অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী গ্রেফতার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে বক্তব্য দেওয়া মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফীর (মিয়ান আরেফী) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে লে. জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তার বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য প্রদানে সহায়তার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, তিনি নিজেই হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে নিজেকে বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে দাবি করে বক্তব্য দেন মিয়ান আরেফি।
পরে আরেফীর বিরুদ্ধে রোববার (২৯ অক্টোবর) রাতে মহিউদ্দিন শিকদার নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
মামলায় জাহিদুল ইসলাম আরেফীর সঙ্গে হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়। পুলিশের সূত্র জানায়, আসামিরা আরেফীকে বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তারা মিথ্যা পরিচয়ে আরেফীকে উপস্থাপন করেছেন।
ডিবি প্রধান জানান, আজ সন্ধ্যায় লে. জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) সারওয়ার্দীকে তার বাসা থেকে গ্রেফতার করার পরে মিন্টো রোডে ডিবির কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আরেফীকে আটক করা হয়।
এরপর সোমবার মিয়ান জাহিদুল ইসলাম আরেফীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার একটি আদালত।
ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার এ আদেশ দেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে জেলে রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শনিবার পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারা দেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। ওইদিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা এবং সরকারি গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। একপর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে মিয়ান আরেফী নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি।
এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, হাসান সারওয়ার্দী এবং ইশরাক হোসেন তাকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। মিয়ান আরেফী তাদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করে সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।