ঈদের আগে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম

এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। এছাড়াও গরুর মাংসের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের সময় চাহিদা বেড়েছে, তাই বেড়েছে দামও।
আজ রোববার সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর কল্যাণপুর, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ক্রেতা- বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজিতে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজিতে, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের জনপ্রিয় পোল্ট্রি মুরগি আড়তের বিক্রেতা আমান উল্লাহ বলেন, বাজারে আজ মুরগি কম। সেই তুলনায় চাহিদা বেশি। সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ২২০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যা ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। সোনালী মুরগি ছিল ২৮০ টাকা কেজি। আজ বিক্রি করেছি ৩২০ টাকা কেজি।
নাসির খান নামে এক ক্রেতা ২২০ টাকা কেজিতে ৩টি ব্রয়লার মুরগি নিয়েছেন। তিনি বলেন, মুরগির বাজারে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছে। বাজারে মুরগির সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা।
তিনি আরও বলেন, রামপুরা থেকে কারওয়ান বাজার এসেছি দাম কম পাবো বলে। কিন্তু এখানেও ২২০ টাকা কেজি।
তিনি জানান, বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঘুরেও কারওয়ান বাজারে পছন্দের সোনালী মুরগি পাননি। তাই রামপুরায় ফিরে যাচ্ছেন।
কারওয়ান বাজারের প্রায় ২০টি মুরগির দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় অর্ধেক দোকানেই সব মুরগি বিক্রি শেষ। বাকি দোকানগুলোতে কেবল ব্রয়লার মুরগি রয়েছে।
এদিকে কল্যাণপুরে গরুর মাংস ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা আর কারওয়ান বাজারে ৭৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা। প্রতিটি দোকানেই ছিল ক্রেতাদের লাইন।
কারওয়ান বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা মোহম্মদ ইকলাস বলেন, কারওয়ান বাজারে সবাই ৭৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছে। চাহিদা বাড়ায় গরুর দাম বেড়েছে। তাই কেজিতে ৩০ টাকা বাড়িয়েছি।

এদিকে শেষ সময়ে সেমাই, চিনি ও পোলাও চালসহ ঈদ পণ্যের বিক্রি বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সেমাই-চিনির দাম বাড়েনি।
২০০ গ্রামের প্রতি প্যাকেট চিকন সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি খোলা চিকন সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। ২০০ গ্রামের প্রতি প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
কল্যাণপুরের এক মুদি দোকানি বলেন, আগে থেকে ও টানা ৯ দিন ঈদের ছুটি থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় রাজধানীতে এবার ঈদে মানুষের সংখ্যা কম। লম্বা ছুটির কারণে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে গেছেন অনেকেই। এজন্য আমাদের বিক্রিও কমে গেছে।
ইয়াসিন জেনারেল স্টোরের বিক্রয় সহকারী আলী হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, মাসের শেষ সময়ে ঈদ। যারা চাকরি করেন, তাদের আনেকের হাতে টাকা নেই, বেতন তো পায়নি মার্চ মাসের। বেনাস যা পেয়েছেন, তা দিয়ে পোশাক কিনেছেন। সব মিলে সেমাই, চিনি পোলার চাল বিক্রি কমেছে গত বছরের চেয়ে অন্তত ৩০ শতাংশ। আবার ছুটিতে বহু মানুষ গ্রামে গিয়েছেন। সেটার প্রভাব পড়েছে বিক্রিতে।
শসা-লেবুর বাজারও চড়া
এদিকে খাবারের সঙ্গে সালাদের চাহিদা থাকায় বেড়েছে শশা ও লেবুর দামও। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, েএক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এছাড়া হাইব্রিড শশা ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও দেশি জাতের শশা ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা জিহাদ জানান, শশা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে টমেটোর দাম কেজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।