রাজশাহীতে পরিবহন ধর্মঘট: বাস কাউন্টারে চলছে ধোয়ামোছার কাজ, বন্ধ হোটেল-রেস্তোরাঁ

চলছে ১০ দফা দাবিতে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় পরিবহন ধর্মঘট। বাস বন্ধ থাকায় কাউন্টারগুলোতে অলস সময় পার করছেন কর্মচারীরা। অনেক কাউন্টারে ধোয়ামোছার কাজ চলছে। অনেক কাউন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা ১১টায় নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকাসহ দূরপাল্লার বাস চলাচল করে।
গ্রামীণ ট্রাভেলসে গিয়ে দেখা যায়, কর্মচারী শাকিল ও কবির অফিসকক্ষের চেয়ার-টেবিল ও ফ্যান পরিষ্কার করছেন।
তিনি বলেন, পরিবহন ধর্মঘট থাকায় যাত্রীদের চাপ নেই। তাই অফিসকক্ষের চেয়ার, টেবিল, ফ্যান বের করে ধোয়ামোছা করা হচ্ছে।

হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চেয়ার রঙ করা চলছে। অফিসকক্ষে পুরো ধোয়ামোছার কাজ চলছে। রঙ মিস্ত্রি বেলাল হোসেন জানান, পরিবহন ধর্মঘটের এই সময়ে সুযোগ থাকায় ম্যানেজার রঙ করাচ্ছেন চেয়ারে।
কাউন্টারের ভিতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন রিপন আলী। তিনি বলেন, 'সময় থাকায় কাজে লাগাচ্ছেন মালিকপক্ষ।'
তবে পরিবহন ধর্মঘট থাকায় যাত্রীদের যেমন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। একইভাবে বাস টার্মিনাল এলাকার বহু হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখা হয়েছে। যেগুলো খোলা রাখা হয়েছে সেখানেও বেচাবিক্রি হচ্ছে খুবই কম।
শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকার খাবার ঘর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের কর্মচারী নূরে আলম বলেন, 'ব্যবসা চারভাগের এক ভাগও নাই।' একই হোটেলের কর্মচারী মুনতাজুল বলেন, 'পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আগে ৫০০ টাকা যেখানে খরচ দিতো এখন সেখানে ২০০ টাকা দিচ্ছে। ব্যবসা নাই তারপরও যে দিচ্ছে তাতেই খুশি।'
সৌদিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ইমন বলেন, ১০ জন কর্মচারী থাকলেও পরিবহন ধর্মঘটের কারণে তাদের তিনজন কর্মচারীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

জাহিদ হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের কর্মচারী মাসুদ রানা জানান, 'হোটেল মালিকের খরচাপাতি বন্ধ নাই কিন্তু ব্যবসা বন্ধ আছে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে চারভাগের এক ভাগও কাস্টমার নাই। বাস চলছে না তাই বাইরের কোনো যাত্রীও শহরে প্রবেশ করছে না।'
তিনি বলেন, 'আমি পুঠিয়ার বানেশ্বরে থাকি। অন্য সময় যেখানে রাজশাহী থেকে বানেশ্বরে যেতে ইজিবাইকে ভাড়া লাগতো ২০ টাকা। এখন সেখানে ভাড়া লাগছে ৭০ টাকা। দিনে ৭০ টাকা লাগলেও রাতে ভাড়া লাগছে ১০০ টাকা। আমাকে মালিক দৈনিক দেয় ৬৫০ টাকা। বানেশ্বরে যাওয়া আসা করতেই ২০০ টাকা খরচ হয়ে যায়। কাস্টমার না থাকলেও বেতন যে দিচ্ছে মালিক তাতেই খুশি।'
মো. জীবন নামের এক চা দোকানদার বলেন, 'বাস টার্মিনালের বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ। যে কয়টা খোলা আছে তাতেও কাস্টমার নাই। আগে যেখানে ২০০ কাপ চা বিক্রি হতো এখন সেখানে ৫০ কাপ চা-ও বিক্রি হয় না।'