Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
May 31, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, MAY 31, 2025
‘তোমাকে দিয়ে হচ্ছে না’: দ্য গডফাদার-এ অভিনয়ের সময় শুনতে হয়েছিল আল পাচিনোকে

বিনোদন

দ্য গার্ডিয়ান
18 October, 2024, 07:45 pm
Last modified: 21 October, 2024, 07:33 pm

Related News

  • আগাথার একই উপন্যাস থেকে শোয়ার্জনেগার ও স্ট্যালনের অ্যাকশন সিনেমা—দুটোই ফ্লপ
  • বিদেশি সিনেমার ওপর ১০০% শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প
  • অস্কার জেতার পর ‘সব সুযোগ ব্যবহার করিনি’: এ আর রহমান
  • ‘আমি ছেড়ে দিচ্ছি’: অভিনয় থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন কেট ব্লানচেট
  • পরবর্তী জেমস বন্ড ব্রিটিশ হওয়া উচিত: সাবেক তারকা পিয়ার্স ব্রসনান 

‘তোমাকে দিয়ে হচ্ছে না’: দ্য গডফাদার-এ অভিনয়ের সময় শুনতে হয়েছিল আল পাচিনোকে

আমার পরিকল্পনা ছিল, চরিত্রটি যেন হঠাৎ সবার সামনে আবির্ভূত হয়। এটাই ছিল এই চরিত্রায়নের শক্তি। এটাই একমাত্র উপায় ছিল, যা দ্বারা বোঝানো যায়: এই মানুষটার উত্থান, তার সামর্থ্য ও সম্ভাবনার আবিষ্কারকে। আমি আশা করেছিলাম, ছবির শেষে আমি একটি ধাঁধা সৃষ্টি করব এবং আমার মনে হয় ফ্রান্সিসও তাই আশা করছিলেন
দ্য গার্ডিয়ান
18 October, 2024, 07:45 pm
Last modified: 21 October, 2024, 07:33 pm
'দ্য গডফাদার' ছবিতে মাইকেল কর্লিয়নি চরিত্রে আল পাচিনো। ছবি: প্যারামাউন্ট পিকচার্স

এক বিকেলে আমার কাছে একটি ফোন এল। রিসিভ করতেই লাইনের অপর প্রান্তে যার নাম ও কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম; তিনি আমার জীবন বদলে দিলেন: ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা।

শুরুতেই ফ্রান্সিস আমাকে জানান তিনি 'দ্য গডফাদার' নামের একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করতে যাচ্ছেন এবং আমাকে এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন। আমার মনে হচ্ছিল তিনি হয়তো আমার সঙ্গে রসিকতা করছেন। আমি কে? আমাকে কেন ফ্রান্সিস তার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেবেন!

আমি মারিও পুজোর 'দ্য গদফাদার' উপন্যাসটি পড়েছিলাম, সেটি ওই সময়ে বিপুল পাঠকপ্রিয় হয়েছিল। যে কারো পক্ষে এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে পারাটা অনেক বড় পাওয়া। আর একজন তরুণ অভিনেতার জন্য তো যে কোনো চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ পাওয়াই বিশাল ব্যাপার। কিন্তু আমার কাছে এমন অভাবনীয়ভাবে সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছিল না, কেমন যেন বেখাপ্পা লাগছিল।

তারপর হঠাৎ মনে হলো বিষয়টি সত্যিও হতে পারে। কারণ সান ফ্রান্সিসকোতে আমি ফ্রান্সিসের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়েছিলাম। সেসময় আমি দেখেছিলাম ফ্রান্সিসের তার নিজের প্রতি অগাধ আত্মবিশ্বাস ছিল, আর তিনি ছিলেন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো, কর্তৃত্ব করার মতো এবং ঝুঁকি নেওয়ার মতো মানসিকতার মানুষ। এ কারণে শেষমেশ তার কথায় আমার মনে বিশ্বাস জেগেছিল।

কিন্তু সেসময় কিছু বিষয় এখনকার মতো ছিল না। প্যারামাউন্ট-এর মতো স্টুডিও খ্যাতিমান বয়স্ক পরিচালকদের কাছে না গিয়ে এই প্রতিভাবান, নতুন আইডিয়া নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো তরুণ বুদ্ধিজীবির কাছে এসেছে? এই বিষয়টি হলিউড সম্পর্কে আমার চিরাচরিত ধারণার সঙ্গে মিলছিল না।

ছবি: ল্যান্ডমার্ক মিডিয়া

এরপর ফ্রান্সিস জানান, তিনি চান আমি 'মাইকেল কর্লিয়নি'- চরিত্রে অভিনয় করি। আমার তাৎক্ষণিক মনে হলো এই লোক এবার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আমার সন্দেহ হচ্ছিল যে আদৌ ফোনে আমার সঙ্গে ফ্রান্সিস কথা বলছেন কি না।

সে সময় আমার নার্ভাস ব্রেকডাউনের মতো অবস্থা। একজন পরিচালক আপনাকে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দিচ্ছেন, তাও আবার ফোনে, কোনো এজেন্ট বা অন্য কিছুর মাধ্যমে নয় এবং সবচেয়ে অদ্ভূত বিষয় হলো এত বড় একটি চরিত্রে কাজ করার প্রস্তাব- এসব কথা সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা একশ মিলিয়নের মধ্যে এক ভাগ।

অবশেষে যখন আমি ফ্রান্সিসের সঙ্গে কথা শেষ করে ফোনটা রাখি, একেবার হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম।

'দ্য গডফাদার' সিনেমায় কাজের সুযোগ পাওয়া এবং কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে নিজের 'সনি বয়' শীর্ষক বইতে এসব কথা তুলে ধরেছেন আল পাচিনো। বইটির নির্বাচিত কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:

তবে প্যারামাউন্ট চায়নি আমি মাইকেল কর্লিয়নির চরিত্রে অভিনয় করি। তারা এই চরিত্রে জ্যাক নিকলসনকে বা রবার্ট রেডফোর্ডকে, কিংবা ওয়ারেন বিটি বা রায়ান ও'নিলকে চেয়েছিল।

বইটিতে পুজো দেখিয়েছেন মাইকেল 'কর্লিয়নি পরিবারের সবচেয়ে দুর্বল' ব্যক্তি বলে নিজেকে অভিহিত করছে। সে ছিল দেখতে ছোটখাটো, মাথাভরা কালো চুল, সৌম্য সুদর্শন এবং সবচেয়ে বড় কথা তাকে দেখলে কারো মনেই কখনো ভয় উদ্রেক হয়না এমন।

বলা বাহুল্য স্টুডিও যেসব অভিনেতাকে এই চরিত্রের জন্য পছন্দ করেছিল, তারা কেউই তেমনটি দেখতে নন।

কিন্তু তাই বলে আমি খুব সহজেই কাজটা পেয়ে গেলাম তা না।

বলা হলো প্রথমে আমাকে চরিত্রের জন্য স্ক্রিন-টেস্ট করতে হবে, যা আমি আগে কখনোই করিনি। এটি করার জন্য আমাকে বিমানে করে ক্যালিফোর্নিয়ায় যেতে হবে। আমি এই দুটোর কোনোটিই করতে চাচ্ছিলাম না। আসলে আকাশপথে ভ্রমণে আমি কিছুটা ভয় পেতাম এবং কোনোভাবেই ক্যালিফোর্নিয়ায় যেতে চাইতাম না।

এটা যে 'দ্য গডফাদার' এর মতো সিনেমা, আমি তখন বিষয়টিকে তত গুরুত্ব দেইনি। আসলে কম বয়সে সবকিছুর ওজন বুঝে ওঠা যায় না।

কিন্তু আমার ম্যানেজার মার্টি ব্রেগম্যান আমাকে বললেন, 'তোমাকে ওই প্লেনে উঠতেই হবে। তিনি আমার জন্য এক পাইন্ট হুইস্কি নিয়ে এসেছিলেন, যাতে আমি ফ্লাইট ভ্রমণ কিছুটা উপভোগ করতে পারি। অবশেষে আমি স্ক্রিন টেস্ট করাতে সেখানে গেলাম।'

প্যারামাউন্ট ইতোমধ্যে ফ্রান্সিসের পছন্দ করা পুরো কাস্টকে বাদ দিয়েছিল। তারা জিমি কান ও বব ডুভালকেও এই অজুহাতে বাদ দিয়েছিল যে তারা এত প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা, তাদের আর নতুন করে কী অর্জন করা বাকি। তারা ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে ব্র্যান্ডোকেও ছাঁটাই করেছিল। স্টুডিওতে ঢুকেই বুঝলাম তারা আমাকেও নিতে চায় না।

আমি জানতাম তখনকার তরুণ অনেক অভিনেতাই এই চরিত্রে অভিনয় করতে আগ্রহী ছিলেন। সে হিসেবে শুরুতেই বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আমাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলো। আমার কাছে এই অনুভূতি ছিল খুবই অস্বস্তিকর।

আমার স্ক্রিন টেস্ট করার আগে, ফ্রান্সিস আমাকে সান ফ্রান্সিসকোতে একজন নাপিতের কাছে নিয়ে গেলেন। কারণ তিনি চেয়েছিলেন মাইকেলের চুলে চল্লিশের দশকের জনপ্রিয় একটি কাট থাকবে।

ছবি: এভারেট কালেকশন

আমরা এই চলচ্চিত্রটি তৈরি করছি এ কথা শোনামাত্র নাপিত কিছুটা পিছনে সরে গেলেন। এরপর তিনি চুল কাটতে এলেন ঠিকই, তবে ক্রমাগত কাঁপতে শুরু করলেন। পরে জানতে পারি তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে!

স্ক্রিন টেস্ট করাতে গিয়ে দেখি প্যারামাউন্ট এক্সিকিউটিভরা একে অপরের প্রতি বেশ খাপ্পা হয়ে আছেন। তারা জোরে জোরে চিৎকার-চেচাঁমেচি করছিলেন। আশেপাশেও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

আমি আমার মনকে বললাম 'তুমি এতে পাস করবে। শুধু একটাই কাজ, চরিত্রের ভেতরে ঢোকো।'

ফ্রান্সিস আমাকে নিতে চেয়েছিল, কথাটা আমি জানতাম। একজন পরিচালক যখন কোনো অভিনেতাকে নিতে চান, মনে সাহস যোগানোর জন্য এর চেয়ে বেশি আর কি লাগে।

স্ক্রিন টেস্টের কয়েকদিন আগে নিউইয়র্ক সিটির লিঙ্কন সেন্টারে ডায়ান কিটনের সঙ্গে আমার দেখা হয়। আমরা খুব সহজেই একে অপরের সঙ্গে কথা শুরু করি। ডায়ান ছিল খুবই বন্ধুপরায়ণ ও মজার। আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন আমার কোনো বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছি।

মাইকেলের দ্বিতীয় স্ত্রী কে-এর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী অডিশন দিয়েছিলেন। তবে ফ্রান্সিস চেয়েছিলেন আমার সঙ্গে ডায়ানের জুটি হোক। আমি জানতাম, তার (ডায়ান) ক্যারিয়ারে খুব ভাল সময় চলছিল তখন।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিকের বিয়ের দৃশ্য দিয়ে আমার অভিনয় শুরু হয়। স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে এই অংশের শুটিং শেষ হতে এক সপ্তাহের মতো সময় লেগেছিল। সাদামাটাভাবে জীবন কাটানো আমি হঠাৎ নিজেকে এক বিশাল হলিউড চলচ্চিত্রের সেটে আবিষ্কার করলাম; যেখানে প্রচুর যন্ত্রপাতি, লাইট, ডলি ট্র্যাক, ক্রেন ও বুমস, মাইক্রোফোন এবং শত শত এক্সট্রা শিল্পী; সবাই ফ্রান্সিসের পরিচালনায় কাজ করছে।

ডায়ান ও আমি প্রথম কয়েকটা দিন হাসাহাসি করে কাটালাম। কারণ সেসময় আমরা সেই বিয়ের অনুষ্ঠানের দৃশ্যে অভিনয় করছিলাম, স্ক্রিন টেস্টে আমাদের দুজনেরই এই দৃশ্যগুলো খুব অপছন্দ হয়েছিল। শুধুমাত্র ওই এক দৃশ্যের ভিত্তিতেই আমরা নিশ্চিত ছিলাম, আমরা সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সিনেমার অংশ হয়েছি। সারাদিন শুটিং শেষের পর আমরা ম্যানহাটনে ফিরে গিয়ে মদ খেতাম। আমরা দুজনেই ভাবছিলাম, আমাদের ক্যারিয়ার মনে হয় শেষ হয়ে গেছে।

ছবি: প্রড ডিবি

যে অংশের চিত্রধারণ করেছিলেন, হলিউডে ফিরে ফ্রান্সিস সেগুলো প্যারামাউন্টকে দেখান। এসময় তারা ফের প্রশ্ন করেছিল, আমি এই চরিত্রের জন্য সঠিক অভিনেতা কিনা। এমনকি সেটের চারপাশে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল; আমাকে ছবি থেকে বাদ দেওয়া হবে। শুটিংয়ের সময় সেটের আবহাওয়া বদলের বিষয়টি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম। আমি যখন কাজ করতাম তখন লোকজনের মধ্যে, এমনকি ক্রুদের মধ্যেও অস্বস্তি দেখতাম। বিষয়টা আমি খুব অনুভব করতাম।

কথা হচ্ছিল আমাকে বাদ দেওয়া হবে এবং সম্ভবত ফ্রান্সিসও শেষমেশ তেমনটাই চাচ্ছিলেন। কারণ আসলে আমি ঠিকঠাক কাজটা পারছিলাম না। তবে আমাকে এই চলচ্চিত্রে নেওয়ার দায় যেহেতু তারই ছিল, তাই তিনি আমাকে কিছুটা সুযোগ দিতে চাচ্ছিলেন।

অবশেষে ফ্রান্সিস সিদ্ধান্ত নিলেন এবার কিছু একটা করতেই হবে, এভাবে হচ্ছে না। প্রায় দেড় সপ্তাহ হয়ে গেছে আমরা 'দ্য গডফাদার'-এর শুটিং ‍শুরু করেছি, এমন সময় এক রাতে তিনি আমাকে 'জিঞ্জার ম্যান' রেস্টুরেন্টে ডেকে পাঠালেন। সেখানে তিনি তার স্ত্রী, বাচ্চাদের এবং আরও কয়েকজন মানুষের সঙ্গে ডিনার করছিলেন। আমি যখন তার টেবিলের কাছে গেলাম, তিনি আমাকে বললেন, 'শোনো, তোমার সঙ্গে আমার একটু কথা আছে।'

তিনি আমাকে তাদের সঙ্গে বসতে পর্যন্ত বললেন না। আমি অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম, উনি এমন করছেন কেন? উনি স্টেক কাটছেন আর এমনভাবে আমার দিকে তাকাচ্ছেন যেন আমাকে তিনি ভালোমতো চেনেন না– যেন আমি কোনো সাহায্যপ্রার্থী অভিনেতা, তার কাছে সাহায্য চাইতে গিয়েছি।

অবশেষে ফ্রান্সিস মুখ খুললেন। তিনি বললেন, 'তুমি জানো আমি তোমাকে কতটা গুরুত্ব দিই, তোমার উপর আমার কতটা বিশ্বাস ছিল। কিন্তু তোমাকে দিয়ে হচ্ছে না।'

আমি ভয়ানক নার্ভাস বোধ করতে লাগলাম। বুঝতে পারলাম আমার কাজটা ঝুঁকির মুখে।

আমি ফ্রান্সিসকে বললাম, 'এখন আমাকে কী করতে বলছেন?'

তিনি বললেন, 'আমি এতদিন যা শুট করেছি সেগুলো একসঙ্গে করেছি। তুমি নিজেই একবার দেখো। কারণ আমি মনে করি এভাবে কাজ হচ্ছে না। তুমি কাজ করছ না।'

পরদিন স্ক্রিনিং রুমে ঢুকলাম। আমি যখন পুরো ফুটেজটি দেখলাম, চলচ্চিত্রের শুরুর দিকের সমস্ত দৃশ্যগুলো ছিল এটিতে, আমার নিজেরই মনে হলো এখানে দেখার মতো কিছু নেই। আমি বুঝতে পারছিলাম না, এখন কী বলব।

তবে মজার বিষয় হলো মনে মনে আমি যা ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছিলাম, তা কিন্তু হয়েছে। আমি চোখে পড়ার মতো কিছু করতে চাইনি। মাইকেলের চরিত্রটি নিয়ে আমার পুরো পরিকল্পনা ছিল এমন যে, এই বাচ্চাটি তার চারপাশের জগৎ সম্পর্কে কিছুই জানে না এবং বিশেষ কোনো ক্যারিশমাটিক ব্যক্তিত্ব তার ছিল না।

আমার পরিকল্পনা ছিল, চরিত্রটি যেন হঠাৎ সবার সামনে আবির্ভূত হয়। এটাই ছিল এই চরিত্রায়নের শক্তি। এটাই একমাত্র উপায় ছিল, যা দ্বারা বোঝানো যায়: এই মানুষটার উত্থান, তার সামর্থ্য ও সম্ভাবনার আবিষ্কারকে। আমি আশা করেছিলাম, ছবির শেষে আমি একটি ধাঁধা সৃষ্টি করব এবং আমার মনে হয় ফ্রান্সিসও তাই আশা করছিলেন। কিন্তু আমরা কেউই অন্যজনের কাছে বিষয়টি কীভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে, তা বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

অনেকে ধারণা করেন, ফ্রান্সিস রেস্তোরাঁয় গুলির দৃশ্যের শুটিং এগিয়ে আনেন, যাতে হলিউডের সন্দেহবাদীদের আমাকে বিশ্বাস করার এবং ছবি থেকে বাদ না দেওয়ার মতো কিছু উপাদান পান। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল কি না, তা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়। তবে ফ্রান্সিস নিজে আমার সুবিধার জন্য পরিকল্পিতভাবে কিছু করার কথা অস্বীকার করেছিলেন। 

কিন্তু তিনি ইতালীয় রেস্তোরাঁর দৃশ্যের চিত্রগ্রহণের কাজ এগিয়ে আনেন এটা সত্যি, যেখানে অনভিজ্ঞ মাইকেল তার বাবার ওপর হামলার প্রতিশোধ নিতে সোলোজ্জো ও ম্যাকক্লাস্কিকে খুন করে। এই দৃশ্যটি কয়েকদিন পরে শুট হওয়ার কথা ছিল, তবে সত্যি বলতে ওই সময় যদি আমার সামর্থ্য প্রমাণের সুযোগটি না পেতাম, তবে আমার দ্বারা হয়তো আর কিছু করা সম্ভব হতো না।

এপ্রিলের এক রাতে আমি ওই দৃশ্যের শুটিং করি। সেদিন আমি একটা ছোট্ট রেস্তোরাঁয় ১৫ ঘণ্টা কাটিয়েছিলাম, সঙ্গে ছিলেন লিটল আল লেত্তিয়েরি এবং ম্যাকক্লাস্কির চরিত্রে অভিনয় করা স্টার্লিং হেইডেন। তারা দুজন সত্যিই সেদিন আমার সঙ্গে খুব দারুণ ব্যবহার করেছিলেন।

তারা জানতেন আমি একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, মনে হচ্ছিল আমার কাঁধে যেন পৃথিবী সমান বোঝা। তারা এও জানতেন, যে কোনোদিন আমার ওপর খড়গ নেমে আসতে পারে।

স্টার্লিং ও আল লেত্তিয়েরি আমার মনোবল ধরে রাখতে সাহায্য করেছিলেন। দৃশ্যটি এমন ছিল- তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে আমি হঠাৎ বাথরুমে যাওয়ার কথা বলব, এরপর সেখান থেকে একটি লুকানো পিস্তল খুঁজে বের করব এবং সেটি দিয়ে তাদের খুন করব। এরপর আমি রেস্টুরেন্ট থেকে দৌড়ে বের হয়ে চলন্ত গাড়িতে উঠে পালাব। 

আমার কোনো স্ট্যান্ড-ইন ছিল না এবং কোনো স্টান্টম্যানও ছিল না। তাই আমারই সব করার কথা ছিল। আমি গাড়িতে ওঠার উদ্দেশ্যে লাফ দিলাম, তবে গাড়ি মিস করলাম। আমি গিয়ে সোজা ব্রঙ্কসের হোয়াইট প্লেইনস রোডের একটি নর্দমায় চিৎ হয়ে পড়লাম। আমার গোড়ালি এত বাজেভাবে মুচড়ে গিয়েছিল যে আমি নড়াচড়া করতেও পারছিলাম না।

ক্রুর সবাই আমাকে ঘিরে ধরল। তারা আমাকে উপরে উঠানোর চেষ্টা করছিল, আর বারবার জিজ্ঞাসা করছিল: আমার গোড়ালি ভেঙে গেছে কি না? আমি হাঁটতে পারব কি না? 

এদিকে আমি শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম, এ এক অলৌকিক ঘটনা। হে ঈশ্বর, তুমি আমাকে বাঁচালে। আমাকে আর এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে হবে না। আমার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্বস্তির অনুভূতি দেখে আমি নিজেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। প্রতিদিন নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়া, অবাঞ্ছিত বোধ করা, অধস্তনের মতো অনুভব করা; সব মিলিয়ে এক পীড়াদায়ক অভিজ্ঞতা। আর এই আঘাত এই কারাগার থেকে আমার মুক্তির উপায় হতে পারে। অন্তত এখন তারা আমাকে ছাঁটাই করবে, মাইকেল হিসেবে অন্য অভিনেতাকে পুনরায় কাস্ট করবে এবং চলচ্চিত্রে তাদের ঢালা টাকা লস হবে না।

কিন্তু এমন কিছুই হয়নি।

তারা কোথা থেকে যেন এক স্টান্টম্যান যোগাড় করে লাফিয়ে গাড়িতে ওঠার দৃশ্যটি শুট করেছিল এবং আমি ভালোভাবে দাঁড়াতে না পারা পর্যন্ত তারা আমার গোড়ালিতে কর্টিসোন ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা করেছিল।

তারপর ফ্রান্সিস স্টুডিওর সবাইকে রেস্তোরাঁয় ধারণ করা অংশ দেখালো, ওই অংশটা দেখার পর মনে হলো কিছু একটা ঘটে গেল। ওই দৃশ্যে আমিই অভিনয় করেছিলাম, তবে এতে নিশ্চয়ই এমন কিছু ছিল; যার কারণে এরপর তারা বিনাবাক্য ব্যয়ে আমাকে চলচ্চিত্রে রেখে দিলো। তাই অবশেষে 'দ্য গডফাদার' থেকে আমাকে ছাঁটাই করা হলো না এবং আমি অভিনয় চালিয়ে যেতে থাকলাম।

আমার একটা পরিকল্পনা ছিল, একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল; আমি সত্যিই বিশ্বাস করতাম এটাই এই চরিত্রটি এগিয়ে নেওয়ার সঠিক উপায়। আর আমি নিশ্চিত ছিলাম, ফ্রান্সিসও একই কথা অনুভব করেছিলেন।

আমার মনে হয়, 'দ্য গডফাদার'-এর কাছ থেকে দর্শকরা যা পেয়েছেন, যা এটাকে প্রশংসিত করেছে এবং সত্যিকার অর্থে যা প্রভাব ফেলেছে, তা হলো পরিবারের গুরুত্বের বিষয়টি। মানুষ কর্লিয়নি পরিবারকে নিজেদের সঙ্গে মেলাতে পেরেছিল, কারণ তারা কোনো না কোনোভাবে তাদের মধ্যে নিজেদের ছায়া দেখতে পেয়েছিল এবং ভাই-বোন, বাবা-মা ও সন্তানদের চরিত্রগুলোর মধ্যে থাকা সম্পর্কের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করেছিল।

ছবিতে মারিও পুজোর টানটান নাটকীয়তা এবং গল্প বলার ধরন, ফ্রান্সিসের তা পর্দায় ফুটিয়ে তোলার যাদু এবং বাস্তবিক সহিংসতা ছিল। কিন্তু ওই পরিবারটির কল্যাণে এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু হয়ে উঠল। ওই শহরে যারা কর্লিয়নিদের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল শুধু তাদেরই নয় – বিশ্বের সকল প্রান্তের মানুষই এতে একাত্ম বোধ করেছে।

১৯৭২ সালে ছবিটি মুক্তির ফলে আমার জীবনে আকস্মিক প্রভাব পড়েছিল। যেন আলোর গতিতে সব ঘটে গেল। সবকিছু বদলে গেল।

 

 

 


ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি

Related Topics

টপ নিউজ

আল পাচিনো / দ্য গডফাদার / হলিউড / অস্কার / ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা / প্যারামাউন্ট

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ট্রাম্প প্রশাসনে থাকাকালীন মাদকে বুঁদ ছিলেন ইলন মাস্ক, প্রতিদিন লাগত ২০ বড়ি কিটামিন
  • ২০৪০ সালের আগেই হারিয়ে যেতে পারে আপনার ফোনের সব ছবি
  • উদ্বোধনের আগেই সাগরে বিলীন ৫ কোটি টাকায় নির্মিত কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ
  • ট্রাম্প প্রশাসনকে ৫ লাখ অভিবাসীর বৈধ মর্যাদা বাতিলের অনুমতি দিল মার্কিন আদালত
  • ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা ট্রাম্পের
  • আয়া সোফিয়া: সাম্রাজ্যের পতনের পরও যেভাবে টিকে আছে ১৬০০ বছরের পুরোনো স্থাপনা, কী এর রহস্য

Related News

  • আগাথার একই উপন্যাস থেকে শোয়ার্জনেগার ও স্ট্যালনের অ্যাকশন সিনেমা—দুটোই ফ্লপ
  • বিদেশি সিনেমার ওপর ১০০% শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প
  • অস্কার জেতার পর ‘সব সুযোগ ব্যবহার করিনি’: এ আর রহমান
  • ‘আমি ছেড়ে দিচ্ছি’: অভিনয় থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন কেট ব্লানচেট
  • পরবর্তী জেমস বন্ড ব্রিটিশ হওয়া উচিত: সাবেক তারকা পিয়ার্স ব্রসনান 

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনে থাকাকালীন মাদকে বুঁদ ছিলেন ইলন মাস্ক, প্রতিদিন লাগত ২০ বড়ি কিটামিন

2
আন্তর্জাতিক

২০৪০ সালের আগেই হারিয়ে যেতে পারে আপনার ফোনের সব ছবি

3
বাংলাদেশ

উদ্বোধনের আগেই সাগরে বিলীন ৫ কোটি টাকায় নির্মিত কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ

4
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনকে ৫ লাখ অভিবাসীর বৈধ মর্যাদা বাতিলের অনুমতি দিল মার্কিন আদালত

5
আন্তর্জাতিক

ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা ট্রাম্পের

6
আন্তর্জাতিক

আয়া সোফিয়া: সাম্রাজ্যের পতনের পরও যেভাবে টিকে আছে ১৬০০ বছরের পুরোনো স্থাপনা, কী এর রহস্য

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net