Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
May 13, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, MAY 13, 2025
অসহিষ্ণুতা নাকি অজ্ঞানতা: লালনগীতি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করার উদ্দেশ্য কী? 

মতামত

শাহানা হুদা রঞ্জনা
30 April, 2024, 01:50 pm
Last modified: 30 April, 2024, 01:47 pm

Related News

  • কাশ্মীর সংকটে উত্তেজনা নয়, দুই দেশের যৌথ সমাধানই একমাত্র পথ
  • কয়েকটি প্রস্তাবের ভিন্নমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনে মতামত পাঠাল ইসি
  • ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে, এর অন্য কোনো নাম নেই
  • আরেফিন স্যার, অভিবাদন গ্রহণ করুন, আপনার স্থান আমাদের হৃদয়ে
  • সংস্কারের সুপারিশগুলোতে মাত্র ৭টি রাজনৈতিক দল মতামত দিয়েছে: ঐকমত্য কমিশন

অসহিষ্ণুতা নাকি অজ্ঞানতা: লালনগীতি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করার উদ্দেশ্য কী? 

শাহানা হুদা রঞ্জনা
30 April, 2024, 01:50 pm
Last modified: 30 April, 2024, 01:47 pm
শাহানা হুদা রঞ্জনা। স্কেচ: টিবিএস

বাংলাদেশের মানুষের অর্থাৎ আমাদের মনোজগতে বড় ধরনের নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে। কেমন যেন ইস্যুভিত্তিক সমাজে পরিণত হয়েছি আমরা। সামাজিক মাধ্যমে একটা ইস্যু উঠে এসে ঘোরাফেরা করে, আর সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ি সেই ইস্যু নিয়ে। ঠিক-বেঠিক, ন্যায়-অন্যায় বোঝার আগেই শুরু হয়ে যায় গালাগালি, নোংরা কথা, বয়কট, হুমকি, ট্রল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নেগেটিভ ইমেজের মানুষ ও গ্রুপগুলো এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে সত্য চাপা পড়ে যাচ্ছে, ভালো কথা ব্যর্থ হচ্ছে। আমাদের অবস্থা এখন এমন হয়েছে যে জাতীয় কবি যদি বেঁচে থাকতেন এবং 'মানুষ' নামে কবিতাটি এখন রচনা করতেন তাহলে নির্ঘাত তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে। সেখানে তিনি লিখেছেন,

"ও কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি
ও মুখ হইতে কেতাব-গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে,
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে,
পূজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! —মূর্খরা সব শোনো,
মানুষ এনেছে গ্রন্থ; —গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।"

হঠাৎ এরকম কথা মনে হওয়ার কারণ হলো, পত্রিকায় প্রকাশিত এক খবরে দেখলাম, লালনের গানের দুটি লাইন ফেইসবুকে দেওয়ার দায়ে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ইসলাম ধর্মকে কটূক্তি করার অভিযোগ এসেছে তার বিরুদ্ধে। শরীয়তপুরের ওই যুবক লিখেছেন, "সুন্নতে খৎনা দিলে যদি হয় মুসলমান, তাহলে নারী জাতির কী হয় বিধান?" (সুন্নত দিলে হয় মুসলমান, নারীলোকের কী হয় বিধান।) স্থানীয় কয়েকজনের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে আটক করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। অবশ্য ভালো খবর হচ্ছে যে সন্ধ্যায় ছেলেটি জামিন পেয়েছেন।

"সুন্নত দিলে হয় মুসলমান, নারীলোকের কি হয় বিধান"—এটা যে লালনগীতির খুব প্রিয় ও পরিচিত একটি লাইনলাইন, সেটা নিয়েও কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বাউলসংগীতটি ১৮৯০ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই সংগীত নিয়ে কোনো আপত্তি ওঠেনি। দেশে-বিদেশে কোথাও জনতার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগেনি। তাহলে হঠাৎ এত বছর পর শরীয়তপুরের গুটিকতক লোক উত্তেজিত হয়ে উঠল কেন? কারণ ওই একটাই, অজ্ঞতা ও অসহিষ্ণুতা। অবস্থা যেরকম দাঁড়িয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে লালনকে পেলে হয়তো এরা কারাদণ্ড দিত বা হত্যা করত। কারণ লালন গেয়েছেন;

"জাত গেল জাত গেল বলে
এ কি আজব কারখানা 
আসবার কালে কি জাত ছিলে
এসে তুমি কি জাত নিলে,
কি জাত হবা যাবার কালে
সে কথা ভেবে বল না"

দেহতত্ত্বই বাউল সম্প্রদায়ের মূল ভিত্তি। লালন মনে করতেন দেহই সকল রহস্যের মূল। নিজেকে জানার মাধ্যমে পরমসত্তার অস্তিত্ব সন্ধান করেন তিনি ও তাঁর অনুসারীরা। লালন পরমাত্মাকে উপলব্ধি করেছেন নিজের ভেতরে। অস্তিত্বের এই রহস্য ভেদ করা কি আজকালকার আকাট মূর্খ ও অর্ধশিক্ষিত মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব? 

সাঁইজি বলেছেন, 

"আট কুঠুরী নয় দরজা আটা মধ্যে মধ্যে ঝরকা কাটা
তার উপরে সদর কোঠা, আয়না মহল তায়।" 

অচেনার সাথে সংযোগ স্থাপন করা কুটিল মানুষের পক্ষে আরও অসম্ভব। লালন ফকির সত্যকে জানা ও পাওয়ার মাঝখানে একমাত্র দেহকেই অবলম্বন করেছেন। সাঁইজীর সংগীতে ধর্মীয় সাধনার মূল ধ্যানতত্ত্বে আত্মা, যোগসাধনা, শ্বাসপ্রশ্বাস ও দেহঘড়ির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। লালন বলেন—মনের শক্তি, সাধনার শক্তি। তিনি বলেছেন, "খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়।" এখানে দেহ হলো খাঁচা আর মন হলো পাখি। দেহতত্ত্বের এসব রহস্য জানতে লালন নিয়ে যে পড়াশোনা করা দরকার, তা এখন আর কেউ করে না। লালনের জ্ঞানের এই বিশাল ভান্ডার বোঝার চাইতে তাদের পক্ষে মামলা করাটাই সহজ।

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকার অতি সাধারণ মানুষ যখন অনাদিকাল থেকে লালনগীতি শুনে আত্মা জুড়ান, সেখানে লালনসংগীতের দুটি লাইন লেখার দায়ে একজনকে পুলিশ কাস্টডিতে নেয়া হবে কেন? দেশের অনেকেরই লালন ফকিরের ভাববাদী বাউল সংগীত বোঝার ক্ষমতা না থাকলেও, ধর্মীয় অনুভ'তিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগ তুলতে পারঙ্গম এরা। মানুষ এখন যতটা না ধর্ম পালন করেন, এর চাইতে বেশি ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে হইচই করেন, উত্তেজনা ছড়ান, হেট স্পিচ দেন। তারা মনে করেন প্রকৃত ধর্ম পালন করার চেয়ে ধর্ম নিয়ে উসকানি ছড়ানোটা সহজ। 

যারা এইসব উসকানির বিরোধিতা করছেন, ভয় দেখিয়ে তাদের থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। ভুল ধারণা, ভুল তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে ভালো মানুষ একঘরে হয়ে পড়ছেন। যারা সৎ, মুক্তচিন্তার অধিকারী, তারা এতটাই সুবিধা-অসুবিধা ও ভালো-মন্দ চিন্তা করেন যে একটা পর্যায়ে চুপ হয়ে পড়েন। এত চাপ ও নেগিটিভিটি তারা টেনে নিয়ে যেতে পারেন না। তাছাড়া এরাও সবাই একজোট নন, এক শিবিরের নন। এরপরেও কেউ কেউ নিজ নিজ অবস্থান থেকে কথা বলেন, প্রতিবাদ করেন। কিন্তু সেটা খুব একটা সবল থাকে না বলে সফলও কম হয়। মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সমাজ বলে যে শ্রেণিটা এতদিন সব ধরনের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াত, তারাও আজ নিজেদের শক্তি হারিয়ে ফেলছেন। সেই কারণেই বর্বর ও সুবিধাবাদী গোষ্ঠীগুলো দুর্বিনীত হয়ে উঠছে। 

এখন আসি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার প্রসঙ্গে। ভাগ্যিস, এরা নজরুলের সেইসব কবিতা পড়েননি, যেগুলোতে ধর্ম নিয়ে কঠিন মন্তব্য করা হয়েছে। ওরা যে পড়েননি আমি নিশ্চিত, তাহলে এখন তারা নজরুলকে জাতীয় কবি না করে মুরতাদ ঘোষণা করত। 

কবি 'সাম্যবাদী' কবিতায় বলেছেন, 

পেটে-পিঠে, কাঁধে-মগজে যা-খুশি পুঁথি ও কেতাব বও,
কোরান-পুরাণ-বেদ-বেদান্ত, বাইবেল-ত্রিপিটক
জেন্দাবেস্তা গ্রন্থ সাহেব পড়ে যাও যত সখ,
কিন্তু কেন এ পণ্ডশ্রম, মগজে হানিছ শূল?
বন্ধু, বলিনি ঝুট,
এইখানে এসে লুটাইয়া পড়ে সকল রাজমুকুট
এই হৃদয়ই সে নীলাচল, কাশী, মথুরা, বৃন্দাবন
বুদ্ধগয়া এ, জেরুজালেম এ, মদিনা, কাবা-ভবন
মসজিদ এই, মন্দির এই, গির্জা এই হৃদয়
এইখানে বসে ঈসা মুসা পেল সত্যের পরিচয়।
এই কন্দরে আরব-দুলাল শুনিতেন আহ্বান,
এইখানে বসি গাহিলেন তিনি কোরানের সাম-গান!

কাজী নজরুল ইসলাম সবসময় বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। কবির বিশ্বাসের কথা কবি কাউকে বলতে ছাড়েননি। ধর্মান্ধ মানুষের বিরুদ্ধে বলতে পিছপা হননি। কবি বলেছেন, "মানুষেরই মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর।" সেই সময়ে দাঁড়িয়ে নজরুল বলেছেন, অন্তরের শক্তিই বড় শক্তি। ধর্মগ্রন্থ পাঠ করে সেই জ্ঞান যদি মানুষের উপকারে না লাগে তবে ধরে নিতে হবে তা বৃথা। তিনি বলেছেন মানুষের হৃদয়ের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোনো মন্দির কাবা নেই। বিদ্রোহী কবি 'সাম্যবাদী' কবিতায় মন্দির, মসজিদ, গির্জা বা অন্যান্য তীর্থক্ষেত্রের মতোই পবিত্র মনে করেছেন মানুষের মনকে। 

কবি 'মানুষ' কবিতায় বলেছেন,

মসজিদে কাল শিরনি আছিল, অঢেল গোস্ত-রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি!
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে আজারির চিন,
বলে 'বাবা, আমি ভুকা-ফাঁকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!'
তেরিয়া হইয়া হাঁকিল মোল্লা --'ভ্যালা হলো দেখি লেঠা,
ভুখা আছো মরো গো-ভাগাড়ে গিয়া! নামাজ পড়িস বেটা?'
ভুখারী কহিল, 'না বাবা!' মোল্লা হাঁকিল --'তা হলে শালা,
সোজা পথ দেখ!' গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা!
ভুখারি ফিরিয়া চলে,
চলিতে চলিতে বলে-
'আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তোমায় কভু,
আমার ক্ষুধার অন্ন তা'বলে বন্ধ করনি প্রভু!
তব মসজিদ-মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবি,
মোল্লা-পুরুত ত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবি!'

আমাদের অসহিষ্ণু সমাজের আরেক রূপ দেখতে পেলাম 'রূপান্তর' নাটকটি নিয়ে। ভেবেছিলাম 'রূপান্তর' নাটক ও জোভান প্রসঙ্গে কিছু লিখব না। এর আগে হোচিমিন ও শরীফ-শরীফা ইস্যু নিয়ে গণমাধ্যমে লিখেছি, কিন্তু গালাগালি ও অসহিষ্ণু মন্তব্য ছাড়া ইতিবাচক কিছু ঘটে না। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে অধিকাংশ মানুষ যুক্তি দিয়ে তর্ক বা মন্তব্য করেন না। ভাসমান মন্তব্য, হাসাহাসি ও কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা দিয়েই শেষ। বিরুদ্ধ মত গ্রহণ করতে অপারগ তারা। ঠিক এই জায়গাটাতেই সমস্যা আমাদের। এই চরম অসহনশীল মনোভাব যেকোনো সৃষ্টিকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, ইতিহাস সবকিছু এই সস্তা বিতর্কের বলী হয়ে যাচ্ছে। ভিন্ন মত, পথ, ধর্ম, বর্ণ, বক্তব্য কিছু সহ্য করতে পারছি না। পছন্দ না হলে বলার অধিকার সবারই আছে, আছে প্রতিবাদ জানানোর অধিকার। কিন্তু এই প্রতিবাদ জানানোর পদ্ধতি এখন চরম আকার ধারণ করেছে। 

কিছুদিন আগে ইউটিউবে প্রচারিত 'রূপান্তর' নাটকটি নিয়ে যে তোলপাড় শুরু হয়েছে, তা যেন শেষই হচ্ছে না। এই টিভি নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের একাংশের তোপের মুখে পড়েছেন অভিনেতা। অভিনেতাকে বয়কটের ডাকও দিচ্ছেন দর্শকদের একাংশ। অভিনেতা জোভানকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। তিনি বারবার দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝাতে হয়েছে, তিনি মুসলিম পরিবারের ছেলে এবং ধর্মকে কতটা বিশ্বাস, আল্লাহকে কতটা শ্রদ্ধা করেন সেই কথা। ভবিষ্যতে চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরেকটু বেশি সচেতন থাকবেন টাইপের প্রতিশ্রুতিও দিতে হয়েছে। এরপরেও মামলা করতে হলো জোভানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে।

'রূপান্তর' নাটকটিতে মূলত ট্রান্সজেন্ডার বিষয় ও হরমোনজনিত কারণে মানুষের একাকিত্বের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। দর্শকের একাংশের উগ্র সমালোচনার কারণে প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে ইউটিউব থেকে নাটকটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে নাটকটি নিয়ে যে এত তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যাবে, তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছে অনেকের। যে ঘটনা বা যারা এ সমাজেই বিদ্যমান, সেই তাদেরই জীবন নাটকের গল্পে উঠে আসায় এমন প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে, সেটা কল্পনাও করা যাচ্ছে না।

এই মানুষগুলো যে মূল স্রোতধারা নন, প্রান্তিক, বঞ্চিত, অসহায় এবং ভিন্ন আইডেনটিটি নিয়ে বসবাস করেন, সেটা আমরা মানতে রাজি নই, দেখতে চাই না এবং এই জনগোষ্ঠীর প্রতি নূন্যতম সহমর্মিতাও দেখাই না। যেহেতু নাটকটি পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল ওয়ালটন, তাই ফেসবুকে অনেকে ওয়ালটনের পণ্য বর্জনের ডাক দেয়া হয়েছিল। বয়কটের ডাক শুনেই ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ ভয় পেয়ে তাদের সাপোর্ট তুলে নিয়েছে।

কারো কারো বিরূপ প্রচারের চাপে পড়ে বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে করতে আমার কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছি? প্রতিবাদ করতে পারছি না এককভাবে ও জোটবদ্ধভাবে। ব্যক্তি জোভান মাফ চেয়েও কিন্তু মামলার মুখে পড়লেন। তার অপরাধ একজন রূপান্তরকামীর ভূমিকায় অভিনয় করা। যে কারণে তাকে সাধুবাদ দেয়ার কথা, সেখানে তিনি ক্যারিয়ার হারাতে বসেছেন। অথচ নাটকে অশ্লীল ও ধর্মকে খাটো করে কিছু দেখানো হয়নি। সেখানে দেখানো হয়েছে সৌরভ মানে জোভান হরমোনজনিত এক বিরল জটিলতায় ভুগছেন। একজন চিকিৎসককে দিয়ে বলানো হয়, সৌরভ ডিএসডি (ডিজঅর্ডার অব সেক্স ডেভেলপমেন্ট) নামের এক জটিলতায় আক্রান্ত। জিনগতভবে তিনি একজন মেয়ে হলেও ওই জটিলতার কারণে শুরুতে তার মেয়েলি হরমোন বিকশিত হয়নি। সে কারণে তিনি দেখতে পুরুষের মতো। কিন্তু পরে মেয়েলি হরমোন বিকশিত হওয়ায় তার মধ্যে মেয়েলি বৈশিষ্ট্যও বিকশিত হয়।

এই কাহিনীতে সমস্যাটা কোথায়? বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ এর ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন। স্বাভাবিক মা-বাবাই এরকম সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। এরা এই সমাজেরই অংশ, ঘৃণিত অপরাধী নন। আমরা খুনি, চোর, দুর্বৃত্ত, অসাধু ব্যবসায়ী, নারী-শিশু নির্যাতনকারী সবাইকে মেনে নিতে পারছি, কিন্তু প্রকৃতির সৃষ্টিকে মেনে নিতে পারছি না। এই মানুষগুলো আপনার-আমার পরিবারের অংশ, ভিনগ্রহ থেকে আসা কেউ নন। এখানে সমাজের বিশেষ একটি শ্রেণির গল্প বলা হয়েছে। বই, নাটক, সিনেমা তো সমাজের সব বিষয় নিয়েই নির্মিত হয়।

আসলে আমরা অদ্ভুত একটি জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছি, যারা ভিন্নতা বিষয়টি ধারণ করতে পারি না। ধারণ করতে না পেরে চুপ করে থাকি না, অত্যন্ত কদর্যভাবে প্রত্যাখান করি, উগরে দেই।


  • শাহানা হুদা রঞ্জনা: যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক

  • বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিবন্ধের বিশ্লেষণটি লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণের প্রতিফল। অবধারিতভাবে তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের অবস্থান বা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়।

Related Topics

টপ নিউজ

মতামত / লালনগীতি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত: ভারত চেয়েছিল শক্তি দেখাতে, কিন্তু প্রকাশ পেল দুর্বলতা
  • লোকসান কাটিয়ে উঠতে ৯০০ কোটি টাকার সরকারি সহায়তা চাইছে ইন্টারকন্টিনেন্টাল
  • লোডশেডিং কমাতে আরও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল করবে সরকার: জ্বালানি উপদেষ্টা
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ আ.লীগের বিরুদ্ধে সরকার যেসব ব্যবস্থা নিতে পারবে
  • হুন্ডির প্রভাব কমে যাওয়ায় ১০ মাসেই ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সের রেকর্ড
  • পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকবে না, পুনর্গঠিত হচ্ছে র‌্যাব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

Related News

  • কাশ্মীর সংকটে উত্তেজনা নয়, দুই দেশের যৌথ সমাধানই একমাত্র পথ
  • কয়েকটি প্রস্তাবের ভিন্নমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনে মতামত পাঠাল ইসি
  • ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে, এর অন্য কোনো নাম নেই
  • আরেফিন স্যার, অভিবাদন গ্রহণ করুন, আপনার স্থান আমাদের হৃদয়ে
  • সংস্কারের সুপারিশগুলোতে মাত্র ৭টি রাজনৈতিক দল মতামত দিয়েছে: ঐকমত্য কমিশন

Most Read

1
মতামত

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত: ভারত চেয়েছিল শক্তি দেখাতে, কিন্তু প্রকাশ পেল দুর্বলতা

2
বাংলাদেশ

লোকসান কাটিয়ে উঠতে ৯০০ কোটি টাকার সরকারি সহায়তা চাইছে ইন্টারকন্টিনেন্টাল

3
বাংলাদেশ

লোডশেডিং কমাতে আরও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল করবে সরকার: জ্বালানি উপদেষ্টা

4
বাংলাদেশ

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ আ.লীগের বিরুদ্ধে সরকার যেসব ব্যবস্থা নিতে পারবে

5
অর্থনীতি

হুন্ডির প্রভাব কমে যাওয়ায় ১০ মাসেই ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সের রেকর্ড

6
বাংলাদেশ

পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকবে না, পুনর্গঠিত হচ্ছে র‌্যাব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net