৯৩% নারী উদ্যোক্তা কোভিড-১৯ প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য আবেদন করেননি: সিপিডি

দেশের শতকরা ৯৩% নারী উদ্যোক্তা সরকার ঘোষিত কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) জন্য প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় কোনও রকম ঋণের জন্য আবেদন করেন নি। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আনতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ই প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়। কোভিড-১৯ মহামারীকালীন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে যেসব আর্থিক প্যাকেজ বা বিশেষ সুবিধা প্রনয়ন করা হয়েছে, তার কতটুকু জেন্ডার-সংবেদনশীল ছিল এবং নারীদের এ মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে তা কীভাবে সহায়তা করেছে, সেটি খুঁজে বের করাই এ সমীক্ষাটির লক্ষ্য ছিল।
সমীক্ষাটি থেকে জানা যায়, দেশের নারী উদ্যোক্তাদের শতকরা ৫৮.৬ ভাগেরই সরকার কর্তৃক ঘোষিত কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই।
এর কারণ হিসেবে তথ্যের অভাব, প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অহযোগিতাকে উল্লেখ করা হয়েছে সমীক্ষায়।
করোনায় অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় সিএমএসএমই খাতে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করেছে।
কোভিড-১৯ মহামারী স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমাজের বিভিন্ন অংশে পৃথক প্রভাব ফেলেছে; এই সমীক্ষায় তাই প্রধানত করোনার ফলে নারীদের আয়ের ওপর প্রভাব, গৃহস্থালী কাজের বর্ধিত চাপ, লেখাপড়ার ক্ষতি এবং বাল্যবিবাহ বৃদ্ধির মত বিষয়গুলোর প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে।
সারাদেশের ৩৪টি জেলা থেকে বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত এবং ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতার ৭০ জন নারী উদ্যোক্তার উপর সমীক্ষাটি পরিচালনা করে সিপিডি।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ৪১.৪ শতাংশকে করোনাকালে ব্যবসা বন্ধ করতে হয় এবং ৭.১ শতাংশ উদ্যোক্তা ব্যবসা সংকুচিত করেন। ৪৪.৪ শতাংশ ভাড়া দিতে ব্যর্থ হন, অন্যদিকে ৫০ শতাংশ উদ্যোক্তা জানান, তারা সরকারের কর এবং অন্যান্য বিল পরিশোধ করতে পারেন নি।
সার্বিকভাবে বলা যায়, সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে নারীদের জন্য করোনায় ব্যবসা পরিস্থিতির বেশি অবনতি ঘটেছে।
আর্থিক সহায়তা, বাল্য বিবাহ রোধ, নারীর ক্ষমতায়ন এবং প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছে সিপিডি; পাশাপাশি কোভিড-১৯ সহায়তা বিতরণে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।