কারাগারে নেওয়ার পথে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউরকে গোপন বৈঠকের সুযোগ, ১১ পুলিশ বরখাস্ত

'ছাগল-কাণ্ডে' আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে আদালত থেকে ফেরানোর পথে রেস্তোরাঁয় গোপন বৈঠকের সুযোগ করে দেওয়ায় কিশোরগঞ্জ জেলার ১১ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি জানানো হয়।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যদের মধ্যে একজন এসআই, আর বাকিরা কনস্টেবল। এসআইয়ের নাম আবুল কাশেম। বাকি ১০ জন কনস্টেবল হলেন মনিরুজ্জামান, মো. কবির হোসেন, ইমরান, নির্জন খান, শামীম আলম, মো. রনি হোসেন, শরীফুল ইসলাম, তানভীর রহমান, মো. আবু সাইদ মিয়া ও রবীন্দ্র দাস। তাদের সবাইকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশের অফিস আদেশে বলা হয়, ১২ আগস্ট ওই পুলিশ সদস্যরা কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে মতিউর রহমানকে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজিরা দিতে নিয়ে যান। আদালতে হাজিরা শেষে ফিরতি পথে নরসিংদীর একটি রেস্টুরেন্টে খাবারের জন্য যাত্রাবিরতি দেওয়া হয়। স্কর্ট ইনচার্জের ব্যবস্থাপনায় হাজতিকে আলাদা কক্ষে বসিয়ে খাবার খাওয়ানো হয় এবং অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা বাইরে সাধারণ স্থানে খাবার গ্রহণ করেন।
আদেশে উল্লেখ করা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, এই পুলিশ সদস্যরা হাজতি মতিউর রহমানকে বিভিন্ন বিশেষ সুবিধা প্রদানের শর্তে উৎকোচ গ্রহণ করেন এবং তাকে এক ব্যক্তির সঙ্গে গোপন বৈঠকের সুযোগ করে দেন।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ সদস্যরা হাজতি মতিউর রহমানকে আলাদা কক্ষে বসিয়ে আর নিজেরা সাধারণ স্থানে খাবার গ্রহণ করেন। তারা উপস্থিত থেকেও হাজতিকে আলাদা কক্ষে খাওয়ানোর অনিয়ম প্রতিরোধে উদ্যোগ নেননি। এট স্পষ্টত দায়িত্বে অবহেলা।
অফিস আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের এ ধরনের আচরণ শৃঙ্খলাভঙ্গ, অসদাচরণ এবং অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল, যা পুলিশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে। তাই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।