অপারেশন ডেভিল হান্ট: গাজীপুরে আওয়ামী লীগের ৮১ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রমে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত আওয়ামী লীগের ৪১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)। আর চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে আওয়ামী লীগের আরও ৪০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর জেলা পুলিশ। মহানগর পুলিশ ও জেলা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তারকৃত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মোট সংখ্যা ৮১ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, অন্যান্য মামলায় আরও ৪ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) তাহেরুল হক জানিয়েছেন, "গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম দাক্ষিণ এলাকায় বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুইদিনে মোট ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মহানগর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।"
তিনি আরও জানান, "গেল শুক্রবার রাতে ধীরাশ্রম এলাকায় বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মারধর করার ঘটনার পর ওই রাতেই ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে আরও ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই দিনে মোট ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এরা সবাই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।"
তিনি আরও জানান, "এ ঘটনায় বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ মুহিত বাদী হয়ে জিএমপি সদর মেট্রো থানায় একটি মামলার এজাহার জমা দিয়েছেন। এজাহারের আলোকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।"
এদিকে, দেশজুড়ে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে গাজীপুর জেলার পাঁচটি থানায় মোট ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মী আছেন ৪০ জন। শনিবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে গাজীপুর জেলা পুলিশ তাদের আটক করে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, "শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া অপারেশন ডেভিল হান্টে এখন পর্যন্ত (সকাল ৯টা) ৪৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজন রয়েছেন ৪০ জন।"
তিনি আরও জানান, আটককৃতদের মধ্যে কাপাসিয়া থানায় রাজনৈতিক নেতাকর্মী রয়েছেন ১১ জন, শ্রীপুর থানায় ১৯ জন, জয়দেবপুর থানায় ৯ জন, কালিয়াকৈর থানায় ৩ জন ও কালীগঞ্জ থানায় ৭ জন।
তাদের মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ বিভিন্ন দলীয় পদধারী নেতাও আছেন বলেন জানান তিনি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাতভর অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করেছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক মোজাম্মেল হকের বাড়িতে লুটপাটের খবর পেয়ে ছাত্ররা তা বন্ধ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন। শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার কারণে 'অপারেশন ডেভিল হান্ট' অভিযানের ঘোষণা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।