ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক সংকট নিরসনে ২,৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন; হবে ৩১টি ভবন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক সংকট নিরসনে ২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
এই প্রকল্পের আওতায় ছয়টি একাডেমিক ভবন, ২ হাজার ৬০০ ছাত্রীর জন্য চারটি আবাসিক হল ও ৫ হাজার ১০০ ছাত্রের জন্য পাঁচটি হল নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য দুটি আবাসিক ভবন এবং আরও পাঁচটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পে মোট ৩১টি নতুন ভবন নির্মাণের কথা রয়েছে।
শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ১৯৬০-এর দশকে শিক্ষার্থীরা যে পরিমাণ সুবিধা পেতেন, তার তুলনায় এখন তেমন কিছুই পাচ্ছেন না। এই বাস্তবতায় প্রকল্পটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এটি বাস্তবায়ন হলে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রয়োজন হবে না ।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ভবনগুলো ঠিক রেখেই নতুন ভবনগুলো নির্মাণ করা হবে। তবে ছোট আকারের ভবনগুলো ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে, যাতে নতুন করে জায়গার প্রয়োজন না হয়।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। কিন্তু সে অনুপাতে সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি। ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী ও ৬০০ একর জমি নিয়ে যাত্রা শুরু করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। কিন্তু জমির পরিমাণ অর্ধেক কমে দাঁড়িয়েছে ৩০৪ একর। প্রতি বছর অনুপাতিক হারে ছাত্রীর সংখ্যা বাড়লেও সে তুলনায় তাদের আবাসন সুবিধা বাড়েনি।
প্রকল্প প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে একাডেমিক ও আবাসন সমস্যার সমাধান, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা, পুরাতন জরাজীর্ণ ভবন প্রতিস্থাপন ও বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রাতিষ্ঠানিক ও একাডেমিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করতে হবে।
বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদের আওতায় ৮৪টি বিভাগে ও ১৩টি ইনস্টিটিউটে প্রায় ৪৩ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন। এছাড়া এখানে ৬০টি গবেষণা ব্যুরো ও সেন্টার, ২০টি হল এবং চারটি হোস্টেল রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ২ হাজার শিক্ষক, ২ হাজার কর্মকর্তা ও ৩ হাজার ৫০০ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।