রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনায় প্রতিবেদন দাখিল

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় গঠিত কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার মো. সোহরাব আলীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
তবে দুই দফা সময় নিয়েও তদন্ত কমিটির কাছে আত্মপক্ষ বক্তব্য উপস্থাপন করতে আসেননি অভিযুক্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। সর্বশেষ সময় অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় তদন্ত কমিটির সামনে তার উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। বিকেল ৩টা পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষিকা না আসায় তার সঙ্গে কথা না বলেই প্রতিবেদন দেন কমিটির প্রধান।
তদন্তে চুল কাটার ঘটনার সত্যতা মিলেছে জানালেও বিস্তারিত জানাতে রাজী হননি কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছিলেন, "প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। সিন্ডিকেট সভায় সবার সামনে সেটি খোলার পর শিক্ষিকার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে"।
তবে সিন্ডিকেট সভা হয়েছে কিনা শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন নিজেই কাঁচি হাতে ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই শিক্ষার্থীদের একজন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে তাকে তিনি বকাঝকা করেন। এরপর সেই শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করলে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনটি প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন। যদিও ওই সময় তিনি শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। ওই ঘটনায় ফারহানা ইয়াসমিনকে অপসারণের দাবিতে অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলমান অবস্থায় চুল কাটার একটি সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি একটি বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত, অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনশন তুলে নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে সামনে অবস্থান করতে থাকে। এ অবস্থায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।