সিনেমা হলে করোনার থাবা: সরকারি সাহায্য চায় হলিউড

করোনাভাইরাসের ধকল সামলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেমা হলগুলো আবারও শুরু করেছে পথচলা। কিন্তু দর্শক খুব একটা হলমুখী হচ্ছেন না এখনো।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আগস্টে আমেরিকার এ সংক্রান্ত প্রধান চেইন কোম্পানিগুলো তাদের মালিকানাধীন সিনেমা হলগুলো খুলতে শুরু করে। এরপর দেশটির শ্রমিক দিবসে (৭ সেপ্টেম্বর) খুলে দেওয়া হয় বেশ কিছু হল। আর তখন সিনেমা হলে মুক্তি পায় ক্রিস্টোফার নোলানের 'টেনেট'।

এদিকে, গত বুধবার ক্যালিফোর্নিয়া ও মিশিগানে সিনেমা হল খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি এএমসি থিয়েটারস। তার মানে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮০ ভাগ সিনেমা হলই অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে খুলে যাবে।
তবে, হল খুললেই করোনা বাস্তবতায় দর্শক সিনেমা দেখতে যেতে নিরাপদ বোধ করবেন, তা নয়। কেননা, খোলার পরপর খুবই নেতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। বক্স অফিসে এখন নেতৃত্ব দেওয়া 'টেনেট' আয় করেছে মাত্র ৩.৪ মিলিয়ন ডলার। আর তাই হলিউড স্টুডিওগুলো তাদের প্রধান সিনেমাগুলোর মুক্তির তারিখ দিয়েছে পিছিয়ে। যেমন, ডিজনি'র 'ব্ল্যাক ইউডো' আগামী বছর মুক্তি পাবে।
এর ফলে, চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি ও প্রদর্শনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অভিনেতা, পরিচালক, প্রডিউসার ও সংগঠনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দলের একটি জোট এক চিঠিতে কংগ্রেস নেতাদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। ওই চিঠিতে বলে হয়েছে, সাহায্য না পেলে এই ইন্ডাস্ট্রি ডুবে যাবে।
'সিনেমা হল একটি অপরিহার্য ইন্ডাস্ট্রি, যেটি আমেরিকান প্রতিভা ও সৃজনশীলতার সেরা প্রতিনিধি। কিন্তু আমরা এখন সেটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন,' বলা হয় ওই চিঠিতে।
আরও বলা হয়, 'সিনেমা হলগুলো যে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মান জাহির করে, সেটি হারানো আমাদের দেশের জন্য উচিত হবে না। হলে সিনেমা দেখতে যাওয়ার রেওয়াজ আমেরিকান নাগরিকদের জীবনযাপনের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে। সিনেমা হল সেই ঐক্যের জায়গা, সেখানে আমাদের জাতির সবচেয়ে প্রতিভাবান স্টোরিটেলারদের প্রতিভার প্রদর্শনী ঘটে।'

ওই চিঠিতে সতর্ক করে দেওয়া হয়, সরকারি সাহায্য না পেলে দেশটির প্রায় ৬৯ শতাংশ ছোট ও মাঝারি আকারের সিনেমা হল চলতে পারবে না।
হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি, হাউস মাইনরিটি লিডার কেভিন ম্যাককার্থি, সিনেট মেজরিটি লিডার মিচ ম্যাককর্নেল এবং সিনেট মাইনরটি লিডার চার্লস শুমারের উদ্দেশ্যে লেখা হয় ওই চিঠি।
সিএনএনের তথ্যমতে, কংগ্রেস এখন নতুন একটি করোনাভাইরাসে সহায়তাকারী প্যাকেজ প্রবর্তনের জন্য ট্রেজারি সেক্রেটারি স্টিভেন এমনুচিনের সঙ্গে আলাপ করছে। ওই রকম প্যাকেজ থেকে চলচ্চিত্র প্রদর্শন ইন্ডাস্ট্রি সাহায্য পেতে পারে বলে ধারণা অনেকের।

ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ওয়েস অ্যান্ডারসন, জুড অ্যাপাটো, নোয়া বামবাখ, মাইকেল বে, জেমস ক্যামেরন, সোফিয়া কপোলা, আলফনসো কুরন, ক্লিন্ট ইস্টউড, ক্যাথরিন হার্ডুইক, ব্যারি জেনকিন্স, রায়ান জনসন, রিচার্ড লিংকলেটার, অ্যাডাম ম্যাককি, জর্ডান পিলে, মার্টিন স্করসেজি, এম. নাইট স্যামালনসহ অনেকেই।
অন্যদিকে, অভিনেতা সেঠ রোজেন, জেমস বন্ড সিরিজের প্রযোজক বারবারা ব্রোক্কলি এবং ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব থিয়েটার ওনারস, দ্য ডিরেক্টরস গিল্ড অব আমেরিকা ও দ্য মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশনের মতো সংগঠনেরও স্বাক্ষর রয়েছে চিঠিটিতে।
- সূত্র: দ্য ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট