ব্রয়লার মুরগির বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি: কাজী ফার্মস ও সাগুনা ফুডকে ৮.৪৪ কোটি টাকা জরিমানা

যোগসাজসের মাধ্যমে ব্রয়লার মুরগির বাজারে অস্বাভাবিক মূল্য বাড়ানোর প্রমাণ পাওয়ায় কাজী ফার্মস গ্রুপকে ৫ কোটি টাকা এবং সাগুনা ফুড অ্যান্ড ফিডস-কে ৩.৪৪ কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।
কমিশন সোমবার এই রায় ঘোষণা করে বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য মোঃ হাফিজুর রহমান টিবিএসকে বলেন, 'যোগসাজসের মাধ্যমে ব্রয়লার মুরগির বাজারে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় এ দুটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।'
২০২২ সালের আগস্টে ব্রয়লার মুরগির বাজারে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৬০-১৭০ টাকা থেকে বেড়ে ২৩০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। সে সময় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন নিজে উদ্যোগী হয়ে ৬টি কোম্পানির বিরুদ্ধে আলাদা আলাদা মামলা করে। এই মামলায় দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করলো প্রতিষ্ঠানটি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে রায় গঠনের কাজ চলছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে ছিল আলাল পোল্ট্রি ও ফিশ ফিড, নারিশ পোল্ট্রি ও হ্যাচারি, প্যারাগন পোল্ট্রি, সিপি বাংলাদেশ; ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের শেষদিকে এই মামলা করেছিল কমিশন।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, জরিমানার অর্থ ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রদান করতে হবে। এর মধ্যে টাকা দিতে না পারলে প্রতিদিনের জন্য ১ লাখ টাকা করে বাড়তি জরিমানা অরোপ হবে।
তবে কোম্পানিগুলোর আপিল করার সুযোগ রয়েছে। কোম্পানিগুলো চাইলে কমিশনে আপিল করতে পারে। সেক্ষেত্রে কমিশনে ১০% টাকা প্রদান করে তবেই আপিল করতে হবে। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েও আপিল করার সুযোগ রয়েছে। সেখানে অবশ্য জরিমানার ২৫% টাকা জমা দিয়ে আপিল করতে হবে।
সরাসরি কোর্টে আপিল করার সুযোগ নেই। তবে রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করার সুযোগ রয়েছে।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে বলে জানিয়েছে কাজী ফার্মস।
এ বিষয়ে কাজী ফার্মস বলে, "তারা একটি সৎ এবং আইন মেনে চলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কখনোই তারা কারসাজি বা প্রাইস ফিক্সিং এর সাথে জড়িত নয়।"
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, কাঁচামাল আমদানি জটিলতা সহ নানা অভিযোগ তুলে ডিম-মুরগির পাশাপাশি সব ধরনের দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়াতে থাকে, যা কমিশনের অনুসন্ধানে অস্বাভাবিক হিসেবে উঠে আসে। যে কারণে চাল, ময়দা, ডিম, ব্রয়লার মুরগি এবং টয়লেট্রিজ এর উৎপাদন ও বাজারজাতে জড়িত ৩৬ কোম্পানি ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মোট ৩৬টি মামলা করেছিল কমিশন যার মধ্যে ছিল ইউনিলিভার, প্রাণ, স্কয়ার, এসিআই, আকিজ, বসুন্ধরা, এস আলম গ্রুপ, মেঘনা, টিকে, নূরজাহান গ্রুপ, সিটি সহ বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রায়ের মধ্য দিয়ে সে সময়কার মামলাগুলোর রায় দেয়া শুরু হলো। অধিকাংশ মামলার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে।