সেপ্টেম্বরে ঢাকায় ১১টি সমাবেশ করবে বিএনপি
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চলতি মাসে ঢাকায় আরো ১১টি সমাবেশ করবে বিএনপি। এছাড়াও ঢাকায় বাইরে জেলা-বিভাগীয় পর্যায়ে ৫টি রোডমার্চ করবে দলটি- এমন তথ্য জানিয়েছে বিএনপি সূত্র।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার কেরানিগঞ্জ ও গাজীপুরে সমাবেশ করবে বিএনপি। ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় পেশাজীবীদের সমাবেশ, ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরে যাত্রাবাড়ি ও উত্তরায় সমাবেশ, ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরে নয়াবাজার ও ঢাকা জেলায় আমিনবাজারে সমাবেশ করবে। ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরে গাবতলী ও নারায়ণগঞ্জে সমাবেশ করবে বিএনপি। এছাড়াও ২৯ সেপ্টেম্বরে মহিলা দল ও ৩০ সেপ্টেম্বর কৃষক-শ্রমিক দল ঢাকায় সমাবেশ করবে।
বিএনপি সূত্র জানায়, এছাড়াও ঢাকার বাইরে ৫টি রোডমার্চ করবে দলটি। ২১ সেপ্টেম্বরে ভৈরব-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার-সিলেট রোডমার্চ। ২৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল-ঝালকাঠি-পিরোজপুর-পটুয়াখালী রোডমার্চ। ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগীয় রোডমার্চ। ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা-কিশোরগঞ্জ রোডমার্চ। ৩ অক্টোবর কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম রোডমার্চ করবে বিএনপি।
এসব সমাবেশ ও রোডমার্চে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নেতৃত্ব দেবেন বলে বিএনপি সূত্রে জানা যায়।
এছাড়াও পাশাপাশি সারাদেশে আইনজীবীদের আলাদা কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
বিএনপি সূত্র জানায়, তফসিল ঘোষণার আগেই আন্দোলন সফল করতে চায় বিএনপি। সেই লক্ষ্যে অক্টোবরে চূড়ান্ত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নির্বাচন কমিশন, সচিবালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি। সারাদেশে থেকে ঢাকায় লোক জড়ো করে ঢাকায় ১০ থেকে ১৫টি স্পট একই দিনে একই সময় শুরু হবে সেই আন্দোলন। এর মধ্যে ঢাকার ৪ প্রবেশমুখও অবরোধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যারা ঐ সময় ঢাকায় আসতে পারবে না সেসব স্থানীয় নেতাকর্মীরাদেরও সারাদেশের সব জেলাপ্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে একই দাবিতে রবিবারেও বগুড়া থেকে রাজশাহী পর্যন্ত তারুণ্যের রোডমার্চ করেছে বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদল।
এ রোডমার্চের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "বিদ্যুতের দাম তিন-চারবার করে বাড়ছে; তেলের দাম তিন-চারবার করে বাড়ছে। দাম নির্ধারণ করে দিলেই কি দাম কমানো যায়? দ্রব্যমূল্য কমাতে এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এই সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে।"
বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়বাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত রোডমার্চ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় মির্জা ফখরুল বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, "চুরি করে তারা বিদেশে বাড়িঘর নির্মাণ করেছে। সবচেয়ে বড় চুরি কী করেছে? আমার দেশের ভোটের অধিকার তারা চুরি করেছে।"
ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বগুড়া হতে রাজশাহী পর্যন্ত তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচিতে সকাল থেকে বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল নিয়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মীরা এরুলিয়া এলাকায় জমায়েত হতে থাকে।
নাটোরে মহাসড়কে গাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ
এদিকে নাটোর থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি 'তারুণ্যের রোডমার্চ'- এ অংশগ্রহণ করতে যাওয়া একটি মাইক্রোবাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয় বলে জানা যায়।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ডালসড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হন বাগাতিপাড়া উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সোহেল রানা, যুগ্ম আহবায়ক আবু তালহা মানিক, ছাত্রদল কর্মী সম্রাট, মেহেদী হাসান, স্বপন, শিমুলসহ আরও বেশ কয়েকজন।
সকালে শহরে আরেক হামলায় গুরুতর আহত হন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রচার সম্পাদক জুয়েল রানা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিভাগীয় তারুণ্যের রোডমার্চকে ঘিরে সকাল থেকেই নাটোরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয় সরকার দলীয় সমর্থকরা। তারা নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে দিঘাপতীয়া এলাকায় যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে তল্লাশী চালায় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
