সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করাই ইসির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: সিইসি

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগে যেন কোনো বাধা না আসে তা নিশ্চিত করতে চায় নির্বাচন কমিশন।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে ডিসি-এসপিদের দুই দিন ব্যাপী ট্রেনিংয়ের দ্বিতীয় দফার উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন কাজী হাবিবুল আওয়াল।
তিনি আরও বলেন, "নির্বাচন কমিশনের যে দায়িত্ব তার মধ্যে একটি জিনিস হচ্ছে, যতদূর সম্ভব নির্বাচন পক্রিয়াটাকে দৃশ্যমান করে স্বচ্ছতা সৃষ্টি করা, স্বচ্ছতা সৃষ্টি করা গেলে সম্ভাব্য অপপ্রচারগুলো ঢাকা পড়ে যাবে।"
তিনি বলেন, "স্বচ্ছতা হচ্ছে এমন একটি জিনিস যেটি সত্যেরও হয় আবার মিথ্যা ও অনাচারের হয়। অর্থাৎ অনাচার হলে স্বচ্ছভাবে প্রকাশ পাবে আবার সদাচার হলেও স্বচ্ছভাবেই তা প্রকাশ পাবে।"
"ইতোমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সারা দেশ মাতোয়ারা হয়ে রয়েছে। এটা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিদিন বক্তব্য হচ্ছে। এমনকি এটা একটা গ্রোবাল ডাইমেনশন পেয়ে গেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আমাদের নির্বাচনটা দেখতে আগ্রহী। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে পর্যবেক্ষকরাও আসবেন," যোগ করেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ডিসি-এসপিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, "নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি ক্ষমতা প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে, তবে ক্ষমতার শক্তিটা দেখাবেন।"
ডিসি-এসপিদের দায়িত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, "আমাদের মূল বার্তাটা হলো, আমরা কমিশন থেকে দেখতে চাই আপনারা এমনভাবে দায়িত্ব পালন করছেন যাতে আপনাদের প্রজ্ঞা, শক্তি, মেধা ও জ্ঞান দিয়ে নির্বাচনটাকে সত্যিকার অর্থে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করা যায়। আমাদের বার্তাটা হচ্ছে, নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল করবেন।"
"গতকালকেও আমরা রাষ্ট্রপতিকে বলেছি। উনিও চেয়েছেন নির্বাচনটা যাতে সুশৃঙ্খল হয়। সুশৃঙ্খল আমি করাতে পারবো না। এটা আপনাদেরকেই করাতে হবে।"
সিইসি জোর দিয়ে বলেন, "নির্বাচনটা অনুধাবন করতে হবে। এটাকে দায়িত্ববোধ নিয়ে অনুধাবন করতে হবে ক্ষমতা বা শক্তি দিয়ে নয়। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি আপনার ক্ষমতা প্রয়োগের প্রয়োজন হয় তখন ক্ষমতার শক্তিটা দেখাবেন। কিন্তু প্রথমে আপনেরা দায়িত্ব দিয়ে অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন নির্বাচনটা কী, নির্বাচন কেনো হয়, নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা কী, জনগণ ভোট দিবে কেনো।"
"যদি গণতন্ত্র ও প্রজাতন্ত্র বুঝে থাকেন তাহলে এগুলোও বুঝবেন। গণতন্ত্রকে তার চেতনাগত অর্থে বাস্তবায়ন যদি আমরা না করতে পারি তাহলে জাতির সাথে আমাদের জন্য একটা ব্যর্থটা হবে। তাই আমি আশা করবো আপনারা আপনাদের দায়িত্ববুদ্ধি দিয়ে গণতন্ত্র ও নির্বাচনের যুদ্ধ সফল করবেন।"
"নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ। সেজন্য এর গুরুত্ব অনুধাবন করে আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন।"
তিনি বলেন, "আমাদের মূল চাওয়াটা হচ্ছে, যারা ভোটার রয়েছে তারা যেনো ভোট দিতে পারে। এ জিনিসটা আমরা দেখতে চাচ্ছি। ভোটের দিন যদি কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে তবে নিরপেক্ষতাও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। আমাদের ব্যর্থতা ও অদক্ষতা প্রতিহত করতে হবে।"
এর আগে গতকাল (৯ নভেম্বর) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সিইসি বলেন, "নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন করতে আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা খুব দ্রুত তফসিল ঘোষণা করবো।"