আম্পানে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু

বুধবার সন্ধ্যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়ার পর, বাংলাদেশের সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানা বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আম্পান অন্তত ১২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
এর মধ্যে পিরোজপুর ও যশোরে তিনজন করে, পটুয়াখালীতে দুজন এবং ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, ভোলা ও বরগুনায় একজন করে মারা গেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন ও সংবাদকর্মী সূত্রে জানা গেছে।
তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা মন্ত্রণালয়ের জরুরি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা চার।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর থেকে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি এলাকায় ঝড় থেকে বাঁচতে বাবা-মায়ের সঙ্গে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে রাশেদ নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু গাছ চাপায় মারা গেছে। নিহত রাশেদ ওই এলাকার শাহাজাদা মিয়ার ছেলে।
অন্যদিকে, একই জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) টিম লিডার সৈয়দ শাহ আলম (৫০) কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী নদীর ওপারে দায়িত্ব পালন করতে যাওয়ার পথে ঝড়ের কবলে নৌকা ডুবে নিখোঁজ ছিলেন। পরে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে, সকালে ভোলার চরফ্যাশনের কচ্চপিয়া এলাকায় সিদ্দিক ফকির নামে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ গাছচাপা পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তিনি মারা যান।
সাতক্ষীরা শহরের সংগীতা মোড় এলাকায় রাত ৮টার দিকে ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়।
ঝড়ে দেয়াল চাপা পড়ে মারা গেছেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা শাহজাহান মোল্লা (৫৫)। এছাড়া একই উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের ধুপতি গ্রামে মুজাহার বেপারীর স্ত্রী গোলেনুর বেগম (৭০) এবং ইন্দুরকানী উপজেলার উমিদপুর এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে শাহ আলম (৫০) মারা যান। এদের মধ্যে ঝড়ের ধাক্কায় পিছলে পড়ে মারা যান গোলেনুর বেগম। অন্যদিকে, বাড়িতে পানি ঢুকতে দেখে 'আতঙ্কে' শাহ আলমের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে রাত ১০টার পর ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়লে খ্যান্ত বেগম (৪৫) ও তার মেয়ে রাবেয়া (১৩) ঘটনাস্থলেই মারা যান। এছাড়া, রাত ১১টার দিকে শার্শা উপজেলার বাগআচড়া ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে ঝড়ে গাছ ভেঙে ঘরে পড়লে মুক্তার আলি নামে ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
রাত ১০টার পর ঝড়ের দাপট বাড়লে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় হলিধানী গ্রামে একটি গাছ ভেঙে ঘরের ওপর পড়ে মারা যান নাদিরা বেগম (৫৫)।
বরগুনার সদর উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে মারা গেছেন এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম (৬৪)। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার জানান, শহীদুল আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন।