজ্ঞা করবেন না!
আমার কোনো আত্মসম্মান নেই। আত্মসম্মান আসলে আমার শত্রু। আত্মসম্মান থাকলে ঘুষ খাওয়া যায় না, দুর্নীতি-অপকর্ম করা যায় না, অন্যের ক্ষতি করা যায় না, বড়দের অসম্মান করা যায় না, ছোটদের পিটানি দেওয়া যায় না, সাধারণ মানুষদের সম্মান করা যায় না এবং যেভাবে-সেভাবে বড়োলোক হওয়া যায় না!
আমি বড়লোক হয়ে কী করবো
প্রথমে দেশে-বিদেশে ৫০০ বাড়ি আর এপার্টমেন্ট কিনবো। নিজে থাকতে পারি আর না পারি–এতগুলা বাড়ির মালিক আমি, এটা শুনেই লোকজন আমার পা চাটবে। আর পাশের বাড়ির মফিজ ভয় পাবে। আমার বন্ধুরা এবং মামাতো-চাচাতো ভাই বোনেরা হিংসা করবে! তাতে আমি খুব খুশি হবো!
আমি সন্মান কিনতে অনেক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বানাবো এসিসহ!
দামি দামি ঘড়ি-জুতো-গাড়ি কিনবো। প্রতিবেশীরা হিংসা করে বলবে, 'ব্যাটা কী করে রাতারাতি এতো বড়লোক হলো!' এতে আমার আত্মা সুখ পাবে।
প্রতিদিন বাজার করতে ব্যাংকক-সিঙ্গাপুরের কাঁচাবাজারে আমার চাকরদের পাঠাবো। বিদেশি খানা খেতে ভালো।
অনেকগুলা আইফোন কিনবো। কয়েকটা চেংড়া অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকবে মোবাইল বহন করার জন্য।
আমি যেখানে যাবো, আমার কেনা গোলামরা পথ পরিষ্কার করে দেবে 'এই স্যার আসছে' এই বলে। আমার জন্য লিফ্ট ধরে রাখা হবে।
আমি যখন রাস্তা দিয়ে যাব, ট্রাফিক পুলিশ সিগন্যাল বন্ধ করে আমার রাস্তা ক্লিয়ার রাখবে। টাকা দিয়ে দেব।
রাজনীতি করবো একটা ট্যাক্স ফ্রি গাড়ির জন্য।
গুলশান-বনানী কিংবা বারিধারায় একটা বাড়ি থাকতেই হবে। লন্ডন-দুবাইয়ে বাড়ি থাকলেও, ঢাকার এসব এলাকায় বাড়ি না থাকা মানে আমি জীবনে ব্যর্থ!
আমার যা খুশি করবো–কারণ আমি মোটামুটি আইনের ঊর্ধ্বে থাকবো!
বি.দ্র: স্যার, এই রচনা আমি এআই দিয়ে তৈরি করেছি। ফুল মার্ক দেবেন (খাতার সাথে আপনার জন্য ৫০০ টাকার নোট দিয়ে দিয়েছি)! না দিলে মব দিয়ে আপনাকে সাইজ করবো!